Breaking Bharat: সি-২৯৫ বিমান কি সামরিক ক্ষেত্রে ভারতকে বেশি শক্তিশালী করে দিল? কী এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই যুদ্ধবিমানের (India gets first C-295 transport plane)?
ভারত সবসময় আত্মনির্ভরতার পথে এগিয়ে চলতে চেয়েছে। পরাধীন ভারতবর্ষ সেই একই কারণে স্বাধীন হয়েছিল। ১৪০ কোটির দেশে আজ বিভিন্ন প্রান্তে সভ্যতা সমাজ অন্যের উপর নির্ভরশীল হওয়া থেকে নিজেকে সরিয়ে এনেছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন ভারতের লক্ষ্য আত্মনির্ভর হওয়ার। সেক্ষেত্রে নিজেদের দেশেই খাবার থেকে শুরু করে পরনের জামা কাপড় , ঘুরতে যাওয়ার জায়গা থেকে শুরু করে লড়াই করার অস্ত্র সবটাই আমরা নিজেরাই যোগাড় করতে পারব।
সামরিক ক্ষেত্রে নতুন সংযোজন সি-২৯৫ বিমান:
আর দেশকে বাঁচাতে গেলে দেশকে সুরক্ষিত রাখতে গেলে তার সামরিক শক্তিকে ক্রমশ শক্তিশালী করে তোলাটাই যে কোন সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিত। এই পথে এগিয়ে এবার ভারতের সামরিক ক্ষেত্রে এক নতুন সংযোজন হল সি-২৯৫ বিমান। বিশেষ করে অরুণাচল লাদাখ সীমান্তে যেভাবে চীনের আগ্রাসন বাড়ছে তাকে প্রতিহত করতে এই বিমান দুর্দান্তভাবে সাহায্যকারী হয়ে উঠবে। একটু বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
সি-২৯৫ বিমান তৈরি করতে টাটার চুক্তি:
একদিকে কাশ্মীর সীমান্তে রয়েছে পাকিস্তানি সেনাদের হামলা, জঙ্গিদের বিস্ফোরণের মোকাবেলা করার জন্য অস্ত্র আর সৈন্যের ব্যবহার অন্যদিকে আবার জুটেছে চীনের আগ্রাসী মনোভাব। লাল ফৌজ অরুণাচল কে নিজের করে নিতে চায়। কিন্তু সেটা কোনোভাবেই সম্ভব নয় তার কারণ অরুণাচল ভারতের অংশ ছিল আছে আর থাকবে।
মাঝেমধ্যে যুদ্ধ বিরোধী চুক্তি মেনে একটু চুপ করে থাকলেও চুপি চুপি চিনা সেনারা যে সীমান্তে নিজেদের আধিপত্য বাড়াবার জন্য প্ল্যানিং করছে সেটা ভারতীয় সেনার কাছে অজানিত নয়। আর তাই ভারত নিজেকে সামরিক দিক দিয়ে এমন শক্তিশালী করে তুলছে যাকে চিন চোখ তুলে তাকাতেও ভয় পায়।
আরো পড়ুন – বিনোদন জগতের ‘কমল হাসান’ কে চেনেন? তিনি নাকি জীবন শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন?
সেই তালিকায় নব সংযোজন এই যুদ্ধবিমান। তবে আচমকা এটা ভারতের হাতে আসেনি। আজ থেকে দু বছর আগে অর্থাৎ ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মধ্যস্থতায় স্পেনের সংস্থা ‘এয়ারবাস ডিফেন্স অ্যান্ড স্পেস’-এর সঙ্গে যৌথ ভাবে ভারতীয় বায়ুসেনার জন্য সি-২৯৫ বিমান তৈরি করতে টাটার চুক্তি হয়েছিল। প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকার চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল বলে জানা যায়।
চলতি মাসেই স্পেনের সেভিল এয়ারফিল্ডে সে দেশের বিমান নির্মাতা সংস্থা ‘এয়ারবেস ডিফেন্স অ্যান্ড স্পেস’ ভারতীয় বায়ুসেনার হাতে এই বিমানটি তুলে দেয়। এয়ার চিফ মার্শাল জানিয়েছেন, খুব তাড়াতাড়ি সি-২৯৫ বিমান সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করবে বায়ুসেনা।
আরো পড়ুন – ক্রিকেট বিশ্বকাপের ট্রফিটি কি সোনা দিয়ে তৈরি? এই ট্রফি টির আনুমানিক মূল্য কত?
বিমান ইতিমধ্যেই গুজরাতের বরোদার বায়ুসেনা ঘাঁটিতে এসে গেছে। এখনো পর্যন্ত যা খবর তাতে মোট ৫৬টি সি-২৯৫ বিমানের চুক্তি করেছে বায়ুসেনা। তার মধ্যে ১৬টি তৈরি করা হবে স্পেনে।বাকি ৪০টি বিমান ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির অংশ হিসাবে তৈরি করা হবে ভারতে।
আগামী ২০৩১ সালের মধ্যে বায়ুসেনার হাতে তুলে দেওয়া হবে। গত ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে বিমান তৈরির কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এই বিমানের বিশেষত্ব কী?
প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে জানা যায় যে, এই সামরিক পরিবহণ বিমান সি-২৯৫ হাতে আসায় লাদাখ, সিকিম কিংবা অরুণাচল প্রদেশের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার দুর্গম ঘাঁটিগুলিতে সহজে অস্ত্র এবং রসদ পৌঁছে দিতে পারবে ভারতীয় বায়ুসেনা। পাশাপাশি অসুস্থ সেনাদের দ্রুত ফিরিয়ে আনাও সম্ভব হবে সঙ্গে চলবে নজরদারির কাজ।
আরো পড়ুন – বিলিওনিয়ার ব্যবসায়ী বিআর শেঠির জীবন সম্পর্কে জানেন?
প্রায় ৭১ জন জওয়ানকে বহন করতে পারবে সি-২৯৫ বিমান। লম্বায় বিমানটি ২৪.৪৬ মিটার আর উচ্চতা প্রায় ৮.৬৬ মিটার। মোট ৭ হাজার ৫০ কেজি ভার বহন করতে পারবে বিমানটি এবং এর সর্বোচ্চ গতি ২৬০ নট। এই বিমানে দু’টি প্র্যাট অ্যান্ড হুইটনি কানাডা পিডব্লিউ ১২৭জি টার্বোপ্রপ ইঞ্জিনের পাশাপাশি রয়েছে রিয়ার র্যাম্প ডোর।মাত্র ৬৭০ মিটারের রানওয়েতে টেক অফ করতে পারবে আর ল্যান্ডিংয়ের জন্য প্রয়োজন মাত্র ৩২০ মিটারের রানওয়ে।