Breaking Bharat: জলভালুকেরা থাকতে পারে মহাকাশেও? এটা কি কল্পনা না কি সত্যি (Water bears facts)? ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগলেও এটাই সত্যি যে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস চাঁদেও রয়েছে ‘আটপেয়ে অবিনশ্বর’। জলভালুক নিয়েই কথা বলছি আমরা কারণ এরাই সবচেয়ে অবিনশ্বর প্রাণী বলে বিজ্ঞান জানিয়েছে (Types of water bears)।
এই ব্রহ্মাণ্ডে কত অজানা অচেনা তথ্য ছড়িয়ে রয়েছে সেই সম্পর্কে আজ করা সত্যিই বড় কঠিন ব্যাপার। পৃথিবীতে প্রাণ এবং প্রাণীর অস্তিত্ব সম্পর্কে অনেক তথ্য উন্মোচিত হলেও রহস্য আজও রয়ে গেছে। গরম এবং ঠান্ডার মাঝামাঝি একপর্যায়ে নাতিশীতোষ্ণ অবস্থায় প্রাণের অস্তিত্ব বলে বিশ্বাস বিজ্ঞানীদের।
চাঁদেও রয়েছে ‘আটপেয়ে অবিনশ্বর’:
সেই কারণে চাঁদ বা মঙ্গল কিংবা মহাকাশের অন্য কোন গ্রহে প্রাণ থাকতে পারে কিনা তার সন্ধানে সেখানকার তাপমাত্রা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। কিন্তু এমন কোন প্রাণীর অস্তিত্ব যদি খুঁজে পাওয়া যায় যারা বেঁচে থাকে গনগনে আঁচ, কনকনে ঠান্ডায়,এমনি কিচ্ছু হয় না মহাকাশেও!
আজ থেকে অনেক বছর আগে ১৭৭৩ সালে জার্মান প্রাণীবিদ জোহান অগাস্ট এফ্রাইম গোয়েজ প্রথম বার জলভালুকদের বর্ণনা দিয়েছিলেন। এদের একটা পোশাকি নাম আছে বটে। আর সেটা হল ‘টারডিগ্রেড’। তবে বেশি পরিচিতি ‘ওয়াটার বেয়ার’ বা ‘জলভালুক’ নামে।
১০০০ কোটি বছর পর্যন্ত এই প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে:
অনেকে আবার ‘শেওলা শূকরছানা’ বলেও অভিহিত করে থাকেন। এক মিলিমিটারেরও কম দৈর্ঘ্যের আটপেয়ে প্রাণীগুলি যত দিন না সূর্য ধ্বংস হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত বেঁচে থাকবে বলে বিজ্ঞানীদের মত। দেখতে ভারী অদ্ভুত, হয়তোবা ভিনগ্রহের প্রাণী বলেও ভুল হতে পারে আপনার। ১৭৭৭ সালে ইটালীয় জীববিজ্ঞানী লাজারো স্প্যালানজিনি এই প্রাণীগুলির ‘টারডিগ্রেড’ নামকরণ করেছিলেন।
আরো পড়ুন – পৃথিবীতে আছড়ে পড়বে ‘২০২৩ ডিডব্লু গ্রহাণু’। ভালোবাসার দিনে পৃথিবীতে শুরু তারাদের যুদ্ধ?
এই কথার অর্থ ‘ধীর গতির প্রাণী’। তবে অবাক করার মতো বিষয় হলো আকার-আয়তনে ‘টারডিগ্রেড’ আণুবীক্ষণিক হলেও চরমতম পরিস্থিতিতেও তারা বেঁচে থাকতে পারে। উদাহরণ হিসেবে বলতে পারি যে জলে বসবাসকারী এই প্রাণীরা খাবার এবং জল ছাড়া ৩০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে (water bear size)।
গবেষকরা বলছেন ১৫০ ডিগ্রি থেকে মাইনাস ২৭২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রায় বেঁচে থাকতে এদের কোনো অসুবিধা হয় না। আগামীতেও কমপক্ষে ১০০০ কোটি বছর পর্যন্ত এই প্রাণী বেঁচে থাকতে পারে।
আরো পড়ুন – মহাশূন্যে ঠিক কত গ্রহ আবিষ্কৃত সেই সম্পর্ক সঠিক ধারণা আছে কি?
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন মহাশূন্যের একেবারে চাপশূন্য অবস্থা কিংবা পৃথিবীর গভীরতম সমুদ্রখাত ‘মারিয়ানা ট্রেঞ্চ’-এর ভয়ঙ্কর চাপেও এদের কোন ক্ষতি হয় না এবং দিব্যি এরা অবস্থার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে।জলভালুক আকারে সর্বাধিক ০.৫ মিলিমিটার পর্যন্ত হতে পারে। বহু বছর নিস্তেজ থাকার পর আচমকাই সতেজ হয়ে ওঠার মতো দৃষ্টান্ত রয়েছে এদের ক্ষেত্রে (do tardigrades live on humans)।
আরো পড়ুন – পৃথিবীর বাইরে এত এত দামি ধাতু? এইসব হাতে পেলে বদলে যাবে পৃথিবীর চেহারা?
এরা কতটা চরম পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে পারে সেটা পরীক্ষা করার জন্য এই প্রাণীদের চাঁদে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই পরিকল্পনা করে ২০১৯ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি চাঁদের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল ইজ়রায়েলের মহাকাশযান ‘বেরেশিট’।
সেই মহাকাশযানের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয় জলভালুকদের। কিন্তু দুর্ঘটনাক্রমে ১১ এপ্রিল যান্ত্রিক গোলযোগে চাঁদের মাটিতে ভেঙে পড়ে ‘বেরেশিট’। সেই দুর্ঘটনা কাটিয়ে উঠে যদি থেকে যায় তাহলে এখনো চাঁদে এই প্রাণীর অস্তিত্ব মিলবে।