Breaking Bharat: লোকসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে একদল বাংলার নির্বাচনে তৃণমূলের বড়সড় জয় নিয়ে লাফালাফি করছেন। আবার অন্যদিকে অসমের নির্বাচনে সাফল্য নিয়ে লম্ফঝম্প গেরুয়া শিবিরের। এদিকে হিমাচলে কংগ্রেসের পালে হাওয়া। সব মিলিয়ে আগামী লোকসভা নির্বাচনের মঞ্চ যে জমে উঠেছে, তা এখন থেকেই আঁচ করছেন রাজনীতিবিদরা।
২০২৪ সালে কেন্দ্রে থাকার ক্ষেত্রে বিজেপি-র কাছে কোন রাজ্যের নির্বাচন বড় ফ্যাক্টর, এই নিয়ে যখন গেরুয়া শিবিরে কোন্দল, ঠিক সেই পরিস্থিতিতেই ৩ টি লোকসভা এবং ২৯ টি বিধানসভা আসনে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনের ফলাফল আগামী লোকসভা নির্বাচনের সমীকরণকে (equation of Lok Sabha elections) বদলে দিল না তো? বাংলায় দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ম্যাজিক।
চারে চার পেল ঘাসফুল। ওদিকে অসমে হিমন্তর ম্যাজিক। পাঁচে-পাঁচ বিজেপি জোট। আবার বিহারে নীতিশের সামনে বেহাল লালু। হিমাচল প্রদেশে বিজেপি ক্ষমতায় আছে বটে। তবে কংগ্রেস ছিনিয়ে নিয়েছে তিন-তিনটি বিধানসভা কেন্দ্র ও একটি লোকসভা কেন্দ্র।
দিনহাটা-শান্তিপুর-গোসাবা-খড়দা। উপনির্বাচনে চারে চার পেল তৃণমূল। দিনহাটা-শান্তিপুরের মতো গড়ও হাতছাড়া বিজেপি-র। শুধু হাতছাড়া বললে বোধহয় কম বলা হয়, সংখ্যার নিরিখে ধোপেই টিকল না গেরুয়া শিবির। দিনহাটায় ১ লক্ষ ৬৪ হাজার ৮৮ ভোটে জয় ছিনিয়ে নিয়েছেন তৃণমূলের প্রার্থী উদয়ন গুহ। অন্যদিকে খড়দায় ৯৩ হাজার ৮৩২ ভোটে জয় পেয়েছেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। গোসাবায় ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৫১ ভোটে জয় সুব্রত মণ্ডলের।
এবং শান্তিপুরে ৬৪ হাজার ৬৭৫ ভোটে জয় ছিনিয়ে নিলেন ব্রজকিশোর গোস্বামী। সব মিলিয়ে রাজ্যে যে সবুজ-হাওয়া, বলা বাহুল্য। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই জয়কে ‘মানুষের জয়’ বলে বার্তা দিলেও শুধু রাজ্যের নিরিখে সমীকরণ কষলে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে অংক মিলবে তো আদৌ? সেটাই হল গিয়ে প্রশ্ন। কারণ বাংলার মতো ‘ক্লিন সুইপ’ দেশের অন্যান্য রাজ্যেও দেখা গেছে। বঙ্গে তৃণমূল, এদিকে কোথাও বিজেপি, কোথাও আবার কংগ্রেস দেখেছে জয়ের মুখ।
অসমের পাঁচটি কেন্দ্রের উপনির্বাচনে শাসক দল বিজেপি-র বড়সড় সাফল্য। বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চারে চার পেলে গেরুয়া শিবিরও কম যায় না। অসমে পাঁচে পাঁচ পেল তারা। বিজেপি-র জোট সমস্ত আসনেই জয়লাভ করেছে অসমে। তিনটি আসনে খোদ বিজেপি এবং বাকি দু’টি আসনে তাঁদের সহযোগী দল ইউনাইটেড পিপলস পার্টি। রাজ্যে গেরুয়া ঝড়কে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ‘অসাধারণ’ আখ্যা দিয়েছেন।
পাশাপাশি নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) প্রতি যে উত্তর-পূর্বের মানুষের আস্থা রয়েছে, সেই সুরও শোনা গেছে তাঁর কথায়। তিনি এদিন বলেন, ‘আমরা পাঁচটি আসনই বড়সড় জয় পেয়েছি। অসমে এই জয় কোনও সাধারণ জয় না। উত্তর পূর্বের মানুষ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে নিজেদের ভরসা প্রকাশ করেছেন ভোটের জয়যুক্ত করার মাধ্যমে।’
আবার বিহারের পরিসংখ্যানও বিজেপি-র পক্ষেই দেখা গেছে। নীতিশ কুমারের নেতৃত্বাধীন বিজেপি জোট দু’য়ে দুই পেয়েছে। ওই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালু প্রসাদ অবশ্য হুঙ্কার দিয়েছিলেন যে, দুটি কেন্দ্রেই তাঁরা জয়লাভ করবেন। কিন্তু ফলাফলে দেখা গেল উলটো প্রতিফলন।
অন্যদিকে বিজেপি-র জন্য ‘নির্বাচনী হুমকি’ হয়ে দাঁড়িয়েছে হিমাচল প্রদেশ। আর তার কারণ ওই রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের পরাজয়। হিমাচলের একটি লোকসভা ও তিনটি বিধানসভা আসনে উপনির্বাচনে সাফল্য পেয়েছে কংগ্রেস। দেশ জুড়ে এভাবে ‘ক্লিন সুইপ’কে কেন্দ্র করে জমে উঠেছে আগামী লোকসভা নির্বাচনের লড়াই। শেষ হাসি কে হাসবে, এটাই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।