Taro Leaves: বৃষ্টি পড়লে ছাতা নিয়ে তো রাস্তায় বেরিয়েছেন কিন্তু ‘কচু পাতা’ মাথায় চাপা দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন? কিন্তু কচু পাতায় জল ধরে না কেন? সেটা জানা আছে নিশ্চয়ই, কিন্তু কেন?
গ্রাম বাংলায় একটা মজাদার খেলা ছিল বৃষ্টি ভিজলে কচুপাতা মাথায় দেওয়া। আবার খেলতে খেলতে কারো যদি লেগে যেত জল আনার প্রয়োজন হতো তখন পুকুর বা সামনের কল থেকে কচিকাতা করে জল নিয়ে আসা। আসলে হাতে করে জল নিয়ে এলে সেই জল পড়ে যেতে পারে কচু পাতা থেকে জল কিছুতেই পড়ে না।
কচু পাতায় জল ধরে না কেন?
ছোট থেকেই আমরা দেখি অন্যান্য পাতা আপনি ফুচকার ঠোঙার মতো মুড়ে জল ধরে আনতে চাইলে কিছুক্ষণ পর সেই জলটা থাকবে না। অথচ কচু পাতা এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী। অথচ এই কচু পাতাই আবার জলে ভেজে না। মানে যতই কলের নিচে রেখে বা জলে ডুবিয়ে ভেজাবার চেষ্টা করুন না এই পাতা ভিজবে না (taro leaves as waterproof paper)। কিন্তু কেন এমন হয় সেটা জানেন কি?
আসলে কচু পাতার গঠনের দিকে নজর দিলে গোটা বিষয়টা পরিষ্কার হয়ে যাবে। এই পাতার উপরে একটা আবরণ রয়েছে এটাকে বলে ওয়াক্স। মানে বাংলায় এই মোম বা পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ থাকায় জল জমে না। কচুর পাতায় হাইড্রোফোবিক স্তর থাকে।
আর সাধারণত জলের ঘনত্ব মোমের ঘনত্বের থেকে বেশি । এবার জল এবং মোম খুব স্বাভাবিক ভাবেই দ্রবীভূত হতে পারে না। মোম এবং জলের মিশ্রণে মোম উপরে ভাজতে থাকে আর জল নিচে পড়ে থাকে । কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হল আপনি যদি সাবান জলে কচুপাতা ভেজান তাহলে এই পাতা ভিজে যায় ।
তবে এতে ম্যাজিক কিছু নেই এর পেছনে সঠিক বৈজ্ঞানিক ব্যাখা রয়েছে যেটা জানাবো আপনাকে। পৃষ্ঠটান কথাটার অর্থ জানা আছে নিশ্চয়ই? এটা একটা ইলাস্টিসিটি বা স্থিতিস্থাপক প্রবণতা। এর ফলে উপরেতলের সম্ভাব্য সর্বনিম্ন ক্ষেত্রফল কার্যকরী ভূমিকা নেয়।
এই কারণেই দেখবেন কিছু কিচ পতঙ্গ যাদের দেহের ঘনত্ব জলের থেকে বেশি তারা কিন্তু জলের উপরে ভাসতে পারে কিন্তু জলের থেকে ঘনত্ব যাদের কম তারা জলে ডুবে যায়। যেমন কথায় বলে তেলে জলে মেশে না । ঠিক এই একই কারণের জন্য ঘটনাটি ঘটে। এইবার তাহলে কচুপাতা সাধারণ জলে ভেজে না কিন্তু সাবান জলে কিভাবে ভিজে যায় এই ব্যাখ্যা আপনাদেরকে জানাতে চাই ।
আরো পড়ুন – দুঃখের সময় চোখের জল আর আনন্দের চোখের জল- পার্থক্যটা কি শুধুই অনুভূতির?
দেখুন তর ুন কোন কিছুর ঘনত্ব মানে ধরুন জল এবং কঠিন কিছুর ঘনত্ব যেমন ধরুন কচু পাতা এই দুইয়ের যদি তুলনা করেন, তাহলে দেখা যায় জলের ঘনত্ব কচুপাতার ঘনত্বের থেকে হালকা ফলে এখানে যে স্পর্শ কোণ তৈরি হয় তা ৯০ ডিগ্রীর কম মাপের হয়।
এইবার যদি সাবান জল নিয়ে আসেন তাহলে কঠিন পদার্থ অর্থাৎ কোচ পাতার ঘনত্বের থেকে সাবান জলের ঘনত্ব বেশি হয়ে যায়। সুতরাং স্পর্শ করুন ৯০ ডিগ্রির বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে কচুপাতা সহজেই ভিজে যায়।
আরো পড়ুন – Fruit stickers: ফলের গায়ে লাগানো স্টিকার বলে সেটি কতটা বিশুদ্ধ আর টাটকা?
আমরা এই প্রতিবেদনে যে তথ্য আপনার সামনে তুলে ধরলাম তা ইন্টারনেটের বিভিন্ন সূত্র ঘেঁটে বের করা হয়েছে। পাশাপাশি পদার্থবিদ্যার উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের বিভিন্ন বই থেকে তথ্যাদি সংগ্রহ করে আমরা আজকের এই প্রতিবেদনে তা যুক্তি সহকারে আপনাদের সামনে উপস্থাপিত করেছি।
আরো পড়ুন – রেলের চালকরা সফরকালে কি কি সুবিধা পান? তাছাড়া চালকরা এমার্জেন্সি মুহূর্তে কি করেন?
মোদ্দা কথা হল বুঝলো কি বিষয়টা কোনভাবেই প্রশ্রয় দেবেন না কারণ কোন ঘটনা যদি পৃথিবীতে ঘটে থাকে তাহলে তার পেছনেই যথেষ্ট পরিমাণে বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা অবশ্যই আছে। এখন প্রয়োজন এই ব্যাখ্যা খোঁজার মানসিকতার তবে রহস্য উন্মোচিত হবে সব ক্ষেত্রে।