Breaking Bharat: ‘দাদার কীর্তি‘ (Dadar Kirti)! কিন্তু বাস্তবেও মনে রাখার মতো, জানেন কি? মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন তাপস পাল? ‘মাধুরী দীক্ষিতের বিপরীতে ডেবিউ‘ করার কাজটা সহজ ছিল না। একটা সাদামাটা ছেলে কী ভাবে হয়ে উঠলেন নায়ক?
বাংলা সিনেমা দেখতে যারা ভালবাসেন তারা সকলেই এককথায় ভাল সিনেমা বলতে ‘তরুণ মজুমদার পরিচালিত দাদার কীর্তির‘ কথা বলবেন। এমন একটা ছবি যা এক সাধারণ ছেলেকে নায়ক তৈরি করে দিয়েছিল। কিন্তু সাদামাটা একটা ছেলে কী ভাবে হয়ে উঠলেন নায়ক?
মাধুরী দীক্ষিতের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন তাপস পাল?
সিনেমার অভিনেতার আসল গল্প যে সিনেমাকেও হার মানাবে। এমন কোন গ্ল্যামার ছিল না যাতে ঝা চকচকে হিরোদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজেকে সু প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন তিনি। অথচ বাঙালি দর্শকের মনে অন্য জায়গা করে নিয়েছিল এই ছেলেটি।
ভাবনাচিন্তা কে ওলোট পালোট করে, বাংলা সিনেমাকে নতুন এক দিশা দেখিয়েছিলেন এই অভিনেতা। কলকাতা দাপটে মফস্বল থেকে লড়াই করাটা সহজ ছিল না। চন্দননগর থেকে নিত্যদিনের যাতায়াত, অডিশন এই সব মিলে একটা সময় আর ইচ্ছে শক্তি কাজ দিত না। তবুও হার না মারা মানসিকতা কীর্তি তৈরি করেছে দাদার।
খুব সহজ সরল সাদাসিধে দেখতে একটা ছেলে মহুয়া, দেবশ্রী, ইন্দ্রাণী, শতাব্দী, রচনা— বহু জুটিতেই সফল হয়েছেন । যখন যেরকম হয়েছে সেই মতন নিজের ক্যারিয়ারকে নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করেছেন। যখন বাংলা ছবি তার প্রতিদিনের চৌহদ্দি পেরিয়ে একটু বলিউড স্টাইলে রঙিন হচ্ছে,
তখন দর্শককে বাংলা মুখে গড়ে তোলা যথেষ্ট চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু সেই কাজটাও হয়েছিল অনায়াসে। তবে বলিউডের দিকে মন ঘুরছিল। বছর যখন ২২, একবার চেষ্টা করলেন যদি বলিউডে কিছু করা যায়। ‘মাধুরী দীক্ষিতের বিপরীতে ডেবিউ‘ করার কাজটা সহজ ছিল না।
আরো পড়ুন – নাচ, গান, আঁকা, কবিতা এই সব নিয়েই আমাদের সাংস্কৃতিক! এবার নেশাই হবে পেশা! কিভাবে?
আর মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলেটা মিরাকেলের স্বপ্ন দেখলেও সেটা বাস্তবে যে সম্ভব হয়নি তার প্রমাণ দিয়েছিল বক্স অফিস রিপোর্ট। এরপর ‘পরিচালক তরুণ মজুমদার‘ (Director Tarun Mazumder) তাকে বুঝিয়েছিলেন ফিরে তাকালে চলবে না। বাংলা কে ভালোবেসে বাংলার মানুষের মন জয় করার তাগিদ নিয়ে একের পর এক ছবি এবং ভালো ভালো চরিত্রের অপেক্ষা।
সেই সময় বাংলার আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র ‘প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়‘। কম্পিটিশন বরাবরই ছিল। তার সঙ্গে নিজেকে প্রমাণ করার জেদ। বাবা ডাক্তার ছেলে অভিনেতা – বিষয়টা মেনে নেয়া সহজ ছিল না পরিবারের পক্ষেও। কিন্তু বাংলা সিনেমার দর্শককে হাবাগোবা প্রেমের সংজ্ঞা বুঝিয়েছিলেন তিনি (Dadar Kirti,Tapas Pal, Director Tarun Mazumder)।
আরো পড়ুন – ‘চটি গল্প’ নিয়ে আসক্তি কি বেড়েই চলেছে? এই ‘চটি বইয়ের গল্প’ আপনার ক্ষতি করছে না তো?
এক কথায় বলতে গেলে ‘চরণ ধরিতে দিও গো আমারে’ তখন মধ্যবিত্ত প্রেমের থিম সং হয়ে গিয়েছিল। ক্যারিয়ারের মধ্য গগনে রাজনীতি শুরু। ২০০৪ থেকে ২০১৪ – তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্যে একের পর এক নির্বাচনে জয়ের হাতছানি।
কিন্তু ঘরে ঘরে লোক ঢুকিয়ে দেওয়া আর চন্দননগরের ছেলের কীর্তির কথা নিজের জনসভায় আলটপকা মন্তব্য হিসেবে বলে, গোবেচারা ছেলেটা হয়ে গেল মার্কামারা ভিলেন। বাঙালির কাছে ইমেজ খারাপ হচ্ছে। এই ব্যাপারটা কোথায় তিনি নিজেও বুঝতে পেরেছিলেন।
আরো পড়ুন – জানেন! ‘নিজের কাজ নিয়ে অখুশি’ হওয়া মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে? কিন্তু কেন এমন ঘটনা?
এরপর চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানো। ভুবনেশ্বরে জেলে থাকাটা ঠিক মেনে নিতে পারেননি তিনি। শরীর ক্রমশই ভাঙছিল। তাই শেষমেষ আর শেষ রক্ষা আর হল না। বিস্মৃতির অন্ধকারে, তাপস পালের উত্থান-পতন দুটোই রয়ে গেল। হয়তো বা শেষের দিকে খানিকটা সমালোচনা আর করুণা সঙ্গী হল তাঁর।