Breaking Bharat: ৬০ ডিগ্রী ঝুঁকে আছে পাথরের তৈরি আগ্রার কেল্লা, কিন্তু কেন জানা আছে কি? আজ বলবো আগ্রার কেল্লার কথা। অনেকেই জানেন এই কেল্লা একটু ঝুঁকে আছে। ঠিক কতটা সেটা কি অংকের হিসেব কষে বলতে পারবেন? আজ কারণ ব্যাখ্যা করে গুপ্ত তথ্য জানাবো আপনাদের (agra fort history)।
ভারতবর্ষ স্থাপত্যের দেশ। আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে আছে না না স্থাপত্য কীর্তি। এই বিষয়ে সব থেকে আগে ভারতের শাসনকর্তা হিসেবে যে বংশের নাম উঠে আসে তা হলো নিঃসন্দেহে মুঘল সাম্রাজ্য। বিশ্বের বিস্ময় তাজমহল যে মুঘল আমলেই তৈরি।
একটা স্থাপত্যের কথা বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠলো বা আলোচিত হল তার মানে এমনটা নয় যে এই একটি মাত্র ভাস্কর্য মুঘল আমলে তৈরি হয়েছিল। কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে নানা শিল্পকলা নিদর্শন দেখতে পাওয়া যায়।
যেখানে কোনো না কোনো রাজবংশের ইতিহাস খোদাই করা আছে। কখনো দেখা যায় গুপ্তধনের গোপন সংকেত আবার কখনো অজানা ইতিহাসের পান্ডুলিপি, সবটাই স্থাপত্য ভাস্কর্যের মধ্যেই লুকিয়ে আছে।
পাথরের তৈরি আগ্রার কেল্লাকে ঝোঁকানো হয়েছিল:
মুঘল সম্রাট বা মুঘল সাম্রাজ্য মানেই ভারতের অসাধারন কিছু নিদর্শনের কথা সবার মাথায় আসে। মনে রাখতে হবে, রাজরাজা বা সম্রাটদের আমলে যখন কোন কিছু তৈরি করা হয় তখন তার পেছনে এক গভীর উদ্দেশ্য লুকিয়ে থাকে যা তৎকালীন সময়ে জনসমক্ষে প্রকাশিত হয়নি।
যেভাবে তাজমহলের ইতিহাস আজ সবার কাছে এতটাই জানা সেটা তাজমহলের স্থাপনকালে ছিল অকল্পনীয়। ঠিক সেরকমই মুঘল আমলে তৈরি এক সেরা স্থাপত্যের নাম আগ্রার লালকেল্লা। পাথরের তৈরি আগ্রার কেল্লাকে ৬০ ডিগ্রি ঝোঁকানো হয়েছিল (Agra Fort was tilted 60 degrees), সেটা জানেন কি?
আড়াই কিলোমিটার দূরে আগ্রার এই লাল কেল্লা:
১৯৮৩ সালে যমুনা নদীর তীরে অবস্থিত এই কেল্লাটিকে UNESCO বিশেষ সম্মান দিয়ে বিশ্বের ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় জায়গা করে দিয়েছে। বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের মধ্যে অন্যতম এক আশ্চর্য তাজমহল থেকে মাত্র আড়াই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত আগ্রার এই লাল কেল্লা।
আরো পড়ুন – স্বামী স্ত্রীর মাঝে শাশুড়ির আগমন অর্থাৎ স্বামী স্ত্রীর বেডরুমে শাশুড়ি! কী করবেন ?
মুঘল আমলের সাম্রাজ্যের অসাধারণ স্থাপত্যের নিদর্শন এটি। কেল্লার নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে ছিল আনুমানিক ষোড়শ শতাব্দীতে। সেই সময় কাল ছিল সম্রাট আকবরের, আর এর নির্মাণ কাজ শেষ হয় অষ্টাদশ শতাব্দীতে ঔরঙ্গজেবের সময়। এই কেল্লাটি একটু ঝুঁকে আছে।
আরো পড়ুন – Twins are born : প্রতি ঘরেই জন্ম নেয় যমজ শিশু। এই প্রতিবেদনে স্পষ্ট হবে যমজ সন্তান জন্মের রহস্য!
অর্থাৎ খুব ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখবেন আগ্রা কেল্লার দক্ষিণ দিকের প্রবেশদ্বারটি ৬০ ডিগ্রি ঝোঁকানো। এটাও কিন্তু এমনি এমনি করা হয়নি এর পেছনেও যথেষ্ট যুক্তি আছে। আসলে সম্রাট আশঙ্কা করেছিলেন প্রাসাদ ে শত্রু হঠাৎ করে হামলা করতে পারে।
যাতে হাতি চড়ে শত্রু দুর্গে প্রবেশ করতে না পারে সে কারণেই এই ব্যবস্থা (Agra Fort was tilted 60 degrees to prevent elephants)। এমনকি এই প্রবেশদ্বারের ওপরে সর্বদা তেল মাখানো থাকতো যাতে দরজায় জং না ধরে। ভাবতে পারছেন সেই যুগের ভাবনা কেউ কত বৈজ্ঞানিক এবং বাস্তবসম্মত দৃষ্টিভঙ্গি ছিল।
আরো পড়ুন – গ্রামের বাড়িতে গুগল? অলিগলিতে ওবামা? সামনেই থাকে সুপ্রিম কোর্ট! অবাক হচ্ছেন?
সম্রাট আকবরের আমলে তৈরি হলেও পরবর্তীকালে জাহাঙ্গীর এবং শাহজাহানের রাজত্ব চলাকালীন দুৰ্গের বহু নতুন স্থান নিৰ্মিত হয়।খাস মহল, শীশ মহল, অষ্টভূজাকৃতির মুহম্মন বুৰ্জ, দেওয়ান-ই-খাস, দেওয়ান-ই-আম, মোতি মসজিদ, নাগিনা মসজিদ এই দুর্গের অন্যতম দ্রষ্টব্য স্থান। পারস্য আর ভারতের শিল্পকলার মিশ্রণ দেখা যায় এই দুর্গের স্থাপত্য ও ভাস্কর্যে।
বর্তমান দুর্গের বেশিরভাগটাই মুঘল আমলে নির্মিত হলেও একাদশ শতকে সেখানে একটি প্রাচীন দূর্গ ছিল। ইতিহাস বলছে ১৪৭৫ সালে আগ্রা ফোর্ট ছিল রাজা বাদল সিং-এর অধীনে। সেই সময় এটির নাম ছিল বাদলগড় সামরিক দূর্গ। বহু রক্তক্ষরণ সংগ্রাম আর রাজত্ব এবং হাত পরিবর্তনের পর এই দূর্গ নিজের জায়গায় ঐতিহাসিক নিদর্শন হয়ে আজও রয়ে গেছে সবার সামনে।।