Breaking Bharat : গ্রামের বাড়িতে গুগল? অলিগলিতে ওবামা? সামনেই থাকে সুপ্রিম কোর্ট! গ্রামে একসঙ্গে ওবামা, গুগল, ফেসবুক ঘোরাফেরা করে, অবাক হচ্ছেন? তাহলে নজর রাখুন সম্পূর্ণ প্রতিবেদনে।
কথায় বলে নামে আর কি এসে যায়? সূর্যের নাম বদলে কেউ যদি মোমবাতি রাখে তাহলে কি সূর্য আলো দেওয়া কমিয়ে দেবে? আসলে নাম একটা পরিচয় মাত্র অর্থাৎ সেই শব্দটা ব্যবহার করে কাউকে সম্বোধন করলে তিনি সাড়া দেন।
এক গ্রামে সুপ্রিম কোর্ট, ওবামা আর গুগলের সহবাস:
এবার যদি ধরুন এমন কোন নাম আপনার বাড়ির ছেলে মেয়েদের হয় যে নাম তার বিশ্বব্যাপী অন্য একটা পরিচিতি আছে আর সেটাকে খুব একটা সাধারণ মানুষের নামের পর্যায়ে ধরা হয় না তাহলে কেমন হবে? আপনি তো বলতেই পারেন আলু পটল পোস্ত এইসবতো নাম হয়। হ্যাঁ, সত্যি কথা।
কিন্তু এক গ্রামে যদি সুপ্রিম কোর্ট, ওবামা আর গুগলের সহবাস স্থান হয় তাহলে কী বলবেন। চলুন দেখি যাওয়া যাক সেরকম এক গ্রামে।
কথায় আছে যা নেই মহাভারতে তা আছে এই ভূ- ভারতে। প্রয়োজনের খাতিরে কথাটা একটু অদল বদল করে নেওয়া এবং দেওয়া যাই বৈকি। তাহলে এই ভারতের বুকে সবকিছুই আছে এবং চাইলে খুঁজে পাওয়া সম্ভব। এই যেমন আমরা খুঁজে বের করেছি এমন এক গ্রাম যেখানকার মানুষের নাম বড়ই অদ্ভুত।
গ্রামে একসঙ্গে ওবামা, গুগল, ফেসবুক ঘোরাফেরা করে:
একেই বোধহয় কবি বলতে পারেন আজব গাঁয়ের আজব কথা। দিল্লি দিল্লি যেতে হবে না। যে গ্রামে একসঙ্গে ওবামা (Barack Obama), গুগল (Google), ফেসবুক (Facebook), সুপ্রিম কোর্ট ঘোরাফেরা করে সেই গ্রামটি কর্নাটকে। গ্রামের নাম ভদ্রপুর। যদি বলি এই গ্রামেই জন্ম নিয়েছে আমেরিকা, জাপান তাহলে? গল্প নয় বলছি বটে সত্যি কথা।
আরো পড়ুন – বিয়ে মানে সাত জন্মের বন্ধন কিন্তু বিয়ের অনুষ্ঠানে একাধিক নিয়ম পালন আজও কতটা প্রাসঙ্গিক?
এই গ্রামের সোনিয়া গান্ধীর বয়স মাত্র তিন বছর। অমিতাভ বচ্চন আর অনিল কাপুর একসঙ্গে দোলনায় দোল খাচ্ছেন এ দৃশ্য সবার চেনা। হাইকোর্টের সুপ্রিম কোর্ট চেনেন নাএরা তো দুজন ভাই-বোন। Google আর facebook একসঙ্গে মাটিতে বসে ভাত ডাল তরকারি খেতে পারে।
বেঙ্গালুরু থেকে প্রায় ৪১৯ কিলোমিটার দূরে ভদ্রপুর গ্রাম:
নির্ঘাত ভাবছেন মাথা খারাপ হয়ে গেছে? আসলে এই গ্রামের নিয়মটাই এরকম অর্থাৎ এই ভাবেই প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাদের সন্তানদের নামকরণ করছে। বেঙ্গালুরু থেকে প্রায় ৪১৯ কিলোমিটার দূরে ভদ্রপুর গ্রাম (Bhadrapur village)। তাহলে গ্রামের জনজাতির কথা বলতে হয়।
ভারী অদ্ভুত এই গ্রামে বসবাসকারী জনজাতিদের হাক্কি পিক্কি (Hakki Pikki Tribe Culture)। আসলে সন্তান জন্মবার পর বাবার মুখে প্রথম যে নামটা আসে সেটাই সন্তানের নাম হয়ে যায়। এখন আপনি বলতেই পারেন ‘ওলে বাবালে’ বা ‘কি মিষ্টি’ এইসব নাম কেন হয় না এবার দেখুন কার মাথায় কি নাম আসবে সেটা তো আগে থেকে বলা মুশকিল।
আরো পড়ুন – স্বামী স্ত্রীর মাঝে শাশুড়ির আগমন অর্থাৎ স্বামী স্ত্রীর বেডরুমে শাশুড়ি! কী করবেন ?
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায় কর্ণাটকের বিস্তীর্ণ অঞ্চলজুড়ে ছিল যাযাবর হাক্কি পিক্কি জনজাতির বাস ছিল একসময়। এরা মোটামুটি জলে জঙ্গলেই থাকতেন। ছোটখাটো জীব জন্তু শিকার করেই কাটত দিন। তারা মূলত পাখির শিকার করতেন। কিন্তু ১৯৭০ সাল নাগাদ কর্ণাটক সরকার পাখি শিকার নিষিদ্ধ করে দেয়।
আরো পড়ুন – আগুন জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দেয়? তাহলে আগুনের উপর কী করে বাসস্থান গড়ল মানুষ?
এবং এই জনজাতিকে জঙ্গল থেকে সরিয়ে দেয় প্রশাসন। তারপর থেকেই এরা ভদ্রপুর গ্রামের বাসিন্দা। এদের জীবন যাপন খুব সাধারণ। গাছ ফুল পাতা নিয়েই জীবন বলে সহজ সরল নামেই একে অন্যেকে ডাকেন এরা। তবে এখন সময় বদলেছে তাই বাইরের জগতের সঙ্গে মিশতে শিখেছে এই জনজাতি।
আরো পড়ুন – Santiniketan : কবিগুরুর রবি ঠাকুরের ‘সাধের শান্তিনিকেতন’ কে কতটা চেনেন আপনি?
ফলে বাইরের দুনিয়ার সঙ্গে পরিচিত হয়ে একাধিক নাম সম্পর্কে আজ অবগত। তাই বাইরের জগতের সঙ্গে পরিচিত হয়ে এখন তারা অনেক ট্রেন্ডি নাম নিজেদের ভোকাবিলারিতে যুক্ত করতে পেরেছে। ব্যাস এবার এই নামগুলোই আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়ছে জনজাতির মধ্যে।
আগে এদেরকে খুব একটা পাত্তা দিত না কেউ কিন্তু এখন সরকার প্রশাসন আদালত এদের সম্মান দিয়েছে। নেপাল, চিন এবং তিব্বতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গেই ব্যবসা করতে শুরু করেছে এই উপজাতি। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলেছে ওরাও।