Breaking Bharat: উত্তরাখণ্ডে হনুমানের পুজো (Hanuman puja) করা কেন নিষিদ্ধ? দেবতা মানুষের উপর রুষ্ট হন, কিন্তু মানুষ দেবতার উপর রেগে গেল? আমরা বলছি উত্তরাখণ্ডের দ্রোণাগিরি গ্রামের কথা। নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে, কেন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন গ্রামবাসীরা?
মানুষ সমস্যায় পড়লে ভগবানের দ্বারস্থ হয়। এবং ভগবান আশীর্বাদ করলে মানুষের দুর্ভোগ দুর্যোগ সবটাই কেটে যায়। তেত্রিশ কোটি দেব দেবতা ভারতে রয়েছেন। একেক ধর্মের সম্প্রদায়ের মানুষ একেক দেবদেবীকে পছন্দ করেন বা উপাসনা করেন। হিন্দু ধর্মে কিছু নাম ভীষণ চেনা।
হনুমানের পুজো করাই নিষিদ্ধ উত্তরাখণ্ডের একটি গ্রামে:
তার মধ্যেই সংকটমোচনকারী পবন পুত্র হনুমানের কথাও কারোর অজানা নয়। অনেকে মনে করেন যদি হনুমান চালিশা (Hanuman Chalisa) প্রত্যেকদিন পাঠ করা যায় তাহলে জীবন আনন্দময় হয়। আর সেই হনুমানের পুজো করাই নিষিদ্ধ উত্তরাখণ্ডের একটি গ্রামে (Hanuman puja is banned in Uttarakhand)।
শুধু নিষিদ্ধ বললে কম বলা হবে যদি কেউ ভুল করেও হনুমানের পুজো করেন তাহলে কার্যত তাকে হয় গ্রাম ছাড়া হতে হয়, নয় তো একঘরে হয়ে কাটাতে হয় বাকি জীবনটা।
যুগ যুগ ধরে ভক্ত আর ভগবানের সম্পর্ক বিশ্বাসের ওপর টিকে আছে। এই অপার বন্ধনের আলাদা করে কোন যুক্তি বা তর্ক হওয়া অনুচিত। কারণ প্রতিটি মানুষের বিশ্বাস তার নিজের কাছে একেবারে নিজের মতো। শিব কালী দুর্গা গণেশ সব দেবদেবীর পূজোই ভারতের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময় হয়ে থাকে।
গ্রামের বাসিন্দারা হনুমানের উপর যথেষ্ট ক্ষুব্ধ!
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আরাধ্য দেবতার মন্দিরে বারোমাসি তিনি পূজিত হন। ঠিক তেমনি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে বা বলতে গেলে বিভিন্ন শহরের গলিতে হনুমান মন্দির দেখা যায় (Hanuman temples)। সংকট মোচন হবে এই আশা নিয়ে পবনপুত্র হনুমানের আরাধনায় ব্রতী হন পুরুষ নারী নির্বিশেষে সকলেই।
রাম ভক্ত হনুমান যে যে স্থানে গিয়েছিলেন পুরাণ বা শাস্ত্র মতে সেই স্থানগুলিকে পবিত্র বলে ধরা হয়। যে দেশে হনুমানের উপর এত বিশ্বাস সেখানেই হনুমান পুজো নিষিদ্ধ ভাবা যায়! উত্তরাখণ্ডের চামোলি জেলার দ্রোণাগিরি গ্রামের বাসিন্দারা হনুমানের উপর যথেষ্ট ক্ষুব্ধ আর সেই ক্ষোভের কারণ বছরের পর বছর ধরে চলে আসছে।
এখানকার মানুষ অন্য কোথাও গিয়ে হনুমানের পূজা করেন না:
স্থানীয় মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এই গ্রামে কোন হনুমান মন্দির নেই এমনকি হনুমান জয়ন্তীতেও এখানকার মানুষ অন্য কোথাও গিয়ে হনুমানের পূজা করেন না। এখানকার মানুষের বিশ্বাসের কথা বলার আগে গ্রামের ভৌগলিক অবস্থানটা একটু জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুন – আজও দূরে অমিতাভ রেখা! রেখার ভাগ্য আর জয়া বচ্ছনের ভাগ্য যেন একে অন্যের সঙ্গে লড়াই!
দিল্লি থেকে দ্রোণাগিরি গ্রামের দূরত্ব এই ধরুন প্রায় ৪০০ কিলোমিটার মত হবে। ধৌলি গঙ্গা নদীর তীরের জুম্মা নামক স্থান থেকে গাড়িতে করে দ্রোণগিরিতে যাওয়া যেতে পারে আবার অনেকে ট্রেকিং করেও পৌঁছে যেতে পারেন । আবার চাইলে জুম্মা থেকে ট্রেক করেও যেতে পারেন।
হনুমানের প্রতি ক্ষোভের কারণ:
অসম্ভব সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্যে ভরপুর এই গ্রাম। প্রতিবছর শুধু ভ্রমণের উদ্দেশ্যে এখানে আসেন বহু মানুষ। কিন্তু ভুল করেও এই গ্রামে পৌঁছে হনুমানের পুজো করার কথা বলবেন না। আসলে হনুমানের প্রতি ক্ষোভের কারণের সঙ্গে কিছুটা ধর্মীয় কাহিনী জড়িয়ে আছে (Cause of anger towards Hanuman)।
আরো পড়ুন – যেখানে গায়ের পোশাক থেকে পায়ের জুতো, সবকিছুতেই রয়েছে নিষেধাজ্ঞা!
এর জন্য আপনাকে রামায়ণের পাতায় চোখ বোলাতে হবে। লক্ষণ কি বাঁচাতে যখন বিশল্যকরণী আনার প্রয়োজন হয়েছিল তখন প্রভু শ্রীরাম কে জানিয়ে সেই কাজ করার দায়িত্ব নিয়েছিলেন হনুমান। এখানকার মানুষের বিশ্বাস এই গ্রামে হনুমান আসার পর গ্রামেরই এক মহিলা তাঁকে সেই গাছ দেখিয়ে দেন।
আরো পড়ুন – uterus problems : মহিলাদের জরায়ুতে সমস্যা! অজান্তেই ক্যান্সারের ঝুঁকি? বাজারে আসছে ভ্যাকসিন!
কিন্তু তারপরেও সঞ্জীবনী ভেষজ চিনতে পারেননি, স্বয়ং হনুমান। তার পরিবর্তে পুরো পাহাড়কেই তিনি তুলে নিয়ে লঙ্কায় চলে যান। ব্যাস সেই থেকেই এখানকার মানুষ খুব হনুমানের উপর। পুজো করা তো দূরের কথা, নাম উচ্চারণ করলেও শাস্তি পেতে হয় গ্রামের শাসকদের কাছে। এভাবেই যুগ যুগ ধরে এই বিশ্বাস নিয়ে বেঁচে আছেন এই গ্রামের মানুষেরা।