Breaking Bharat (Hira Zishan) : যিনি বিবাহিত হয়েও প্রতি শুক্রবার বিয়ের সাজে কেন সাজেন এই মহিলা? বিয়ে মানে মেয়েদের জীবনে অনেক বড় একটা দিন । মেয়ে মানে সাজগোজ এর প্রতি আলাদা একটা ঝোঁক।
ছোটবেলা থেকে পুতুল নিয়ে খেলাধুলা করতে করতে পুতুলকে সাজাতে গোছাতে তাকে সুন্দর করে তৈরি করতে করতে সাজগোজ ব্যাপারটা কেমন যেন একটা অভ্যাসে দাঁড়িয়ে যায়। তবে এটা অস্বীকার করলে চলবে না যে এটা একটা মেয়েদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বটে।
কিন্তু একটু ভেবে দেখুন তো সাজগোজ করা আর বিয়ের সাজে সাজা দুটোই কি এক? উত্তরটা দিতে এক মুহুর্ত সময় নষ্ট করবেন না জানি। কারণ বিয়ে মানে স্পেশাল একটা ব্যাপার। কিন্তু আজকে এমন একজনের কথা বলতে চলেছি যার কাছে প্রতি সপ্তাহেই একবার করে বিয়ের কনে হয়ে ওঠার সাজ সেজে নেওয়া।
প্রতি শুক্রবার ‘বিয়ের কনে’ সাজেন এই নারী!
আজ এমন এক মহিলার কথা বলতে চলেছি আপনাদের যিনি বিবাহিত হয়েও প্রতি শুক্রবার বিয়ের সাজে নিজেকে সাজান।
আজকের যুগে সোশ্যাল মিডিয়া বড়ই একটিভ একজন মানুষকে কোথা থেকে কোথায় পৌঁছে দিতে পারে সেটা বলে বোঝানো যাবে না। এখনকার দিনে কোনও জিনিস ব্যক্তিগত রাখতে চাইলেই সেটা যে গোপন থাকবে এটা বলা মুশকিল। সেই সোশ্যাল মিডিয়াতেই ভাইরাল এক মহিলা তার অদ্ভুত কাজের জন্য।
৪২ বছরের ওই মহিলার নাম হলো হিরা জিশান (Hira Zishan)। তিনি লাহোরের বাসিন্দা। তাকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল আলোচনা হওয়ার কারণ একটাই, তার ১৬ বছর ধরে প্রতি শুক্রবার কনের সাজে সেজে ওঠার কাহিনী করেন (Every Friday is the story of the bride getting dressed up)। অবাক হলেন তো?
১৬ রকম গয়নায় সেজে ‘হিরা জিশান‘ বিয়ের কনে:
আসলে শুধু ১৬ বছর বললেও কম বলা হবে প্রতি শুক্রবার ১৬ রকম গয়নায় সেজে তিনি বিয়ের কনে হয়ে ওঠেন। কিছুটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও এই প্রশ্নটাই উঠে আসে যে তার মানসিক অবস্থা কি রকম অর্থাৎ তিনি মানসিকভাবে সুস্থ কিনা? তাহলে চলুন তার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে একটি স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাক (Hira Zishan dresses the bride every Friday)।
জীবন মানে ঘাত প্রতিঘাত কখনো উপরে ওঠা আবার কখনো অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়া। এই সব কিছু নিয়ে জীবন তার মত করে চলতে থাকে। তবে প্রতিটা মানুষের জীবনেই এমন একটা সময় আসে যখন তাকে চরম অবসাদের মধ্যে পড়তে হয়।
সেই ‘হিরা জিশান’ নিজেও ব্যতিক্রমী নন:
আজকের প্রতিবেদন যেই মহিলাকে নিয়ে সেই হিরা জিশান নিজেও ব্যতিক্রমী নন। কিন্তু তার জীবনে এমন কি ঘটেছে যার জন্য প্রতি শুক্রবার তাকে কনের সাজে সাজতে হয়? এই প্রসঙ্গে উত্তর দিয়েছেন হিরা নিজেই। এক সংবাদ মাধ্যমকে দেবার সাক্ষাৎকারে তিনি তার ব্যক্তিগত জীবনের কিছু কাহিনী এবং তার বিয়ের ইতিহাস ব্যক্ত করেছেন।
আরো পড়ুন – Motor bike : মধ্যবিত্ত ছেলের বাইক কেনার স্বপ্ন! যার টাকা নেই তার কি স্বপ্ন দেখা অপরাধ?
তিনি জানান একটা সময় আসে যখন তার মায়ের শরীর খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং মাকে তিনি হাসপাতালে ভর্তি করেন। ক্রমশ অবস্থার অবনতি হচ্ছিল, ডাক্তাররা আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তার মাও বোধহয় বুঝতে পেরেছিলেন নিজের আসন্ন পরিণতির কথা।
মা চেয়েছিলেন মেয়েকে কনের সাজে দেখতে:
মৃত্যুর আগে শেষ ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন মেয়ের বিয়ে দেখে যাওয়ার। জন্মদাত্রি মা একবার চেয়েছিলেন মেয়েকে কনের সাজে দেখতে। হাসপাতালে থাকার সময়ই হিরার মাকে সেই সময়ে এক ব্যক্তি রক্ত দিয়েছিলেন। মায়ের শেষ ইচ্ছে পূরণ করতে সহৃদয় ব্যক্তির সঙ্গে হিরার বিয়ে ঠিক হয়।
আরো পড়ুন – Edward Nino : ১০ বছরে ১.৮ সেন্টিমিটার বেড়েছে এই মানুষটির! কে সে?
হাসপাতালেই বিয়ে হয় বিয়ের পরের দিন রিকশায় করে শ্বশুর বাড়ি যান হিরা। এত কম সময়ের মধ্যে এত কিছু ঘটে যায় তার জীবনে যে কোনটা ঠিক আর কোনটা ভুল তিনি বুঝে উঠতে পারছিলেন না। বিয়ের কনে বিয়ের সাজে সেজে উঠতে পারেন নি। কারণ তখন সেরকম মানসিকতা ছিল না। এর মাঝেই তার মা মারা যান । ভেঙে পড়েন হিরা।
আরো পড়ুন – এই পৃথিবীতে বাঁচতে গেলে টাকা লাগে, বড়লোক গরিব লোকের পার্থক্য কি শুধু এখানেই?
এখানেই শেষ নয় নিজের সন্তানও তার জীবনে স্থায়ী হয়নি । আগে মায়ের মৃত্যু তারপর সন্তানের মৃত্যু। অবসাদে ডুবে যান হিরা। কিন্তু বুঝেছিলেন তাকে এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নিজেকে খুশি করতে নিজেকে সুন্দর রাখতে এক অভিনব সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন।
আরো পড়ুন – মিষ্টি খেতে বড্ড ভালোবাসে! কিন্তু খাবার আগে মিষ্টি খাবেন না খাবার পরে?
প্রতি শুক্রবার কুনের সাজে নিজেকে আয়নার সামনে দেখেন আর মন ভালো হয়ে যায় তার নিমেষেই। তার স্বামী কর্মসূত্র লন্ডনে থাকলেও সন্তানদের নিয়ে পাকিস্তানেই আছেন হিরা। এখন আর অবশ্যই সাথে নেই এখন হাসি খুশি মন, সকলের সঙ্গে মিলেমিশে দিব্যি আছে।
সত্যি তো জীবন কত সুন্দর, তাকে একবার দুচোখ ভরে দেখার সুযোগ কেনই বা হাতছাড়া করবেন? সেজে উঠুন নিজের সাজে ভালো থাকুন ভালো রাখুন মন কে।