Breaking Bharat: সেই ঋতুপর্ণকে “না” (No) বলেছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা! চরম আক্ষেপ করলেন অভিনেত্রী, কিন্তু কেন? আর অভিনেত্রীর ছেড়ে দেওয়া সেই সিনেমাই সুপার-ডুপার হিটের রেকর্ড করেছে, পেয়েছে পুরস্কার। এরপর যা করলেন অভিনেত্রী তা ভাবতেও পারবেন না।
অভিনয় জগৎটা বেশ মজাদার । কখন কি হয় আগে থেকে ধারণা করে রাখা মুশকিল। প্রতিদিনই নতুন নতুন চমক যেন এই ইন্ডাস্ট্রির চারপাশকে ঘিরে রেখেছে। গ্রাম,শহর, মফস্বল, মেগাসিটি থেকে কত মানুষ প্রতিদিন সিনেমায় অভিনয় করার স্বপ্ন দেখেন।
আর অভিনেতা বা অভিনেত্রী হওয়ার স্বপ্নকে সফল করতে বিভিন্ন পরিচালকের বা প্রযোজকের দ্বারস্থ হন তারা। পরিশ্রম করতে কি করতে হয় স্ট্রাগল ছাড়া আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্রের মত সিনেমা জগতেও সেরা হয়ে জ্বলজ্বল করা যায় না। এর মধ্যে থেকেই কিছু অভিনেতা অভিনেত্রীর কপাল খুব ভালো হয়।
সেই ঋতুপর্ণকে “না” বলেছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা:
অনেক কম পরিশ্রমই অনেক বেশি সুযোগ তারা পেয়ে যান। অনেকে আবার বিপরীত হাজার পরিশ্রম করেও একটা সুযোগও মেলেনা। চেষ্টা করে যেতে হবে হাল ছাড়লে চলবে না একথা বিশ্বাস করতেন বিশ্বমানের পরিচালকরা। যারা আজ আমাদের মধ্যে নেই, কিন্তু রেখে গেছেন তাদের সৃষ্টিকে।
বাংলার তেমন এক পরিচালক হলেন ঋতুপর্ণা ঘোষ। সত্যজিৎ রায় কে আদর্শ বলে আজীবন মেনে চলেছেন এই মানুষটি। তার সিনেমায় অভিনয় করা ভাগ্যের ব্যাপার মনে করেন বলিউডের মেগাস্টার অমিতাভ বচ্চন। সেই ঋতুপর্ণকে “না” বলেছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা (Actress Rituparna said “No” to Rituparna)।
আর অভিনেত্রীর ছেড়ে দেওয়া সেই সিনেমাই সুপার-ডুপার হিটের রেকর্ড করেছে, পেয়েছে পুরস্কার। এরপর যা করলেন অভিনেত্রী তা ভাবতেও পারবেন না।
বাংলা সিনেমার অন্যতম সফল পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ:
বাংলা সিনেমার অন্যতম সফল পরিচালক ঋতুপর্ণ ঘোষ (Director Rituparna Ghosh)। একসঙ্গে একাধিক গুণের অধিকারী ছিলেন এই মানুষটি। জীবনের দর্শনকে অন্যভাবে দর্শকের সামনে তুলে ধরতে পারতেন সকলের প্রিয় ঋতু দা। তার মত করে নারী চরিত্রের কথা বা নারী মনের কাহিনী দর্শকের সামনে আর কোনও পরিচালক তুলে ধরতে পারেননি বলে সিনেমার বিশ্লেষকরা মনে করেন।
ঋতুপর্ণ- ঋতুপর্ণা মিলে বাঙালিকে উৎসব:
সেই ঋতুপর্ণ ঘোষ খুব পছন্দ করতেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত কে। দুজনের নামের মধ্যে কত মিল। ঋতুপর্ণ- ঋতুপর্ণা মিলে বাঙালিকে উৎসব- এর মতো ছবি উপহার দিয়েছেন। কিন্তু মাঝে কাটলো ছন্দ। কারনটা অবশ্য ঋতুপর্ণার ব্যক্তিগত।
পরিচালক তখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চোখের বালি নিয়ে সিনেমা তৈরির কথা ভাবছেন। সাহিত্য ধর্মের ছবি কিন্তু পরিচালক রীতি পণ্যের স্পেশাল টাচ থাকবে তার মধ্যে। যারা চোখের বালি পড়েছেন তারা সকলেই জানেন এই ছবিতে বিনোদিনের ভূমিকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
বিনোদিনী চরিত্রের জন্য ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত?
বিনোদিনীর আখ্যানকে সামনে রেখেই যেন গল্পের প্রতিটি প্রেক্ষিতে কে রচনা করেছিলেন স্বয়ং বিশ্বকবি। এই চরিত্রের জন্য ঐশ্বর্য রাই বচ্চন কে একাধিক পুরস্কার এবং প্রশংসা পেতে দেখেছে বাংলা বাঙালি এমনকি মুম্বাইয়ের দর্শকও। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না যে ঋতুপর্ণ ঘোষ বিনোদিনী চরিত্রের জন্য আগে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তের কথাই ভেবেছিলেন।
আরো পড়ুন – tears in bottles : মানুষ মারা গেলে চোখের জল ফেলতে দেখা যায়, কিন্তু সেই জলকে কি বোতলে রাখা যায়?
সেই মতো করে পরিচালক চরিত্রের প্রতিটি আঙ্গিক সাজাতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু এই অফার পেয়ে উচ্ছসিত হয়েছিলেন ঋতুপর্ণা ঠিকই তবে একটি বিশেষ কারণের জন্য তিনি পরিচালককে না বলতে বাধ্য হন। যারা বাংলা সিনেমার দর্শক তারা নিশ্চয়ই প্রসেনজিৎ ঋতুপর্ণা জুটির কথা জানেন (Prasenjit Rituparna duo)।
প্রসেনজিৎ ঋতুপর্ণার অনস্ক্রিন জুটির বিচ্ছেদ:
বাংলা সিনেমার নানা বিতর্কের অধ্যায়ের মধ্যে প্রসেনজিৎ ঋতুপর্ণার অনস্ক্রিন জুটির বিচ্ছেদও কারো অজানা নয়। আর ঠিক এই কারণ কি মাথায় রেখে চোখের বালি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা।
পরিচালকের কাছে তিনি যখন জানতে পেরেছিলেন যে এই ছবিতে তার বিপরীতে অভিনয় করার কথা প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়ের, সঙ্গে সঙ্গে মুখের উপর না বলে দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণা। ঋতুপর্ণ ঘোষ অনেক চেষ্টা করেছিলেন গোটা বিষয়টি তাকে বুঝিয়ে পেশাদারিত্বের জায়গা থেকে এই সিনেমায় অংশীদার করার জন্য। কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি।
আরো পড়ুন – Bodily Harm : বাস্তবে সম্ভব না হলেও স্বপ্নের উদ্যম যৌনতায় বাস্তবের কি পরিণাম হয় জানেন?
নিজের ইগো থেকে এতটুকু সরেন নিয়ে ঋতুপর্ণা। পরে তিনি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এই নিয়ে আফসোস করেছিলেন। তিনি অনেক সাক্ষাৎ করে বলেছেন চোখের বালি সিনেমায় অভিনয় না করার সিদ্ধান্ত তার জীবনের অন্যতম বড় ভুল।
ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত চোখের বালি:
ছবির সাফল্য বুঝিয়ে দিয়েছিল বাঙালি দর্শকের এবং সিনেমার সমালোচকদেরও কতটা মুগ্ধ করেছিল ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত চোখের বালি। ঐশ্বর্য রাই বচ্চনের অভিনয় প্রশংসা পেয়েছিল পাশাপাশি প্রসেনজিৎকে নিয়েও কম চর্চা হয়নি।
আরো পড়ুন – Nail infection : নেল ইনফেকশনের সমস্যা ? নখের ডগাতেই হয় ছত্রাক ইনফেকশন।তাহলে উপায়?
ঋতুপর্ণ সেনগুপ্ত প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কারণে এক স্ক্রিন শেয়ার করবেন না বলে এই ছবি থেকে সরে গিয়েছিলেন। অথচ বাঙালি দর্শক আজও মনে মনে প্রসেনজিৎ ঋতুপর্ণা জুটিকে এক অন্য আসনে বসিয়ে রেখেছে। সম্পর্কের বরফ এখন হয়তো অনেকটাই গলেছে, কিন্তু ওই সময়টা চলে গেছে , আর চলে গেছেন ঋতুপর্ণ ঘোষ।
ঋতুপর্ণ কে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করতেন ঋতুপর্ণা:
শোনা যায় পরবর্তীকালে দোষারো ছবির জন্য ঋতুপর্ণ, অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে অনুরোধ করলেও তিনি সে কথা রাখেননি। তারপরে অবশ্য ঋতুপর্ণ ঘোষের কোনো ছবিতে আর ঋতুপর্ণা সেনগুপ্তকে দেখা যায়নি। তবে মনে মনে ঋতুপর্ণ কে যথেষ্ট শ্রদ্ধা করতেন ঋতুপর্ণা।
আরো পড়ুন – শাশুড়ি-বৌমার সম্পর্ক মানেই আদায় কাঁচ কলায়? স্টিরিও টাইপ ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসুন
প্রিয় পরিচালকের আকস্মিক মৃত্যু সংবাদ পাওয়ার পর সব ছেড়ে ছুটে গিয়েছিলেন শেষ দেখা দেখতে। কিন্তু আজও ভুলতে পারেননি তার ঐতিহাসিক ভুলের কথা।