lehe ledu wildlife zoo : এখানে খাঁচা বন্দি মানুষকে দেখতে যায় প্রাণীরা! অথচ ঘুরে বেড়াচ্ছে হিংস্র বাঘ সিংহ! কি? অবাক হলেও এটাই সত্যি । খাচা বন্দী প্রাণীদের দেখতে মানুষ না বরং খাঁচা বন্দি মানুষকে দেখতে যদি যায় প্রাণীরা ? অবাক হবেন না এমন ঘটনা কিন্তু ইতিমধ্যেই সত্যি হচ্ছে বটে!
এখানে পশুপাখি নয় বরং মানুষ থাকে খাঁচা বন্দি:
খাঁচার ভিতর অচিন পাখির পরিবর্তে যদি মানুষকে রাখা যায়! উদ্ভট ভাবনাচিন্তা বলে ভাবছেন যারা তাদের বলি এটা আসলে বাস্তবের কথা । এই পৃথিবী জুড়ে জীব এবং জন্তুর সহবাস। একটা সময় ছিল যখন দুজনেই থাকতো খোলা আকাশের নিচে উন্মুক্ত প্রকৃতির মাঝে।
কিন্তু এখন সময় পাল্টেছে, মানুষ নিজেকে উন্নত জীব হিসেবে প্রমাণ করার সুযোগ কে কাজে লাগিয়েছে। নিজেকে শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করতে পারার জন্য মানুষ আজ সবার আগে এগিয়ে গেছে। আজ জলে স্থলে কিংবা আকাশে মানুষের সঙ্গে পাল্লা দেবার ক্ষমতা পৃথিবীর অন্য কোন প্রাণীর নেই।
খাঁচা বন্দি মানুষকে দেখতে যদি প্রাণীরা যায়?
আদিম যুগে বন্য পশুর সঙ্গে লড়াই করে বাঁচতে হয়েছে মানুষকে। ক্ষমতা হাতে পেয়ে সেই পশুকেই সবার আগে খাঁচা বন্দি করেছে মানুষ (Inside Lehe Ledu Wildlife Zoo)। কিন্তু এবার যদি সবটা উল্টে পাল্টে যায় তাহলে কেমন হবে? মানে এতদিন খাচা বন্দী প্রাণীদের দেখতে মানুষ যেত এবার খাঁচা বন্দি মানুষকে দেখতে যদি প্রাণীরা যায়? অবাক হবেন না এমন ঘটনা কিন্তু ইতিমধ্যেই সত্যি হচ্ছে বটে!
পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে প্রতি মুহূর্তে অনেক ঘটনা ঘটে, সবটা আমাদের জানা সম্ভব হয় না কাজের বা ব্যস্ততার তাগিদে। কখনো কখনো কিছু নিউজ ভাইরাল হয় আর তা নিয়ে জলে বেশ কয়েক দিনের চর্চা। আজ আপনাদের এমন একটা খবর দেবো যেটা বেশ অন্যরকম।
জীবজন্তুরা অবাধে চলাফেরা করলেও খাঁচা বন্দি মানুষ!
আচ্ছা চিড়িয়াখানা বললে আপনার মাথায় সবার আগে কি আসে? টিকিট কেটে কিছু প্রাণীদের খাঁচা বন্দি অবস্থায় দেখা তাইতো? সেই প্রাণীর তালিকায় মানুষের নাম থাকতে পারে ভেবেছেন কখনো? পৃথিবীতে এমন চিড়িয়াখানা আছে যেখানে জীবজন্তুরা অবাধে চলাফেরা করলেও খাঁচা বন্দি মানুষ!
এই ঘটনা অবশ্য ভারতবর্ষের নয়। এর জন্য আপনাকে চিনে যেতে হবে। চিনের লেহে লেদু ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি এমনই একটি চিড়িয়াখানা যেখানে বন্য প্রাণীরা অবাধে ঘোরাফেরা করতে পারে আর তাদেরকে দেখার জন্য খাঁচা বন্দি হতে হবে আপনাকে আমাকে। বিষয়টা বেশ অদ্ভুত তাই না?
খাঁচাবন্দি ‘বিপজ্জনক মানুষ’ দেখতে আসছে বাঘ-সিংহ:
২০১৫ সালে চালু হয় লেহে লেদু ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি নামের এই চিড়িয়াখানা (This zoo named Leh Ledu Wild Life Sanctuary)। এখানে মানুষ প্রাণীদের কাছ থেকে দেখার আলাদা সুযোগ পায়। অন্যান্য চিড়িয়াখানাতেও যেমনটা হয়। কিন্তু এখানকার বিশেষত্ব হলো মানুষ এবং প্রাণীর একে অপরকে দেখার পদ্ধতিটা আলাদা।
আরো পড়ুন – Pannalal Bhattacharya : মায়ের সঙ্গীত সাধক পান্নালাল ভট্টাচার্য কেন পালালেন জীবন থেকে?
প্রাণী থাকবে বাইরে পর্যটকরা থাকবে খাঁচার ভিতর। আপনি অবশ্য দারুণ উপভোগ করতে পারবেন খোলামেলা অবস্থায় নিজের পূর্ণরূপে থাকা বিভিন্ন প্রাণীদের কাজকর্ম। যেভাবে অন্যান্য চিড়িয়াখানায় নিজের হাত বাড়িয়ে জিরাফ বা হাতিকে খাওয়ার ব্যবস্থা হয় এক্ষেত্রেও তাই হয় তবে মানুষের খাঁচার কাছে সেই প্রাণীটি নিয়ে যাওয়া হয়। খাবারের লোভ সামলাতে পারেনা পশুরা।
ঘুরে বেড়াচ্ছে হিংস্র বাঘ সিংহ:
কখনো খাঁচার উপরে উঠে পড়ে কিন্তু আপনি বা অন্যান্য পর্যটকরা নিরাপদে থাকবেন খাঁচায়, আশ্বস্ত করছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। ব্যাপারটা পুরো থ্রিলার সিনেমার মতো থ্রিলিং। ভাবুন একটা খাঁচার মধ্যে আপনি এবং আপনার বন্ধুবান্ধব আছেন ঘুরে বেড়াচ্ছে হিংস্র বাঘ সিংহ (Roaming ferocious tiger lion), খাঁচার মাথার উপর উঠে পড়ছে হনুমান! আত্মারাম সত্যিই খাঁচা ছাড়া হওয়ার জোগাড় হয় বটে।
আরো পড়ুন – Shiva Lingas : বিস্ময়ের আরেক নাম সহস্র শিবলিঙ্গ! মহাভারত আর রামায়ণের যোগসূত্র এখানেই জানেন ?
ব্যাপারটা যথেষ্ট ঝুঁকি পূর্ন তা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। লেহে লেদু ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি (lehe ledu wildlife zoo wikipedia) কর্তৃপক্ষর বলছেন যে, তাঁরা তাঁদের পর্যটকদের একটি ভিন্ন রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা দিতে চান। ঠিক সেই কারণেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে নিরাপত্তা কেই সবার আগে গুরুত্ব দেয়া হয়।
লেহে লেদু ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারি :
খাঁচা এবং প্রাণী ২৪ ঘণ্টা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাধীন। যে কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে সাহায্য সেখানে পৌঁছে যেতে পারে। চিনে বেড়াতে গেলে এক বার এই লেহে লেদু ওয়াইল্ড লাইফ স্যাংচুয়ারিতে বেড়াতে যেতে চান সকলেই কারণ এটাই হল লাইফ টাইম এক্সপেরিয়েন্স।
আরো পড়ুন – IIT : আইআইটি মানেই সেরার সেরা তালিকা, মেধাবীদের লিস্ট দেখলে চোখ কপালে উঠবে আপনারও
এমন একটা অভিজ্ঞতা নিশ্চয়ই কেউ মিস করতে চাইবেন না? তবে একটা কথা বলা দরকার, কেউ যদি এই স্থানে যেতে চান তাহলে ভালো করে খোঁজ খবর নিয়ে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করে তবেই যাবেন । কারণ কোন বিপদ কখনোই কাঙ্খিত নয়।