APJ Abdul Kalam : কেমন ছিল ‘ভারতের মিসাইল ম্যান এপিজে আবদুল কালামে’র জীবনের শেষ মুহূর্ত? চলে গিয়েও রয়ে গেছেন অনুপ্রেরণা হয়ে । কিছু মানুষ মৃত্যুর পরেও থেকে যান আমাদের জীবন জুড়ে। তাঁদের কাজ আর তৈরি করে যাওয়া সৃষ্টি আজও অমলিন হয়ে রয়ে গেছে ঠিক আগের মতই (Last moments of APJ Abdul Kalam life)।
আজ তেমন এক মানুষের কথা বলব আমরা যার নাম বললেই মনে হয় শিক্ষার বিশাল এক ক্ষেত্র। নাম, এরোস্পেস বিজ্ঞানী ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আবুল পাকির জইনুল আবেদিন আবদুল কালাম। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাজের মধ্যেই ছিলেন।
এমনকি মঞ্চে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। শেষ মুহূর্তের কিছু স্মৃতি আজ তুলে ধরলাম এই প্রতিবেদনে। সৃজনপাল সিং নামের সেই এক ব্যক্তি কালাম যে মঞ্চে বক্তব্য রাখেন শেষ বারের মতো তাঁর মঞ্চ বাঁধার দায়িত্বে ছিলেন।
মৃত্যুর আগে শিক্ষকের ভূমিকাতে এপিজে আবদুল কালাম?
মিস্যাইল ম্যান তাঁর সঙ্গে কথা বলেছিলেন, জিজ্ঞেস করেছিলেন কেমন আছেন তিনি। সারা জীবন যেন নিজেকে শিক্ষকের ভুমিকায় দেখা ছাড়া আর কোনও দিকে লক্ষ্য দেন নি কালাম। তাই বোধহয় মৃত্যুর আগেও সেই শিক্ষকের ভূমিকাতেই ছিলেন তিনি।
এপিজে আবদুল কালামের (A. P. J. Abdul Kalam) মৃত্যুর দিন তাঁর সবসময়ের সঙ্গী ছিলেন সৃজনপাল সিং। শেষ দিনে তাঁর সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টা কথা হয় প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির। কালাম বলতেন যদি নতুন প্রজন্মের সঙ্গে সময় কাটানো যায়, তাহলে তাদের ভাবনাচিন্তা থেকেও অনেক নতুন কিছু সেখা সম্ভব হয় যা ভবিষ্যতে কাজ দেয়।
জীবনের শেষ দিনেও বলে গেছেন এইকথা গুলো :
সৃজনপাল স্মৃতি চারণায় জানিয়েছেন দিল্লি থেকে শিলং এয়ারপোর্ট এবং শিলং এয়ারপোর্ট থেকে আইআইএম পৌঁছনোর জন্য সেদিন সময় লেগেছিল প্রায় পাঁচ ঘণ্টা্র মতো। সেই সময়ে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সৃজনের সঙ্গে আলোচনা করেন বিজ্ঞানী কালাম।
তিনি বলেছিলেন যেভাবে পৃথিবী জুড়ে বাড়ছে দূষণ তাতে খুব তাড়াতাড়ি এক ভয়ঙ্কর বিপর্যয় নেমে আসবে যা কিছুতেই ঠেকানো যাবে না। এরজন্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সতর্ক থাকা দরকার বলে মনে করতেন তিনি। বিজ্ঞানচর্চা এবং রাজনীতি এক সূত্রে না বাঁধা পড়ে, এই দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার কথা জীবনের শেষ দিনেও বলে গেছেন ।
বিজ্ঞান আর রাজনীতি সমান ভাবে প্রয়োজন: এপিজে আবদুল কালাম:
তিনি বিশ্বাস করতেন দেশকে চালাতে গেলে বিজ্ঞান আর রাজনীতি এই দুই এর প্রয়োজন সমান ভাবে। কিন্তু যদি সংসদীয় রাজনীতি বিজ্ঞানের মধ্যে হস্তক্ষেপ করে তাহলে ভারত বিজ্ঞানচর্চায় কখনওই সেরা আসন দখল করতে পারবে। তাঁর মানবিক রূপ চোখে পড়ার মতো। শেষ দিনেও তাঁর ব্যাতিক্রম হয় নি।
আরো পড়ুন – Lion : হিংস্র প্রাণী ‘পশুরাজ সিংহ’কে সংরক্ষণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে? কি?
অত বড় মাপের মানুষ অথচ জীবনের শেষ দিনেও নিরাপত্তারক্ষীদের কথা ভেবেছিলেন। আসলে শিলং এয়ারপোর্ট থেকে আইআইএম যাওয়ার রাস্তায় কালাম সাহেবের জন্য তৈরি করা হয়েছিল একটি কনভয়। এই কনভয়ের তিন নম্বর গাড়িতে বসেছিলেন কালাম সাহেব।
আরো পড়ুন – Pizza Man : পাঞ্জাবের পিৎজা ম্যানকে চেনেন কি? তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে পিৎজা আর বার্গারের নাম!
তাঁর সামনে ছিল দু’টি ওপেন জিপ, যেখানে তিনজন বন্দুকধারী জওয়ান ছিলেন। এক সেনা জওয়ান বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে থাকায় কালাম প্রশ্ন করেন “ও দাঁড়িয়ে কেন আছে? ওকে বলো বসে পড়তে। এটা তো অনেকটা শাস্তি দেওয়ার মতো।” বক্তব্যের মাঝেই একটা ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাক যেন দীর্ঘ নীরবতা ডেকে আনে। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন সর্বদা মাথা উঁচু করে থাকা মানুষটি। শেষ হয় এক অধ্যায়।
আরো পড়ুন – Lord Sri Krishna : শ্রী কৃষ্ণের প্রেমলীলায় আজও মজে রাজ্য থেকে দেশ, কেন?
বিজ্ঞানীকে বাঁচাতে পারে নি বিজ্ঞান। আসলে তখন মহাকাশের অন্য গবেষণায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন বোধহয় বিজ্ঞানী, তাই পৃথিবীকে চির বিদায়! তবে রয়ে গেছেন হৃদয় জুড়ে।