Breaking Bharat: হিংস্র প্রাণী ‘পশুরাজ সিংহ’কে (Lion) সংরক্ষণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে? কি?? নিজেদের ভালবাসি প্রতি মুহূর্তে, কিন্তু পশুদের ভালবাসি কতটা? বাড়ির পোষ্য নিয়ে ব্যস্ত, জানেন কি পশুরাজ কেমন আছেন?
জীব এবং জড় পদার্থ নিয়ে এই প্রকৃতির বিস্তার। সবের মধ্যেই সামঞ্জস্য বজায় রাখলে তবেই প্রজন্ম সভ্যতা এগিয়ে চলে। কোন কিছুরই বেশি বা কম হওয়ার উপায় নেই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে যত সময় এগোচ্ছে ততই সংরক্ষণ শব্দটা আমাদের জীবনে পাকাপাকি জায়গা করে নিচ্ছে।
পশুরাজ সিংহকেও সংরক্ষণ করার প্রক্রিয়া:
কোন কিছুকে বা কাউকে সংরক্ষণের প্রয়োজন কখন হয়? খুব স্বাভাবিক উত্তর যখন তা বিলুপ্ত হতে থাকে। জানলে অবাক হবেন পশুরাজ সিংহকেও সংরক্ষণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। ভাবতেই পারেন এত হিংস্র এক প্রাণীরও কি বিরক্ত হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকতে পারে? বিস্তারিত বলি এই প্রতিবেদনে।
কথায় বলে জোর যার মুলুক তার। অর্থাৎ সবল চিরকালই দুর্বলের থেকে এগিয়ে থাকে। কিন্তু এর পাশাপাশি বুঝতে হবে বুদ্ধির জোর পেশী শক্তির থেকে বেশি। আর ঠিক সেই কারণেই মানুষ নিজেকে পৃথিবীর উন্নত শ্রেষ্ঠ জীব হিসেবে প্রমাণ করতে পেরেছে। নিজের জন্য লড়াই সব প্রাণীকেই করতে হয়।
আসলে সিংহ মানেই হিংস্র ব্যাপার আর তীব্র ক্ষীপ্রতা?
হয়তোবা উদ্ভিতরাও এই তালিকা থেকে বাদ যায় না। তবু যত সময় এগোচ্ছে ততই সংরক্ষণ শব্দটা মাথা চাড়া দিচ্ছে । ইদানিংকালে আন্তর্জাতিক সিংহ দিবস বলে পশুরাজদের সংরক্ষণের কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আসলে সিংহ মানেই সেই যে একটা হিংস্র ব্যাপার রাশি রাশি কেশর আর তীব্র ক্ষীপ্রতা।
ধীরে ধীরে এই প্রাণী বিলীন হতে বসেছে। আসলে চারপাশে মানুষ এত বেশি করে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করেছে যে প্রাণীরা নিজেদের স্থান করে উঠতে পারছে না। কিন্তু অভিযোজন করে বাস্তুতন্ত্রের এগিয়ে যাওয়াটা দরকার। যখন সেটা সম্ভব হয় না তখনই বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন হয়।
সিংহ সর্বদাই গভীর জঙ্গলে বসবাসকারী প্রাণী:
অর্থাৎ ভুলে গেলে চলবে না যে সংরক্ষণ মানেই সচেতনতা বাড়ানো। একটা সময় ছিল যখন সৌদি আরব থেকে শুরু করে উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে এশিয়াটিক লায়নের দেখা পাওয়া যেত। তবে আজকাল শুধুমাত্র গুজরাটেই দেখা মেলে। সিংহ সর্বদাই গভীর জঙ্গলে বসবাসকারী প্রাণী (Lions have always been deep forest animals)।
উনিশ শতক পর্যন্ত সৌদি আরব, ইরান, মেসোপটেমিয়া, পাকিস্তান-সহ সিন্ধু নদের পূর্বাংশ থেকে বাংলা আবার অন্যদিকে পাঞ্জাব, গুজরাত, রাজস্থান, হরিয়ানা, বিহার, মধ্যপ্রদেশে এইসব জায়গাতেও ছিল সিংহের প্রবল পরাক্রমশালী দাপট। আজ সবটাই অতীত।
স্বাধীন ভারতবর্ষে সিংহ সংরক্ষণে বিশেষভাবে নজর :
ব্রিটিশ পিরিয়ডে কিংবা নবাবের আমলে পশু শিকার ছিল আভিজাত্য। জানা যায় সিপাহী বিদ্রোহের সময় প্রায় ৩০০ সিংহ স্বীকার করেছিলেন ব্রিটিশরা। ক্রমশ সময় যত এগোতে থাকে স্বাধীন ভারতেও নবাব এবং জমিদারদের এই শিকারের লোভ বাড়তে থাকে । পরাধীন ভারতেও এই সিংহ সংরক্ষণের কাজ শুরু করা হয় (Lion conservation work was started)।
আরো পড়ুন – Pizza Man : পাঞ্জাবের পিৎজা ম্যানকে চেনেন কি? তার সঙ্গে জড়িয়ে আছে পিৎজা আর বার্গারের নাম!
বনদপ্তরের পরিসংখ্যান এবং তথ্য বলছে ১৯০৮ থেকে ১৯০৯ সালের মধ্যেই গুজরাটের গির অরণ্য বন দফতরের হাতে চলে আসে। সেই অরণ্যের মধ্যেই সিংহদের বাসযোগ্য একটি আলাদা এলাকা তৈরি করে বন দফতর। ওয়াইল্ডলাইফ ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া বলছে স্বাধীন ভারতবর্ষে সিংহ সংরক্ষণের দিকে বিশেষভাবে নজর দেয়া হয়। গুজরাতের বন দফতর এই নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করে।
আরো পড়ুন – Sadhak Bamakshyapa : সাধক বামাক্ষ্যাপার জীবন দর্শনেই যেন তার আধ্যাত্মিক প্রমাণ মেলে জানেন সেটা?
সময় সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে এই ব্যাপারে গ্রহণ করেছে বন দফতর। বর্তমানে আমাদের দেশে এশিয়াটিক লায়নের সংখ্যা আগের থেকে অনেকটাই বেড়েছে। গত পাঁচ বছরে সিংহের পরিসংখ্যান বলছে প্রতি বছর ২% থেকে ৩% হারে বায়োলজিক্যাল গ্রোথ হয়েছে সিংহের।
আরো পড়ুন – Lord Sri Krishna : শ্রী কৃষ্ণের প্রেমলীলায় আজও মজে রাজ্য থেকে দেশ, কেন?
আসলে সমস্যা হচ্ছে গরমের পার্শ্ববর্তী এলাকার বেশিরভাগটাই মানুষের দখলে চলে গেছে। সেখানে ঘরবাড়ি তৈরি হয়ে যাওয়ায় থাকার সমস্যায় পড়েছে সিংহরা। আজকে তো এত হিংস্র প্রাণী সেক্ষেত্রে মানুষের নিরাপত্তার বিষয়টি লক্ষ্য রাখা দরকার। সঠিক বিচার করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করছে বন দফতর এবং সরকার। আশা করা হচ্ছে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে।