Breaking Bharat: এক ক্লিকে বাড়িতে এসে গেল খাবার (zomato order)? জোম্যাটোর জয়জয়কার হল কী ভাবে? ঝড়-বৃষ্টি প্রাকৃতিক দুর্যোগ হোক বা করোনা মহামারী, ননস্টপ বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দিয়ে মানুষকে ভালো রেখেছে এই ফুড অ্যাপ। জোম্যাটো কিভাবে মানুষের পরিবারে এত বড় একটা জায়গা করে নিল?
আজকের দিনে মানুষের হাতে সময় নেই । এত কাজের ব্যস্ততা যে বিশেষ করে খাবার দাবারের তো সময় নেই , রান্না করা তো দূরের কথা। এই সমস্যার কথা ভেবে হাতের কাছে এসে গেছে অনলাইন অ্যাপ। সবকিছুই বাড়িতে বা প্রয়োজনীয় গন্তব্যে এক নিমেষে চলে আসবে কয়েক মিনিটের মধ্যেই (zomato order near me)।
জোম্যাটোর জয়যাত্রা (zomato order delivery app):
জামা কাপড় প্রয়োজনীয় কাজের জিনিস এসব তো আছেই। তবে সবথেকে জনপ্রিয় হয়েছে ফুড অ্যাপ গুলি । আর এক্ষেত্রে সবার আগে যে নামটা উঠে আসে সেটা হল জোম্যাটো (zomato delivery app)।
দিপিন্দর গোয়াল এবং পঙ্কজ চড্ডা এই নাম দুটো ভালো করে জেনে রাখুন। জোম্যাটোর জয়যাত্রা নিয়ে কথা বলতে গেলে এই নাম গুলোর কথা সবার আগে উল্লেখ করতে হবে। দুজনে দিল্লি আইআইটির প্রাক্তন ছাত্র এবং একই সঙ্গে একই কোম্পানিতে কাজ করতে শুরু করেছিলেন।
অফিসের কাজের মধ্যেই এনারা একদিন লক্ষ্য করেন যখন টিফিন টাইম আসে বিভিন্ন খাবারে দোকানের সামনে লম্বা লাইন পড়ে যায়। অনেকে আবার টিফিন টাইম ওভার হয়ে যাবে ভেবে না খেয়ে ফিরে আসেন। দুজনেই পড়াশোনা করার সময় থেকে নিজেদের ব্যবসা নিয়ে এগোতে চেয়েছিলেন। এই ঘটনা দেখার পর মাথায় এক আইডিয়া খেলে যায় (zomato delivery partner)।
কী করে এই ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে খাবারের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে থাকার সমস্যার সমাধান করা যায় ভাবতে ভাবতে একটি অ্যাপ তৈরি করে ফেলেন। আজকের জোম্যাটো, শুরুতে কিন্তু অন্য নামে পরিচিত ছিল। নাম ছিল ফুডিবাই’ অ্যাপ। জোম্যাটো মিডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড খুব অল্প সময়ের মধ্যেই দিল্লির মানুষের মন জয় করে। এরপর আহমেদাবাদ থেকে চেন্নাই ঘুরে মুম্বই – সর্বোচ্চ জয়জয়কার (zomato order)।
মানুষকে খাবার পৌঁছে দেওয়া তো ভালো কথা। অনেকটা নর নারায়ণ সেবার মতো তবে,আগে থেকে বুক করে রাখতে হচ্ছে, মানে ফ্রিতে পারছেন না । আসলে এটাই তো ব্যবসা। নেভার হ্যাভ অ্যা ব্যাড মিল – এই ট্যাগ লাইন নিয়ে কাজ করে চলেছে এই ফুড অ্যাপটি।
তবে শুধুই কি যে পরিমাণ টাকা দিয়ে খাবার অর্ডার করা হয় সেখান থেকেই লাভের মুখ দেখে এই সংস্থা? উত্তরটা হল না, আসল কাজটা করে বিজ্ঞাপন। এর পাশাপাশি অ্যাপে নথিভুক্ত থাকা রেঁস্তোরাগুলির থেকেও কমিশন পায় জোম্যাটো। কিন্তু সব সংস্থা একই রকম ভাবে সারা জীবন চলতে পারে না ওঠা পড়া লেগেই থাকে। এই কোম্পানির ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
আরো পড়ুন – Gold : সোনার আংটি আবার বাঁকা? তাহলে কি সোনায় বিনিয়োগ করা ভুল?
আমরা বলছি করোনার পূর্ববর্তী সময়ের কথা,সাল ২০১৫। একটা সময় এমন আসে যখন ছাঁটাই এর জালে বিদ্ধ হয় এই অ্যাপ। এই কোম্পানির ব্যবসা শুধু আর ভারতের মধ্যে আটকে নেই ছড়িয়ে পড়েছে বিদেশেও। কিন্তু বিশ্ববাজরের অর্থনৈতিক মন্দা গ্রাস করে কোম্পানিকে,২০১৬ সালে পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে যায় যে আমেরিকা, কানাডা, ব্রাজিল, ইংল্যান্ড, শ্রীলংকা, ইতালিতেই মুখ থুবড়ে পড়ে ব্যবসা।
আরো পড়ুন – Draupadi Murmu : দ্রৌপদী মুর্মু – দেশের প্রথম আদিবাসী মহিলা রাষ্ট্রপতির সম্বন্ধে জানেন?
কিন্তু সংস্থা হার মানেনি। কঠিন পথ পেরিয়ে লড়াইটা চালিয়ে যায় ভালো দিন ফিরিয়ে নিয়ে আসার মনোবল নিয়ে। এর মধ্যেই নতুন বিপদ, সাইবার হানায় প্রায় ১৭ মিলিয়ন অ্যাপ ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য চুরি যায়। ফের বেশ কিছুটা পিছিয়ে পড়া। তবে সেই বিপদও কাটিয়ে ওঠে জোম্যাটো এবং ২০২০ আর্থিক বর্ষে তাদের সংস্থার মোট বিক্রির পরিমাণ প্রায় ২২৫% বৃদ্ধি পায় ।
আরো পড়ুন – Benefits of corn : পপকর্ণ ভালোবাসেন? আর রাস্তার ধারে বিক্রি হওয়া ভুট্টা? কত গুন আছে জানেন?
অনেকেই হয়তো জানেন না যে এই অ্যাপ সংস্থা ‘জোমাল্যান্ড’ নামক ফুড কার্নিভাল চালু করেছে। দেশের মধ্যে শুরু হওয়া এই কার্নিভালের প্রথম বছরেই ১ লক্ষেরও বেশি মানুষের সমাগম হয়েছিল। এইমুহুর্তে ভারতের ১০ টি শহরে প্রতিবছর এই কার্নিভাল করা হয়।
আরো পড়ুন – Home loan : সংসারের প্রয়োজনে, বাড়ির দরকারে ঋণ নেওয়া ছাড়া আর কোন গতি থাকে কি?
শুধু নিজের এগিয়ে যাওয়া নয় বাকিদেরও এগিয়ে যেতে সাহায্য করার মানসিকতা এই অ্যাপকে এত জনপ্রিয় করেছে যার উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অতিমারি পরিস্থিতিতে প্রায় কয়েক হাজার রেঁস্তোরা পথ চলা শুরু করে এই জোম্যাটোর হাত ধরে।
এটাই প্রমাণিত হার মানলে চলবে না লড়াই চালিয়ে যেতে হবে সময় লাগতে পারে কিন্তু সুদিন আসবেই। তাইতো, ভোজন রসিকদের প্রতিদিনের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ আজ জোম্যাটো।