Breaking Bharat: তারাপীঠের তারা মায়ের অপার লীলা (JOY MAA TARA), তার স্মরণে এলেই মনোবাঞ্ছা পূরণ? কী ভাবে? মহাপীঠ তারাপীঠ ভক্তদের কাছে এক আলাদা মহত্বের কারণে আজও অটল। এই স্থানে না গিয়ে হিন্দু ভক্তরা থাকতে পারেন না। আবার মা স্বয়ং না ডাকলে কেউ সেখানে পৌঁছতে পারে না।
যুগ যুগ ধরে তারা মায়ের ভক্ত সংখ্যা বেড়েই চলেছে। তারা মায়ের এমনই মাহাত্ম্য। যার জেরে যে কোনও মনস্কামনা পূরণ হোক বা বাধা বিঘ্ন কাটানো সবাই যেতে চায় তারাপীঠ। তারাপীঠের তারা মায়ের প্রতিষ্ঠানের পেছনে কিছু ধর্মীয় বিশ্বাস প্রচলিত (Tarapith Temple JOY MAA TARA)। সতী পীঠ এর মধ্যে অন্যতম পীঠ হিসেবে গণ্য করা হয় তারাপীঠ কে।
তারা মায়ের ইতিহাস (Tarapith Temple JOY MAA TARA) :
সতীর বিভিন্ন অঙ্গ যখন পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে তখন পৃথিবীর বুকে তাই পরবর্তীতে এক একটি প্রস্তর খন্ডে পরিণত হয়। সেই পাথর বা শিলা গুলিকে বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তারপর তা হয়ে উঠছে একেকটি পবিত্র তীর্থক্ষেত্র।
সেই অনুযায়ী হয়েছে সেই তীর্থক্ষেত্রের নামকরণ। প্রতিটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে পরম পবিত্রের জায়গা সতীর ৫১ পীঠ। এই ধর্মক্ষেত্র দর্শন করতে পারলে জীবনের সব পাপ মুছে যায় বলে ধারণা করা হয়।
কথিত আছে বীরভূম জেলার রামপুরহাটে পড়েছিল দেবী সতীর তৃতীয় নয়ন । ঋষি বশিষ্ঠ প্রথম মা তারার এই রূপটি দেখতে পান বলে মনে করা হয় এবং সতীকে মা তারা রূপে পুজো করা শুরু করেন। এটির একটু ভিন্ন মতও আছে। ধর্মে সমুদ্র মন্থনের কথা বারবার উল্লেখ করা আছে।
প্রাচীন লোকগাথা অনুসারে এই সমুদ্র মন্থনের সময় যে বিষ উঠেছিল, তাই পান করেছিলেন স্বয়ং দেবাদিদেব। এই জন্যই নীলাদ্রি নীলকণ্ঠ। কিন্তু এই বিষ পান করে বিশ্ব সংসারকে বাঁচিয়ে ছিলেন মহাদেব, কিন্তু নিজে বিদ্ধ হয়েছিলেন বিষের জ্বালায়। সেই সময় তারা মা নিজে স্তন্য পান করিয়ে শিবের জ্বালা নিবারণ করেন।
সাধক বামাক্ষ্যাপা এই মন্দিরে পুজো করতেন :
মহাপীঠ তারাপীঠ মানেই ভক্তদের কাছে ভীষণা চতুর্ভূজা, মুণ্ডমালাধারিণী এবং লোলজিহ্বা এক মূর্তি। দেবীর মাথায় রুপোর মুকুট। এলোকেশী তিনি। মাতৃ মূর্তির মাথার উপরে থাকে একটি রূপোর ছাতা। ভক্তরা মা তারার যে বিগ্রহ দর্শন করে তার নীচে গোলাকার বেদীতে দুটি রূপোর পাদপদ্ম রাখা আছে। যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই চাপা পড়ে থাকে ফুলের ভারে।
তারা মা এর মহিমা তো আছেই তবেই না তিনি ভক্তি ভরে ডাকা নিবেদনে সাড়া দেন ভক্তের আবাহনে। যুগযুগ ধরে সাধক সিদ্ধি লাভ করেছে এই ভাবেই। তাই অবশ্যই তারাপীঠ বামাক্ষ্যাপার জন্যও প্রসিদ্ধ (Tarapeeth is also famous for Bamakshyapa)। সাধক বামাক্ষ্যাপা এই মন্দিরে পুজো করতেন এবং মন্দির-সংলগ্ন শ্মশানক্ষেত্র যা ভক্তদের কাছে পবিত্র,সেখানেই কৈলাসপতি বাবা নামে এক তান্ত্রিকের কাছে তন্ত্রসাধনা করতেন।
মানুষ মনষ্কামনা পূরণের জন্য মায়ের দরবারে হাজির হন:
আর কঠোর সাধনার পর মায়ের দর্শন, আর সাধকের সিদ্ধি লাভ। আজও বহু তান্ত্রিক এই স্থানকেই সিদ্ধি লাভের জন্য বেছে নেন। শুধু সতী পীঠ নয়, এ হলো সাধন পীঠ। কখনও খুব মন দিয়ে এই তারাপীঠ দেখলে মন্দিরের দিকে চোখ যাবেই। বেশিরভাগ সময় এই মন্দির সজ্জিত। সাধারণত কালী মা দক্ষিণমুখী হন।
আরো পড়ুন – Bulletproof Cars : তারকাদের জীবন ঘিরে নিরাপত্তাহীনতা! তাই কি বুলেট প্রুফ গাড়ির দরকার?
কিন্তু তারাপীঠে গোটা ব্যাপারটা উল্টো। লাল ইট দিয়ে তৈরি আটচালা মন্দিরটি উত্তরমুখী। এই মন্দিরের প্রবেশপথের মধ্য খিলানের উপর রয়েছে দুর্গার প্রতিকৃতি। মন্দিরের লাল আভা আর সিঁদুর চর্চিত চারপাশ ভক্তদের মন ভরে তোলে। ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যায় মন্দিরেই আছে। রামায়ণের পটচিত্র ।
আরো পড়ুন – চারচাকা মানে সবার পছন্দ Mercedes? গাড়ি কিনতে চান? এসে গেল নতুন মডেল?
মন্দিরের উত্তর দিকের পূর্ব প্রান্তে রয়েছে সীতাহরণ, অকালবোধন, রাম ও রাবণের যুদ্ধের দৃশ্য। আর পশ্চিমে কৃষ্ণ লীলা। মন্দিরের পরতে পরতে রয়েছে নানা স্মৃতি। মন্দির চত্বরে আশেপাশে রয়েছে অনেকগুলো মানত করার জায়গা। যেখানে প্রত্যেকদিন কয়েকশো মানুষ মনষ্কামনা পূরণের জন্য মায়ের দরবারে হাজির হন ।
আরো পড়ুন – Michael Jackson : নিজের সন্তানদের মুখে কেন মুখোশ পড়াতেন মাইকেল জ্যাকসন?
ভক্তি ভরে মাকে ডাকলে মা যে সাড়া দেবেন এ বিশ্বাস যুগ যুগ ধরে অটল। জনশ্রুতি আছে রাতের দিকে মহাশ্মশান ভয়ংকর হয়ে ওঠে এখনো নাকি সেখানে চিতার আগুনের মধ্যে শক্তির আরাধনা হয়। তান্ত্রিকরা তন্ত্র মতে সাধনা করেন। ভক্তিভরে মাকে ডাকলে মা সাড়া দেন সে বিশ্বাস আগে ছিল আজও আছে।