Breaking Bharat: ‘লিভ ইন রিলেশন’ (Live in relationship) সম্পর্কে সামাজিক স্বীকৃতি কতটা দরকার? সম্পর্কে সামাজিক স্বীকৃতি কতটা দরকার ভেবেছেন কখনো? আজকের যুগে দাঁড়িয়ে এই প্রজন্মের কাছে সত্যিই কি বিয়ের মূল্য আছে?
কথায় বলে জন্ম মৃত্যু বিয়ে, তিন বিধাতা নিয়ে। সিঁথির এক ফোঁটা সিদুরে বদলে যায় মেয়ের জীবন, একই সঙ্গে বদলে যায় ছেলেটাও। তার জীবনে এবং পরিবারে আসে নতুন একজন মানুষ। যার দায়িত্ব নিতে হয় যাকে নিজের জীবনের অংশীদার করে নিতে হয়।
লিভ ইন রিলেশনশিপ কী? (What is live-in relationship in?)
অন্যদিকে ভিটেমাটি ছেড়ে, নিজের বেড়ে ওঠার বাসস্থান ছেড়ে, অন্য একটা মানুষের সাথে, অন্য পরিবারে, অন্য ঘরে, জীবন শুরু হয় মেয়েটার। যুগ যুগ ধরে এই ঘটনাই জাঁকজমকপূর্ণভাবে উদযাপিত হয়ে আসছে সমাজে। কিন্তু দুটো মানুষের ভালো থাকার জন্য বিবাহ নামক বন্ধনের খুব দরকার আছে কি?
এই প্রজন্ম এখন শব্দটা নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। তাই বোধহয় নতুন একটা শব্দ আজকাল জায়গা করে নিয়েছে। “লিভ ইন ” (Live in relationship) – একটা সময় ছিল যখন এই নামটা শুনলেই নাক সিঁটকে খারাপ মন্তব্য করতেন চারপাশের লোকজন। কিন্তু সময় বদলেছে, বদলেছে ভাবনা তাই নিজের মতো করেই সমাজে হয়তোবা আপাতত স্থায়ী একটা জায়গা করে নিয়েছে লিভ ইন রিলেশন।
এই প্রতিবেদনে যে মতামত বা দৃষ্টিভঙ্গিকে তুলে ধরা হচ্ছে তার মাধ্যমে কাউকে আঘাত করার কোন পরিকল্পনা নেই। যদি কোনও ঘটনা বা কোনও মানসিকতার সঙ্গে সাদৃশ্য মনে হয়, তা নিতান্তই কাকতালীয়। তার জন্য চ্যানেল কর্তৃপক্ষ কোনোভাবেই দায়ী নয়।
‘লিভ ইন রিলেশন’ নিয়ে কিছু ধারণা (Live in relationship):
আজকের লিভ ইন নিয়ে এই প্রতিবেদন লিখতে গিয়ে সেই চিরাচরিত বস্তাপচা কিছু ধারণার কথা সামনে তুলে আনতে ইচ্ছে হচ্ছে। এই যেমন মেয়ে কোনও পরিবারের জন্ম নেওয়া মানেই সে যেন বিবাহের জন্য বলি প্রদত্ত। সবসময়ই তার চুল নাক ত্বক এসব নিয়ে দর কষাকষি চলতে থাকে।
সব থেকে বড় ধারণা তার গায়ের রং কালো না ফর্সা সেটাই! ভাবতে অবাক লাগে ২০২২ সালে দাঁড়িয়েও এটাই চরম সত্যি। তবে আজকের সমাজ এবং প্রজন্ম বিয়ে শব্দটাতে খুব একটা বিশ্বাস রাখতে পারেনা। বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা বাড়তে থাকা তার যেমন একটা কারণ তেমনি জীবন যাত্রার মান বদলে যাওয়াও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
বিয়ে নামের অথৈ সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে লাভ কি?
যার সঙ্গে আগামী জীবন কাটানোর পরিকল্পনা করছে মন, তার সঙ্গে আগে কিছুটা সময় একসঙ্গে কাটাতে পারলে বোধ হয় চিন্তা ভাবনা পরিষ্কার হয় অনেকটা। না হলে বিয়ে নামের অথৈ সমুদ্রে ঝাঁপ দিয়ে লাভ কি? অনেকেই হয়তো সহমত পোষণ করবেন আবার অনেকেই বলবেন যুগ যুগ ধরে এমনটাই তো হয়ে আসছে।
কিন্তু ভেবে বলুন তো যেটা চলে আসছে সেটাই যে সঠিক তাকে নিশ্চিত করে বলা যায়? জীবন যখন একটাই সেটা সম্পূর্ণভাবে বাঁচার অধিকার তো নিশ্চয়ই আছে। আজকের দিনের চাকরির অনিশ্চয়তা পাশাপাশি ব্যস্ততা দৌড়দৌড়ি, সবমিলিয়ে নিজের মনের মতো মানুষকে আগে থেকে জেনে নিলে পরবর্তীতে ঝুঁকি এড়ানোর সুবিধা হয়।
লিভ ইন সম্পর্ক মানেই যৌনতা?
নাহলে খবরের কাগজে কিংবা টেলিভিশনের পর্দায় আত্মহত্যার খবর হয়ে ব্রেকিং আপডেট হতে হয়। আশা রাখি তেমনটা আপনি চাইবেন না। লিভ ইন সম্পর্ক মানে কিন্তু ঝাড়া হাত-পা বা দায়িত্বজ্ঞানহীনতা নয়। প্রতিটা সম্পর্ক একটা নির্দিষ্ট সম্মান আর শ্রদ্ধা আশা করে। আর সমাজের একটা প্রচলিত ধারণা আছে লিভ ইন সম্পর্ক মানেই যৌনতা।
সেটা কিন্তু পুরোপুরি ঠিক নয়। আসলে নারী-পুরুষ একসঙ্গে থাকলেই ধরে নেওয়া হয় তাদের সম্পর্কটা শারীরিক। সেটা কেউ অস্বীকার করছে না বা এড়িয়ে যাচ্ছে না কিন্তু এর বাইরেও সম্পর্ক গড়া যায় ,তাকে বজায় রাখা যায় এটাও অবিশ্বাস করার মত কিছু নয়। সবকিছুর জন্য প্রয়োজন একটা সুস্থ, শিক্ষিত, সভ্য, বন্ধুত্বপূর্ণ মানসিকতা।
লিভ ইন সম্পর্কে মতামত গুরুত্বপূর্ণ:
লিভ ইন সম্পর্ক মানে দুটো মানুষের একসঙ্গে বাঁচা, একসঙ্গে থাকা খাওয়া তাই সবটাই একসঙ্গেই করতে হয়। বিয়ের পর একে অন্যের পছন্দ-অপছন্দ নিয়ে বিরোধ বাধলে সেক্ষেত্রে কম্প্রোমাইজ করা ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু লিভিং সম্পর্কে থাকলে একই অন্যের ঠিক বা ভুলটা সম্পর্কে পরিচিত হতে হতে , আগামীতে তাই নিয়ে জীবন গড়া যাবে কিনা সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা হয়।
যেকোনো সম্পর্কে একটা শ্রদ্ধা প্রয়োজন সেটা লিভ ইন হোক বা বিবাহিত দাম্পত্য, সেটুকু বজায় রাখুন। জীবনটা সিনেমা নয় আর হাতে হাত ধরে “হামনে ঘরে ছোড়া হ্যায়” ভাবনাকে কখনো প্রশ্রয় দেবেন না। একজন বিচক্ষণ ব্যক্তির মত সিদ্ধান্ত নিন। মনে রাখবেন আপনার সঙ্গে আরও একজন জড়িয়ে আছেন।
লিভ ইন সম্পর্কে আপনারা একে অন্যের পার্টনার:
লিভ ইন সম্পর্কে তার মতামত গুরুত্বপূর্ণ। জোর করে কিছু চাপিয়ে দিয়ে অধিকারবোধ তৈরি করা যায় না। লিভ ইন সম্পর্কে দুটো মানুষের মধ্যে তৃতীয় কোন ব্যক্তিকে জায়গা না দেওয়াই ভালো। আর হ্যাঁ আপনার সঙ্গীকে সব সময় বিচার করা বন্ধ করুন। এতে আপনাদের দু’জনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হতে পারে।
আরো পড়ুন – Bhavesh Bhatia : শারীরিক প্রতিবন্ধকতা কোনও বাধা নয়, প্রমান করলেন ভবেশ ভাটিয়া, কীভাবে?
এক ছাদের তলায় যখন দুজনেই থাকছেন এবং মনে করছেন সামাজিক স্বীকৃতি আপাতত প্রয়োজন নেই । তাহলে বন্ধুত্বটাকে অবশ্যই স্বীকৃতি দিয়ে তার মর্যাদা রক্ষা করুন। অনেকেরই ধারণা যে সম্পর্কের কিছুটা সময় পরে, প্রেমের ম্যাজিক ম্লান হতে শুরু করে।
আরো পড়ুন – Guava Market : জমিতে নয় বাজার ভেসে আছে জলে! এহেন অদ্ভুত বাজারের দেখা মিলল, কোথায় জানেন?
মানুষ তার নিজের জীবনে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়ে যে সঙ্গীর প্রতি তাদের আগ্রহ কমতে শুরু করে। সম্পর্ক থাকলে ঝগড়াঝাঁটি, মতের অমিল হবেই ,কিন্তু ভালো দিকগুলোকে মনে রাখতে হবে। সবথেকে বড় কথা হচ্ছে লিভ ইন সম্পর্কে আপনারা একে অন্যের পার্টনার (About Live In You are each other’s partner)। তাই সবকিছুই ভাগাভাগি করে নিন।
আরো পড়ুন – ইতিহাস সৃষ্টিকারী DDLJ দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে যায়েঙ্গে-র এক মারাত্মক ভুলের জন্য এ কী হল?
একজন আরেকজনের খেয়াল রাখুন। সুসময় হোক বা দুঃসময় , অবশ্যই পাশে দাঁড়ান। নিজেরা লিভ ইন সম্পর্কে থাকতে চান কিনা সেই বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে পদক্ষেপ করুন। এইভাবে একা একা দুটো মানুষের একসঙ্গে থাকা মানেই অবাধ যৌনতা নয়। এমন কিছু করবেন না যাতে নিজেরাই পরবর্তীতে বিপাকে পড়েন। আর সম্পর্কে দূরত্ব ,বিরক্তি তৈরি হয়।
আরো পড়ুন – kochuri : প্রচন্ড খিদে পেয়েছে? গরম গরম কচুরি আপনার জীবন বাঁচাতে পারে সে কথা জানেন?
সব কিছুরই ভালো-মন্দ দুই দিক আছে একটু ঠান্ডা মাথায় বিচার করুন সাদাটা সাদা আর কালোটাকে কালো ভাবেই দেখতে ও বুঝতে শিখে যাবেন।