Breaking Bharat: কেউ অত্যাচার করবে আর সেটা মুখ বুঝে মেনে নেবেন এটা হতে দেবেন না (Domestic violence)! বিয়ের পর শারীরিক ভাবে অত্যাচার করা ধর্ষণের মতো শাস্তিযোগ্য অপরাধ, জানেন?
সমস্যা হলে সমাধান ঠিক খুঁজে পাওয়া যায় কিন্তু সমস্যাকে অবহেলা করে বাঁচার উপায় মেলেনা। একটা সম্পর্কে দুটো মানুষের সম্মতি দরকার এবং দাম্পত্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কখনোই অত্যাচার কাঙ্খিত নয়। খবরের কাগজের পাতায় বারবার করে উঠে আসে গার্হস্থ্য হিংসার কথা।
শুধু কি গায়ে হাত তোলা? শুধু কি যৌন অত্যাচার?
কিভাবে যে ঘরে বাইরে অত্যাচারিত হতে হয় মহিলাদের তা তথ্য পরিসংখ্যান না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন এর কারণ যারা অত্যাচার মুখ বুঝে সহ্য করেন তারা নিজেরাই। প্রতিবাদ করতে হয়। অন্ততপক্ষে ছোবল না মারতে পারলেও ফোঁস করা দরকার।
করোনা কালে একটা পুরো পিরিয়ড গৃহবন্দী ছিলাম আমরা সকলেই। সেই সময় একে অন্যকে চেনার বা জানার অবকাশ হয়েছে। দুজন মানুষ অনেকগুলো বছর পর একে অপরকে সময় দিয়েছে। এটা যে খুব লাভবান হয়েছে এমনটা নয় আবার একেবারে বৃথা গেছে সেটাও বলা যাবে না।
মারামারি রক্তাক্ত করা এটা কোন সভ্য সমাজে হয়?
আসলে সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে গেলে দুজন মানুষের একে অন্যকে চেনা জানা বোঝা দরকার। কিন্তু মারামারি রক্তাক্ত করা এটা কোন সভ্য সমাজে হয় বলুন দেখি? অথচ সামাজিকতাকে বজায় রাখতে গেলে এই সবকিছুকে আড়াল করতে হয় শিখিয়েছে সমাজ। আগেকার দিনে বিয়ের সময় ছেলের বাড়ির লোকেরা মেয়ের বাড়ির কাছ থেকে টাকা-পয়সা যৌতুক কোন হিসেবে নিতো।
এই সবটাই কিন্তু আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু আজও শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বাড়িতেও একটু অন্যভাবেও এই ঘটনা ঘটে চলেছে। কারোর মুখে কোন প্রতিবাদ নেই। সকলেই বলেন এটাই তো নিয়ম সামাজিকতা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। তথাকথিত শিক্ষিত লোকেদের এই ভাবনাকে প্রশ্রয় দেয়ায় একেবারে নিতান্ত ও অশিক্ষিত যারা গরিব যারা তারা কার্যত শারীরিক নির্যাতনের শিকার।
অনেকেই সমর্থ্য মত গুলিয়ে উঠতে পারছেন না পণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ফলে সে বাড়ির মেয়েটা প্রতিমুহূর্তের শারীরিকভাবে অত্যাচারিত হচ্ছে। শারীরিক অত্যাচার একটা মেয়েকে কতটা মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত করে ফেলতে পারে মনোবিদদের কথায় সেটা পরিষ্কার।
গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মহিলারা নির্যাতিতা হন (women are the victims) শুধুমাত্র গায়ে হাত তোলা মারধরই নয় জোর করে শারীরিকভাবে যৌন অত্যাচার করা হয়। অলিখিতভাবে সমাজতো বলেই দিয়েছে বিয়ের পর যেন নারী দেহ পুরুষের অধিকার সেখানে জোড় করলে সেটাকে সমাজ ধর্ষণ নাম দিতে চায় না।
অথচ প্রত্যেকটা মুহূর্তের শারীরিক নির্যাতন যৌন নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলেছে নারী সমাজ। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বাড়িতে বলা হয় সবটা মানিয়ে নিতে বা এরকমটা হয় , এটা করতে গিয়ে অচিরে সমাজের কত হাজার হাজার মেয়ের ক্ষতি করে ফেলছেন আপনারা বুঝতেও পারছেন না!
আরো পড়ুন – Public toilet : টয়লেটে বিপদ! জরুরী প্রয়োজনে পাবলিক টয়লেটে স্বাস্থ্যবিধি কি মানা হয়?
শুধু কি গায়ে হাত তোলা? শুধু কি যৌন অত্যাচার? দিনের পর দিন কত ভাবে মানসিক নির্যাতন করা যায় তার ধারণা আছে? দেখুন ক্রনিক ডিপ্রেশন, উদ্বেগ, অস্বস্তি আর ভয়ের মানসিক অস্তিত্বটাই টলমলে হয়ে যায়। এমনটা হতে দেবেন না প্লিজ, নিজের অধিকার আর সম্মান সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
সম্পর্ক ভাঙছে, আত্মসম্মানে লাগছে ,মা বাবা কী ভাববে?
যার সাথে কথা বললে কাজ হবে তার সঙ্গে আলোচনা করুন প্রয়োজনে আইনি পরামর্শ নিন কিন্তু আত্মসম্মানকে বিসর্জন দেবেন না । সেভাবে বাঁচা যায় না। যদি মনে হয় কোন কথা থানায় গিয়ে পুরুষ অফিসার কে বলতে পারবেন না, সেক্ষেত্রে প্রতিটা থানার আন্ডারে একটি করে মহিলা থানার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আরো পড়ুন – Women’s shirts : মেয়েদের শার্ট কেনার চল আছে? ছেলেদের ও মেয়েদের শার্টের পার্থক্য কোথায় জানেন?
পরিসংখ্যান বলছে গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনা বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে, জাতীয় মহিলা কমিশনের কাছে জমা পড়েছে বহু অভিযোগ। কিন্তু নির্দিষ্ট সংখ্যার অভিযোগের বাইরেও এমন অনেক ঘটনা আছে যা নথিবদ্ধ হয়নি কোথাও। কিন্তু তাই বলে সেগুলো যে বাস্তবে ঘটে নিয়ে এমনটা তো নয়।
আরো পড়ুন – Ghee : কপালে না থাকলে ঘি, ঠকঠকালে হবে কি? ভালো ঘি খেতে গেলে কি করবেন?
চুপ করে থাকার অভ্যাসটা এবার ছাড়ুন, প্রতিবাদ করুন, অত্যাচার মাত্রা ছাড়ালে পুলিশকে জানাতে দ্বিধা করবেন না। সম্পর্ক ভাঙছে, আত্মসম্মানে লাগছে ,মা বাবা কী ভাববে? বাকিরা কী মনে করবে – এসব পুরনো ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসুন নতুন করে জীবনটাকে বাঁচতে শিখুন। রবীন্দ্রনাথ কিন্তু বলে গেছেন যে অন্যায় করে আর অন্যায় যে সহ্য করে দুজনেই সমান অপরাধী। তাই নিজেকে অকারণে অপরাধের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন না।