Breaking Bharat: বৃটিশের মন জয় করতেই এগরোল (Egg Roll) বা চিকেনরোলের আবিষ্কার হয়েছিল? গরম গরম এগরোল খেতে কে না ভালোবাসে? কিন্তু খাবার ভালবাসলে তার ইতিহাস সম্পর্কে পড়াশুনা করতে হয়, তাই না?
রসনায় তৃপ্ত হয় বাঙালির মন। কথায় আছে কারোর মন জয় করতে গেলে পেট থেকে শুরু করতে হয়। অর্থাৎ খাইয়ে যদি কাউকে খুশি করা যায় তাহলে তার থেকে মোক্ষ লাভ করাও সম্ভব হয়। রসুনের কথা বলতে গেলে ইদানিংকালে ফাস্টফুডের প্রসঙ্গ তো আনতেই হয়। কিন্তু আপনি জানেন কি বাঙালির এই খাবারের সূচনা হয়েছিল বৃটিশের মন জয় করতে? আমরা বলছি রোলের কথা (egg roll recipe)।
এগ হোক বা চিকেন, বাঙালির মন জয় করা রোলের স্বাদ যেন অন্য ফাস্ট ফুডে সেভাবে মেলে না। বলা কেটে পারে মধ্যবিত্ত বাঙালির চপ মুড়িকে ছাপিয়ে যেন হাই প্রোফাইল টাচ। চট জলদি মুশকিল আসান! বাড়িতে গেস্ট আসুক বা একটু বাইরের খাবার খেতে ইচ্ছে হোক।
সাহেবের আবদার মেটাতে রোলের আবিষ্কার হয়েছিল?
পাড়ার অলি গলি থেকে জমজমাট বাজার সারি সারি রোলের দোকান দাঁড়িয়ে আছে। দেখে শুনে একটা পছন্দ করে নিলেই হল। কোনোটায় ঝাল বেশি,কোনোটায় স্যালাড। কারোর আবদার মতো আবার একটু বেশি করে টমেটো শস বা লেবুর রস। আহা, ভোজন রসিকদের মন গলে জল। এক কামড়েই নতুন গল্প।
কলকাতার কাঠি রোল কিন্তু সুদূর মেক্সিকোতেও চূড়ান্ত জনপ্রিয়। মনে করা হয় আনুমানিক বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে এই খাবারের প্রচলন শুরু হয়। খাদ্য প্রেম আর নতুন কিছু এক্সপেরিমেন্ট, এই দুই মিলে কাঠি রোলের রমরমা বাজার কলকাতায়। ইতিহাস বলছে এই রোলের সঙ্গে ইংরেজদের গভীর যোগাযোগ আছে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে হলে আপনাকে পৌঁছে যেতে হবে স্বাধীনতার পূর্ববর্তী কালে। জানা যায় সাহেবের আবদার মেটাতে গিয়ে এক নারীর মাথা থেকে এসেছিল এই রোল তৈরির বুদ্ধি (Intelligence of making rolls)। আর সেটাও হয়েছিল খাস কলকাতার বুকে। ঘটনা নিউমার্কেট এলাকার।
ধর্মতলার নিজাম দোকান চেনেন না এমন মানুষ পাওয়া বিরল। তৎকালীন নিজামের মালিক সেই সময় মাংস দিয়ে নানা উপকরণ সাজিয়ে বিক্রি করতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন। তার দোকানের কাবাবের প্রসিদ্ধি ছিল শহর জোড়া। কিন্তু সাহেব শর্ত দিয়েছিলেন, এমন কাবাব রান্না করতে হবে যেটা খেলে হাতে তেল লাগবেনা। এবার নিজামের মালিক পড়েন মহা ফাঁপরে। এও কি সম্ভব?
আরো পড়ুন – Kashmiri girls : ভূস্বর্গ ভয়ংকর! সেখানেই কি নরক দর্শন নারীর? কাশ্মীরি নারীদের অবস্থা কি জানেন?
তৎকালীন মালিক রেজা হাসান তার স্ত্রীকে এই কথা বলার পর তিনি একটি উপায় বাতলালেন। কর্তা গিন্নি মিলে একটি ময়দার লেচি তৈরি করে তা হালকা ভেজে নিয়ে তারপর স্টাফিং হিসেবে মাংস ভরে দেন। ব্যাস সাহেব তো মহা খুশি। তবে সেটা কিন্তু কাঠি রোল ছিল না।
আরো পড়ুন – Detective Storys : গোয়েন্দাদের দেখতে সিনেমা হলে যান ? কদর কমল নাকি সত্যান্বেষী রহস্য সন্ধানীদের?
আসলে আগে লোহার শিকের মধ্যে মাংস আটকে নিয়ে সেটা পোড়ানোর ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে বাঁশের কাঠির ব্যবহার শুরু আর তারপর কাঠি রোলের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। কলকাতাতে এখন নানা জায়গায় শুধুই রোলের বাহার। রোলের স্টাফিং ,মানেই তাতে মনের মতো পুর দিয়ে দারুণ স্বাদ বিশিষ্ট খাবার তৈরি হওয়া।
আরো পড়ুন – iPhone : আইফোন কী ভাবে এত স্পেশাল হল? জনপ্রিয়তার শীর্ষে আইফোন! রহস্যটা কী?
রোলের ক্ষেত্রে অবশ্য রুটি,পরোটা, লাচ্ছা পরোটা যাই ব্যবহার করা হোক না কেন কেউ পাতলা লেচি আবার কেউ মোটা সোটা পরোটা পছন্দ করেন। বেশির ভাগ পুরনো রোলের দোকানিরা তাঁদের কোয়ালিটির সঙ্গে আপোষ করতে চান না। তাই বিক্রিও বাড়ে হু হু করে।