Breaking Bharat: ভূস্বর্গ ভয়ংকর! সেখানেই কি নরক দর্শন নারীর? কোথাও কোন আইন প্রণয়ন কোথাও বা আইন তুলে নেওয়া কিন্তু কাশ্মীরি নারীদের (Kashmiri girls) অবস্থার কথা কেউ আলাদা করে তুলে ধরে কি?
কাশ্মীরি নারীদের (Kashmiri girls) অবস্থা:
কাশ্মীর মানেই অগাধ সৌন্দর্য আর মন ভালো করা নৈসর্গিক দৃশ্য। তবে কথায় আছে যা কিছু সুন্দর তা যদি ভয়ংকর না হয় তবে পরিপূর্ণ রূপ পায় না। তাইতো বন্যেরা বনের সুন্দর আর ভয়ংকর। সুবিশাল হিমালয়ের প্রতিটি ছত্রে রয়েছে মৃত্যুর হাতছানি, তাইতো সে সুন্দর। আর তাই কাশ্মীরের ভয়ঙ্কর রূপের আগুনে শুধুই যে শীত ভোলানো উত্তাপ আছে তা নয়, আছে সেই আগুনে নারীর দুঃখে শেষ হয়ে যাওয়া।
জীবনটা প্রতিটি মানুষের কাছে বড় প্রিয়। কিন্তু যেখানে শ্বাস নিতে গেলে বারুদের গন্ধ নাকে এসে লাগে সেখানে জীবন বড়ই দুর্বিষহ। এটা করা যাবে না আর ওটা করতে হবে – এই দুই এর বেড়াজালে হাত আর পা দুটোকে যেন কেউ বেঁধে রাখছে প্রতিমুহূর্তে।
‘কাশ্মীরের মেয়েরা’ তাদের জীবন মানেই ব্যতিক্রম:
আমির খসরুর স্বপ্নের কাশ্মীর সবুজে আচ্ছন্ন এক মায়াবী জগত। যেখানে নাম না জানা ফুলের সামিয়ানা, পর্যটকদের ভিড়। প্রকৃতি আর মানুষের রূপের তারিখ আর মানচিত্রের রাজনীতি জুড়ে বোমা বারুদের আতঙ্ক। দূরেই দেখা যায় একটা পাহাড় ঘেরা দেশ। ওই তো পাকিস্তান, চিরশত্রু তাই প্রতিমুহূর্তে জ্বলছে ঘর , চলছে গুলিবর্ষণ। সামিয়া, রুকবানুর আফসানারা এখানে বোরখাতেই মুখ ঢেকে থাকে।
নামাজের সময় মাথায় কাপড় , ঘরের বাইরে বেরোলে মুখ আড়াল ধর্মের কালো কাপড়। আসলে এটাই ছোট থেকে ওদের শেখানো হয়। গোটা পৃথিবী যখন এগিয়ে চলেছে নিজের তালে, স্বচ্ছন্দে, আকাশে ভূপথে নারীর জয় জয়কার। কিন্তু কাশ্মীরের মেয়েরা আর তাদের জীবন মানেই যে ব্যতিক্রম (lives of Kashmiri girls are exceptions)।
কাশ্মীরের মেয়েদের জীবনযাত্রা (Life of Kashmiri girls):
বিয়ে করতে হবে তার জন্য চরিত্র ধবধবে সাদা হওয়া দরকার। ঠিক ওই হিমালয়ের মত। তাই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের নামে তৈরি প্রোফাইলে বলিউড নায়িকার ছবি, পাছে ধরা না পড়ে যায়। ভুট্টা, জব, বাজরা, আখরোটের চাষে পুরুষদের সহযোগী হয়ে ওঠা, আর হাই স্কুল, বড় বড় ইনস্টিটিউশন এর স্বপ্নকে দূরে ঠেলে রেখে মাদ্রাসায় গিয়ে পড়াশোনা –
এই নিয়ে যেন একটা ঘূর্ণাবর্তের মধ্যেই আটকে কাশ্মীরের মেয়েদের জীবনযাত্রা (Life of Kashmiri girls)। প্রতিদিন টেলিভিশন চ্যানেলে সন্ধ্যেবেলা মানেই বিবেকের দরজা বন্ধ রেখে ডিবেটের তর্জা। কেন্দ্র ঠিক করছে নাকি রাজ্য ? নাকি সেই পরাধীনতাই ভালো ?এই নিয়ে চলে মসলাদার আলোচনা । হ্যাঁ ৩৭০ ধারা উঠে গেছে। কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গে জীবন যাপনের চিত্রনাট্য পুরোপুরি বদলে গেছে কি?
কাশ্মীর হাসছে, একথা দাবি করা মানুষরা কি জানেন?
এই প্রশ্নের উত্তরটা বোধ হয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা জানেন না। ইন্টারনেটে যারা খাবার অর্ডার করেন, বিলাস কখন জীবনযাত্রার অভ্যাসি মানুষেরা ১২০০ টাকা কেজি দরে যে আখরোট কেনেন, ওরা ওখানে ৩০০ টাকা কেজিতে পাইকারি বিক্রি করেন। এই তথ্যটা আমাদের অনেকেরই জানা নেই। কাশ্মীর হাসছে, একথা দাবি করা মানুষরা কি জানেন , বিচ্ছিন্ন বিস্তীর্ণ এলাকায় জুড়ে আজও বিদ্যুতের লেশমাত্র নেই?
আরো পড়ুন- Detective Storys : গোয়েন্দাদের দেখতে সিনেমা হলে যান ? কদর কমল নাকি সত্যান্বেষী রহস্য সন্ধানীদের?
স্বাধীনতার হীরক জয়ন্তী বর্ষে তিন রঙ আবেগের ছোঁয়ায় ভেসেছে ১৩০ কোটি। সুখবিন্দর এর বলিউডি গানে কুমাও রেজিমেন্টের সেনারা পতাকা নাড়িয়ে বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন আজ কাশ্মীরিয়ত মিশছে ভারতীয়ত্বে। ৩৭০ ধারা বিলোপ হয়েছে, কিন্তু পুরনো চিন্তা আর মেয়েদের পিছিয়ে রাখার মানসিকতা, বোরখার আড়ালে পর্দানসীন নারীত্বের ঠুনকো সংস্কার বিলুপ্ত হয়নি আজও।
আরো পড়ুন- iPhone : আইফোন কী ভাবে এত স্পেশাল হল? জনপ্রিয়তার শীর্ষে আইফোন! রহস্যটা কী?
কাশ্মীরের মেয়েটা কন্যাকুমারীতে গিয়ে চাকরি করতে পারিনি, কিন্তু ভারত মানে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী এই সারতত্ত্ব পৌঁছে গেছে বিশ্বের দরবারে। কাশ্মীরের কোনও এক নারী দিল্লির দরবারে তার বহু দিনের আবেদন আজও করে উঠতে পারেননি।
আরো পড়ুন- Nepali girls : নেপালের মেয়েরাই আরাধ্যা দেবী, দেশের ঘড়ি চলে ৪৫ মিনিট পিছিয়ে! জানেন?
কিন্তু রাজধানীর রাস্তায় কাশ্মীর নিয়ে আন্দোলন আলোচনা হয়েছে, দিল্লির দরবারে কাশ্মীরের ভাগ্য পরিচালনা হয়েছে। শরীয়ত থেকে শুরু করে সনাতন ধর্ম- যুগে যুগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মতাদর্শকে নিজেদের মতো করে চালিত করার চেষ্টা আজও চলছে।
আরো পড়ুন- Tirupati Balaji Temple : তিরুপতি বালাজি মন্দিরে দিনের পর দিন মাথার চুল দান করা হয়! কেন জানেন ?
স্বামীহারা মেয়েটা পেটের তাগিদে জামা কাপড়ের ব্যবসা করতে গিয়ে, নামাজের জন্য সময় মতো হাজির হতে পারেনি তাতেই জুটেছে অপবিত্রতার তকমা। হ্যাঁ কাশ্মীর ভারতের অঙ্গ। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উৎসব ভারতের বিভিন্ন প্রান্তের পাশাপাশি কাশ্মীরেও হয়েছে। হ্যাঁ কাশ্মীর স্বাধীন হয়েছে, সত্যিই তো? নাকি…