Breaking Bharat: শুঁটকি মাছ আসলে কি? কোন মাছকে আপনি শুঁটকি মাছ বলবেন? নাক সিঁটকে শুঁটকিকে (Dried fish) অবহেলা করছেন? পুষ্টিগুণ কত জানলে এই মাছকে পাতে নয় মাথায় তুলে রাখতে হবে!
খেতে সবাই ভালোবাসেন। আর খাওয়ার সব থেকে বড় একটা দিক হলো স্বাদ আর গন্ধ। মাছ খেতে ভালোবাসেন না এমন মানুষের সংখ্যা খুবই কম। কিন্তু যখনই শুঁটকি মাছের কথা আসে (dried fish easily), তখনই নাক সিঁটকে সকলেই কেমন যেন একটা অঙ্গভঙ্গি করেন।
অনেকে আবার পছন্দ করেন, রান্না করে খেতেও ভালোবাসেন। তবে কি জানেন এই শুঁটকি মাছ আসলে কি? কোন মাছকে আপনি শুঁটকি মাছ বলবেন?
শুঁটকি মাছ আসলে কি? (Dried fish):
আসলে কোনও মাছ যদি শুকিয়ে যায় তবে তাকে শুঁটকি মাছ বলা যায়। মানে বলতে পারেন মাছ যখন শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয়, তখন তাকে আমরা শুঁটকি মাছ বলে থাকি। তাহলে এই মাছ আমাদের প্রতিদিনের চেনা প্রিয় মাছের মধ্যে কোন একটা হতেই পারে তাই নয় কি?
আসল ব্যাপারটা হলো সংরক্ষণ। নানা ভাবি সংরক্ষণ করা যায় তবে সহজ উপায় রোদের শুকিয়ে খাবার সংরক্ষণ করা। মাছের ক্ষেত্রে এই কাজটা করা কিন্তু বেশ সহজ। কারণ রোদ মানে সূর্যের তাপে জল শুকিয়ে যায় একথা সবাই জানে। এখন মাছের যে জলীয় অংশ তা যদি রোদে শুকিয়ে যায় তাহলে স্বভাবতই মাইক্রো অর্গানিজম জন্মাতে পারেনা।
এর ফলে মাছকে বহুদিন ধরে সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব হয়। তবে আপনি কি জানেন বরফ দিয়ে সংরক্ষণের পদ্ধতিটা কেমন? ভাবছেন বুঝি উপকারিতার প্রশ্নে এসব কথা আসছে কেন? সবটাই ক্রমশ প্রকাশ্য । চোখ রাখুন এই প্রতিবেদনের শেষ পর্যন্ত।
বরফ দিয়ে যদি কোনো খাদ্য সংরক্ষণ করতে চান তাহলে সেই খাদ্যকেখাদ্যকে প্রথমে বরফ করা হয় তারপর জল বের করা হয়। মাছের ক্ষেত্রে এই একই ব্যাপার প্রযোজ্য। ব্যাকটেরিয়া, ইষ্ট এবং মোল্ড বেড়ে উঠার জন্য জলের প্রয়োজন হয় এবং সেই জলকে শুকানো করার পর খাদ্য সংরক্ষণ করা সম্ভব।
শুটকি মাছের পুষ্টিগুণ:
এত কিছু করে তো সংরক্ষণ করা হলো। তাহলে কি পুষ্টিগুণ সম্পূর্ণ হারিয়ে যায়? শুঁটকি মাছের পুষ্টিগুণ নিয়ে চমকপ্রদ কিছু তথ্য (nutritional value of dried fish) হাজির আপনাদের সামনে। আপনি কি জানেন কোনো কৃত্রিম প্রিজারভেটিভ ছাড়া যদি শুঁটকি কে শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হয় তাহলে তা হল সম্পূর্ণভাবে একটি প্রাকৃতিক খাবার।
ডাক্তারেরা বলেন শুঁটকি মাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন থাকে (Dried fish contains enough protein)। এই প্রোটিনে প্রায় দিনের সমতুল্য অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে। জানলে অবাক হবেন যে এই মাছ রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আসলে শুঁটকি মাছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। যা শরীরের জন্য উপকারী।
এই মাছে ভিটামিন বি ১২ থাকে, এটি স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতা ও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখে এবং শরীরের ভেতরে লোহিত রক্তকণিকা তৈরি করতে সাহায্য করে, ফলে অ্যানিমিয়া হওয়ার আশঙ্কা কমে। আপনার কি শরীরের ক্লান্তি ভাব বেশি হচ্ছে মানে সব সময় ঘুম ঘুম পাচ্ছে?
আরো পড়ুন- hilsa : মাছের রাজা ইলিশের পুষ্টিগুণ নিয়ে আপনাকে দেব কিছু চমকপ্রদ তথ্য
একবার রক্ত পরীক্ষা করে আপনার দেহের সোডিয়াম পটাশিয়ামের লেভেলটা চেক করিয়ে নিন। যদি খামতি থাকে তাহলে এই মাছ খেতে পারেন ,দেখবেন উপকার পাবেন। এই প্রতিবেদনে দুটি উপাদানের কথা বলা দরকার। এক সেলেনিয়াম আর দুই হল নায়াসিন।
আরো পড়ুন- Girls : সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কোথায় দাঁড়িয়ে আজ মেয়েরা? নারী মানেই কি সংসারে আটকে রাখা?
এতক্ষণ ধরে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন ফেলনা নয় এই শুঁটকি মাছ। যে দুটি উপাদানের কথা বলেছিলাম তার মধ্যে সেলেনিয়াম শরীরে খুব কম পরিমাণে প্রয়োজন হয়। এর প্রধান কাজ দেহে কোষের ধ্বংসকে আটকানো। পাশাপাশি প্রোটিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উৎসেচক তৈরি করে।
আরো পড়ুন- Jilapi Recipe : জিলিপির আড়াই প্যাঁচ কীভাবে এল ? মিষ্টি মানেই কি বাঙালির সৃষ্টি?
আর স্নায়ুতন্ত্র, পরিপাকতন্ত্র ও ত্বক সুস্থ রাখতে প্রয়োজনীয় নায়াসিন। শুঁটকি মাছ এই দুই প্রয়োজনীয় উপাদানের উৎস বটে (Dried fish is a source of these two essential elements)। তাহলে বুঝতে পারছেন তো কতটা উপকারী এই মাছ? যাকে অন্যান্য মাছের মাঝে সেভাবে কদর দেওয়া হয় না। এবার তাহলে খাবার খাওয়ার সময় এই বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন নিশ্চয়ই।
এই বিষয় যে তথ্যগুলি আপনাদের সামনে আনলাম সে সম্পর্কে বিভিন্ন মাধ্যম এবং ইন্টারনেট ঘেঁটে আমরা জানতে পেরেছি যদিও এর সত্যতা আমরা যাচাই করিনি।