Breaking Bharat: মাছের রাজা (hilsa) কি শুধুই দেখতে ভালো নাকি তার অন্য গুণও আছে? কখনো খোঁজ করে দেখেছেন কি? মাছে ভাতে বাঙালির প্রিয় মাছ কি এ প্রশ্নটা করা মানে, নিজেদের বাড়াবাড়ি রকমের অপমান করা তাই না?
তবে ইলিশ মাছ খাওয়া মানেই যে একটা দারুন পরিতৃপ্তি পাওয়া স্বাদের জন্য এটা সম্পূর্ণ ঠিক নয়। আরে না না, ইলিশ মাছের স্বাদ নেই এ কথা বলতে চাইছি না । বলতে চাইছি এই মাছের আরো অনেক অন্যান্য গুন আছে। তবে এই রুপোলি মাছ নিজের স্বাদের জন্য আর রূপের জন্য বাঙালির মনের ভেতর এতটাই জায়গা করে নিয়েছে,
যে কোনদিন এর অন্য কোনও উপকারিতা বা কার্যকারিতা আছে কিনা তা জানার প্রয়োজন কেউ বোধ করেনি। আসলে ইলিশ ভাপা, সরষে ইলিশ, ইলিশ পাতুড়ি কিংবা গরম গরম ইলিশ মাছভাজা– এত কিছু ভাবতে গেলে অন্য কিছুকে সময় দেওয়া যায় নাকি? মাছের রাজা ইলিশের পুষ্টিগুণ নিয়ে আপনাকে দেব কিছু চমকপ্রদ তথ্য।
ইলিশ মাছ অত্যন্ত দামি মাছ ।সারা বছর জালে ধরাও পড়ে না। বাঙালির কাছে ইলিশ খাওয়ার মরসুম হল বর্ষাকাল। পদ্মা হোক বা গঙ্গা কিংবা সমুদ্র সৈকত, চকচকে রুপালি মাছ দেখতে পাওয়ার আশায় মন যেন ব্যাকুল হতে থাকে। প্রায় প্রতিদিনই টিভির পর্দায় চোখ রাখা কবে বাজারে আসছে ইলিশ আর কতটাই বা সাধ্যের মধ্যে হবে সাধ পূরণ?
ইলিশ মাছ শুধু যে মন জয় করে তাই না বরং পেটকেও জয় করে নেয় ভাবা যায়! আসলে অত্যন্ত তৈলাক্ত ইলিশ মাছ খেলে শরীর খারাপ হবে,গ্যাস অম্বল হতে পারে। এই ধারণা মনের মধ্যে নিয়ে ঘুরে বেড়ান অনেকেই। তাহলে সেভাবে এই মাছ খাওয়ার আনন্দটা উপভোগ আর অনুভব কোনটাই করতে পারেন না।
তাদেরকে জানাই নিশ্চিন্ত থাকার মত তথ্য। চিকিৎসকরা বলছেন ইলিশ মাছের পুষ্টিগুণ মারাত্মক। আপনি যদি প্রতিদিনের খাবারে তেলযুক্ত মাছ খেতে পারেন তাহলে পেটের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি হচ্ছে, ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের কারণে আলসার, কোলাইটিসের মতো রোগে হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
তাই ইলিশ মাছ খাওয়া উপকারী (Eating hilsa fish is beneficial)। যেহেতু ফ্যাটি অ্যাসিড আছে তাই রক্তে কোলেস্টরলের মাত্রা কম থাকে। ফলে রক্ত সঞ্চালন ক্রিয়া মসৃণ হয় এবং রক্তনালির স্বাস্থ্যও বজায় থাকে। হৃদরোগ বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায় এই মাছ। অস্টিওআর্থ্রাইটিসের রোগী হলেও ইলিশ মাছ খান (Eat hilsa fish), উপকার পাবেন।
আরো পড়ুন- Jilapi Recipe : জিলিপির আড়াই প্যাঁচ কীভাবে এল ? মিষ্টি মানেই কি বাঙালির সৃষ্টি?
এক্ষেত্রে মনে রাখা ভালো , আমরা এইসব তথ্যের সত্যতা যাচাই করিনি তবে প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ বা তার সঙ্গে আলোচনা আপনি অবশ্যই করে নিতে পারেন। ইলিশ মাছে স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিমাণ একেবারেই কম। একটু গবেষণায় দেখা গেছে, ইলিশ সামুদ্রিক মাছ হওয়ায় তা ফুসফুসের ভালো রাখতে বেশ কার্যকরী ভূমিকা নেয়।
আরো পড়ুন- Jilapi Recipe : জিলিপির আড়াই প্যাঁচ কীভাবে এল ? মিষ্টি মানেই কি বাঙালির সৃষ্টি?
ইলিশ মাছের মধ্যে ভিটামিন বি এবং ভিটামিন এ থাকার জন্য রিকেট , রাতকানা ইত্যাদি রোগ প্রতিরোধ করতে পারে। এমনকি শিশুদের মধ্যে হাঁপানির রোগ কমাতে পারে বাঙালির প্রিয় মাছের রাজামশাই ইলিশ। সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিজঅর্ডার, পোস্ট ন্যাটাল ডিপ্রেশনের মতো একাধিক মানসিক রোগ থেকে
মুক্তি দিতে পারে ইলিশ মাছ। এই মাছে উপস্থিত ফসফরাস ও ক্যালসিয়াম হাড়ের পুষ্টির জন্য প্রয়োজনীয়। যাঁরা নিয়মিত ইলিশ মাছ খান (Eat hilsa fish regularly), তাঁদের মধ্যে ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় বলছেন চিকিৎসকেরা। অ্যাটেনশন ডেফিসিট হাইপারঅ্যাকটিভিটি ডিসঅর্ডার রোগ প্রতিরোধেও বিশেষ ভূমিকা নেয় এই মাছ।
আরো পড়ুন- Girls : সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতে কোথায় দাঁড়িয়ে আজ মেয়েরা? নারী মানেই কি সংসারে আটকে রাখা?
অনেকের ক্ষেত্রে ক্রনিক গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে ইলিশ মাছ তাদের সহ্য হয় না। সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ সবার আগে নিন। তবে যেহেতু ইলিশ নিজেই ভীষণ তৈলাক্ত মাছ তাই সেক্ষেত্রে কম তেল মসলা দিয়ে রান্না করলে সেটা কারোর জন্যই কোন বড় ক্ষতির কারণ হবে না। পুষ্টি মিলবে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে। তাই এইবার বাজারে উঠলে যেন না হয় মিস, বাঙালির প্রিয় ইলিশ (Bengali’s favorite hilsa!) !