Breaking Bharat: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স? মানুষের সৃষ্টি মানুষকেই ধ্বংস করে দেবে? তাহলে কি সত্যিই বিজ্ঞান এবার অভিশাপ হয়ে প্রতিশোধ নিচ্ছে?
বিজ্ঞান মানেই মানুষের জন্য আবিষ্কার। এই বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়েই মানুষ উন্নতির শিখরে। প্রতিমুহূর্তে বিজ্ঞানের আশীর্বাদ আর সাহায্য ছাড়া আমরা এক পাও এগোতে পারি না নিজেদের জীবনে। অথচ সেই বিজ্ঞান যদি অভিশাপ হয়ে নেমে আসে তখন সামলাতে পারবেন কি?
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স :
আগের থেকে এখনকার বিজ্ঞান এবং তার থেকে প্রাপ্ত সুবিধাগুলো মানুষের জীবনকে অনেক সহজ করেছে। যার দীর্ঘমেয়াদি সুফল ভোগ করছি আমরা। অফিস কাছারি থেকে বাড়িঘর সবেতেই বিজ্ঞানের দাপাদাপি। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এই বিজ্ঞান নির্ভরশীলতায় আমরা ক্রমাগত নিজেদের যোগ্যতার বিষয় পঙ্গু হয়ে যাচ্ছি। যার ফলস্বরূপ আমাদের স্থান দখল করে নিচ্ছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (Artificial Intelligence)।
আধুনিক যুগে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিয়ে কতদূর পর্যন্ত চিন্তা ভাবনা চলছে, তা হয়তো আপনি কল্পনাই করতে পারবেন না। মানুষের অপারেশন করতে আজ আর মানুষের দরকার লাগে না সবটাই করে দেয় রোবট। তাহলে বুঝতে পারছেন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স টেকনোলজি (Artificial Intelligence Technology) জীবনকে কোন জায়গায় পৌঁছে দিয়েছে?
এভাবেই যদি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স টেকনোলজি আপনার জায়গাটা দখল করতে থাকে তাহলে কি হতে চলেছে মানুষের ভবিষ্যৎ? এমনটা নয় যে রোবট সব কাজ কর্ম করে দেবে। কিন্তু কাজ করার পদ্ধতি পুরোপুরি বদলে যাবে যেখানে মানুষের ফিজিক্যাল ওয়ার্কের প্রয়োজনীয়তা তলানিতে ঠেকবে।
এমনিতেই বর্তমান যুগে প্রযুক্তি সংস্থা বেশিরভাগই এ.আই-এর ওপর নির্ভরশীল। শুধুমাত্র আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর জন্যই প্রায় ৯০ থেকে ৯২ শতাংশ বিনিয়োগ শুরু করছে বিভিন্ন প্রযুক্তি সংস্থা। তাহলে কি Survival of the fittest তত্ত্বকে মনে পড়ছে? সাদা বাংলায় বলতে গেলে মানুষের চাকরি খেতে চলেছে মানুষেরই তৈরি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স।
অ্যালগোরিদম বিষয়টি সম্পর্কে আশা রাখি কম বেশি অনেকেই জানেন। যেটা ডেটা প্রসেসিং-এর ক্ষেত্রে বিশেষ নির্দেশকে নিশ্চিত করে অ্যালগোরিদম। আজকের আলোচ্য আর্টিফিয়াল ইন্টেলিজেন্স আদতে অ্যালগোরিদমের থেকে বেশ কয়েক ধাপ উন্নত এমন এক পদ্ধতি যেখানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা একসঙ্গে একের বেশি অ্যালগোরিদম ব্যবহার করে ডেটা প্রসেসে পরিবর্তন আনতে পারবে।
নিজের আসন টলোমলো এ কথাটা ভাবতে শুরু করেছেন আধুনিক যুব সম্প্রদায়ের মানুষেরা। যদিও খুব একটা আশঙ্কা হয়তো এখনই করার প্রয়োজন নেই। আবারো বলি আমরা যে তথ্য বা তত্ত্ব আপনাদের সামনে হাজির করি সেগুলি সবই ইন্টারনেট এবং বিভিন্ন মাধ্যম থেকে পাওয়া।
জানা যায় ম্যাসাচ্যুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষকরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে একটি নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। তাদের মতে এখনই সব শেষ হয়ে গেল বা মানুষের চাকরি চলে গেল এই ভয়টা পাওয়ার দরকার নেই।
কারণ বুদ্ধিমত্তার মধ্যে যে বুদ্ধির প্রয়োজন সেটা কিন্তু মানুষের আছে, কোনও যন্ত্র মানবের নয়। তাই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এর মাধ্যমে কাজের পরিসর বাড়ার একটা সম্ভাবনা আছে এবং তাতেই বোধহয় একঘেয়ে কাজের যে ক্লান্তি সেটা দূর হতে পারে। আর মানুষের থেকে তৈরি যে নতুন উন্নত বুদ্ধিমত্তা তার সাথে মানুষের প্রতি মুহূর্তে কর্মরত বুদ্ধি, যদি এক হয়ে যায় তাহলে বুঝতে পারছেন কত বড় একটা ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে!
আরো পড়ুন- patabahar gach : বাড়িতে পাতাবাহার সাজানো আছে কি? সাবধান! এই গাছই হতে পারে আপনার মৃত্যুর কারণ
এবার চিরাচরিত প্রযুক্তিগত কথাবার্তা ছেড়ে একটু অন্য প্রসঙ্গের কথা বলা দরকার। সাধারণত প্রতিটি মানুষ কিছু না কিছু শখ মনের মধ্যে রাখেন কিন্তু তা পূরণ করার মত সুযোগ বা সময় ইদানিং কালে মেলেনা। এবার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স যদি আপনার কাজ অনেকটা সামলে দেয় তাহলে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই ফ্রি টাইম খুঁজে পাবেন আপনি।
আরো পড়ুন- Sourav Ganguly : লর্ডসে ঘুরপাক জামা মানে দাদাগিরি! মনে পরে সৌরভের সেই গৌরবময় ইতিহাস?
যে টাইম কাজে লাগিয়ে নিজের ইচ্ছে পূরণ করতে পারবেন বা আরো বড় কিছু আবিষ্কার করে বিজ্ঞানকে উন্নত করতে পারবেন। মনে রাখতে হবে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স নিজে থেকে ভাবতে পারে না। তার চিন্তা করার শক্তি নেই। তাকে যেভাবে শেখানো হয়, সে সেই ভাবেই কাজ করে। অর্থাৎ নেপথ্যের মাষ্টার মাইন্ড কিন্তু মানুষ।
আরো পড়ুন- Perfect life : পারফেক্ট জীবন মানে ঠিক কেমন? পরিমিত খাবার মানে কতটা পরিমাণ বোঝায়?
আর মানুষের মুখ দেখে যদি তার ভেতরের ভাবনা চিন্তাগুলো স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, তাতে তো আখেরে লাভই হওয়ার কথা। অর্থাৎ কোনও কোম্পানি কোনও প্রার্থীকে হায়ার করার আগেই তার সম্পর্কে জেনে যাচ্ছে ।
আর মানসিকতা সম্পর্কে সুষ্ঠু ধারণা পেয়ে গেলে সিভি বা সার্টিফিকেটের প্রয়োজনই পড়বে না। এই বিজ্ঞান অভিশাপ কখনোই নয়, চিরকালই আশীর্বাদ। তবে সেটা নির্ভর করছে আমরা কীভাবে তাকে গ্রহণ করছি বা ব্যবহার করছি।