Breaking Bharat: ৯ মাসের অন্তঃসত্তার ব্রেন ডেথ (Brain death), সুস্থভাবে জন্ম নিল যমজ ফুটফুটে দুই সন্তান ! অবাক বিজ্ঞান! বিজ্ঞান মানেই বিশেষ ধরনের জ্ঞান যা অবিশ্বাস্য রকম ভাবে আমাদের চারপাশকে প্রতি মুহূর্তে বদলে দিচ্ছে। আজ যেটা প্রায় অসম্ভব কাল সেটাই সহজভাবে বাস্তবে ঘটে গিয়ে আমাদেরকে নাড়া দিয়ে যাচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে তত উন্নত হচ্ছে চিকিৎসাবিজ্ঞান।
এমন সব অভাবনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং অপারেশন হচ্ছে যা আজ থেকে কয়েক বছর আগেও ছিল বিরল ঘটনা। আজ এমন একটা বিষয় নিয়ে কথা যার সম্পর্কে সম্পূর্ণ তথ্য আমরা ইন্টারনেট ঘেঁটে বের করেছি, শুধুমাত্র এটা বোঝানোর জন্য যে আজ মেডিকেল সাইন্স গর্ব করার মতো এক জায়গায় নিয়ে গেছে নিজেকে।
অথবা বলতে পারেন কোথাও গিয়ে যেন মনে হচ্ছে বিজ্ঞানের উর্ধ্বেও এক মহাজাগতিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ করছে জন্ম মৃত্যুকে। নাহলে অন্তঃসত্ত্বা মহিলার ব্রেন ডেথ হওয়ার পরও ফুটফুটে দুই যমজ সন্তান জন্ম নেওয়ার ঘটনা প্রায় অবিশ্বাস্য (Brain death at 9 months gestation)।
অসম্ভব মাথার যন্ত্রণা এতটাই বাড়াবাড়ি পর্যায়ে, যে ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বাকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যেতে হল। হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার পর যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলেন ২১ বছর বয়সী ফ্র্যাঙ্কেলিন ডা সিলভা যামপোলি পাডিলহা। তিনি তখন ন’ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বুঝে গেছিলেন এ যাত্রায় আর ফেরা হবে না , আর শোনা হবেনা ‘মা’ ডাক।
তার হৃদযন্ত্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ নিয়েফ্র্যাঙ্কেলিন হাসপাতালে ভর্তি হন। টানা তিনদিন ধরে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা বুঝতে পারেন ব্রেন ডেথঘোষণা করার সময় এসেছে। সেই মত তার পরিবারকে জানিয়ে দেওয়া হয়। সাল ২০১৬ অক্টোবর মাসের ঘটনা।
অনেক হয়েছে আর লাইফ সাপোর্ট দিয়ে কোনও লাভ নেই, এবার তা খুলে ফেলতে হবে- এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন চিকিৎসকেরা। কিন্তু অন্তঃসত্তার গর্ভে যে আছে তার কী অবস্থা? অবশ্যম্ভাবী পরিণতি জেনেও শেষবারের মতো পরীক্ষা করতে গেছিলেন ডাক্তারেরা। কিন্তু একি! চমকে উঠলেন তারা।
এক নয়, একসঙ্গে এক জোড়া হার্টবিট এর সংকেত মিলছে। আর তাতে কোনো রকম অসংগতির চিহ্নমাত্র নেই, সবটাই সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ছন্দে ঘটছে। বিস্ময় যেন ঘোর কাটছে না চিকিৎসকদের।
কথায় আছে মানুষ ভাবে এক ঈশ্বর করেন আরেক। ব্রাজিলের এই ঘটনা যেন তারই উদাহরণ। চিকিৎসা বিজ্ঞান ‘ব্রেন ডেথ’ ঘোষণা করার পরেও ফ্র্যাঙ্কেলিনের শরীরের অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গগুলিও স্বাভাবিকভাবেই কাজ করছিল। আর দেরি নয়, ডাক্তাররা সিদ্ধান্ত নিলেন নতুন অতিথিদের পৃথিবীর আলো না দেখা অবধি কৃত্রিমভাবে ফ্র্যাঙ্কেলিনকে প্রয়োজনীয় সমস্ত লাইফ সাপোর্টে রাখা হবে।
আরো পড়ুন- Zion Clark : অদম্য শক্তি থেকেই পা না থাকা সত্ত্বেও বিশ্ব জয় করলেন জিওন ক্লার্ক? কীভাবে?
এই সিদ্ধান্ত কার্যত ইতিহাস তৈরি করেছে। সেনহোরা দো রোসিও হাসপাতালের ডাক্তার এবং তার সঙ্গে থাকা চিকিৎসাকর্মীদের প্রাণঢালা পরিশ্রম, চিন্তা ও যত্নের কথা এই ক্ষেত্রে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। প্রায় মাস চারেক পর ফ্র্যাঙ্কেলিনের ক্যাম্পো লার্গো অঞ্চলের নসো সেনহোরা দো রোসিও হাসপাতালে মুরিয়েল পাডিলহার যমজ পুত্রসন্তান আসাফ ও কন্যা আনা ভিতোরিয়ার জন্ম হয়।
আরো পড়ুন- Govindamma: ভাবতে পারছেন ৭৭ বছর ধরে শুধু জলেই কাটালেন এক বৃদ্ধা মহিলা? নাম গোবিন্দাম্মা
যত সময় গেছে এই ধরনের ঘটনা কিন্তু বেড়েছে। ২০১৯ সালে ১১৭ দিন ধরে ব্রেন ডেথ হয়ে যাওয়া মায়ের গর্ভে থেকেই ভারতের স্বাধীনতা দিবসের দিন পৃথিবীর আলো দেখে ছিল চেক রিপাবলিকের এক শিশু কন্যা। আমেরিকার এক পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৯০থেকে ১৯৯৬-এর মধ্যে ২৫২-টি ব্রেন ডেথ কেসে ২.৮% ক্ষেত্রে এমন ঘটনা দেখা গেছে, যেখানে ১৫ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যবর্তী বয়সী অন্তঃসত্ত্বা মহিলা ছিলেন রোগী।
আরো পড়ুন- old people : আর বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হবে না! এবার নিঃসঙ্গ বয়স্ক ব্যক্তিদের সঙ্গী খুঁজে দেবে তরুণরা!
এখানেই শেষ নয় ,২০১৬ সালে লিসবনে প্রায় ১৫ সপ্তাহ ধরে মৃত মায়ের জঠরে থাকার পর সুস্থ শিশুর জন্মের খবর মিলেছিল। এছাড়াও পোল্যান্ডের রোক্লতে মায়ের ব্রেন ডেথ অবস্থায় ৫৫ দিন শিশুপুত্রের জন্ম হয়েছিল।
এইসব তথ্যই আমরা ইন্টারনেটের নানা সূত্র ঘেঁটে বের করেছি। এই সবকিছুই প্রমাণ করে দেয় যে মেডিকেল সাইন্স এবং ঐশ্বরিক শক্তি দুই মিলেমিশে মিরাকেল তৈরি করতে পারে। বিস্ময়ের ঘোর কাটে না আমাদেরও।