Breaking Bharat: আর বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হবে না! এবার নিঃসঙ্গ বয়স্ক ব্যক্তিদের (old people) সঙ্গী খুঁজে দেবে তরুণরা! জীবনের শেষ লগ্নে নতুন করে সঙ্গী চান? ভালো থাকার রসদ খুঁজে দিতে প্রবীণের পাশেই এবার অচেনা নবীনরা।
জীবনটা বাঁচার উপভোগ করার। তাই যতদিন এই পৃথিবীতে থাকতে হবে ঈশ্বরের নিয়ম মত, ভালো থাকতে হবে নিজেদের কাজের জোরে। স্বপ্ন দেখার মধ্যে কোন অন্যায় নেই তবে সেই স্বপ্নকে সত্যি করার মত ইচ্ছে শক্তি থাকা দরকার। যত দিন যাচ্ছে তত অনিশ্চয়তার ঘেরাটোপে আটকে পড়ছে ভবিষ্যৎ। তবে এই অনিশ্চয়তা শুধুমাত্র নবীন প্রজন্মের নয় প্রবীনদেরও বটে।
নিঃসঙ্গ অসহায় বয়স্ক মানুষদের কথা (old people):
এই দুই প্রজন্ম যদি মিলে মিশে একাকার হয়ে যায় তাহলে তো বিপ্লব তৈরি হতে পারে তাই নয় কি? আজ সেই নিয়ে কিছু কথা বলব আপনাকে যেখানে দেখবেন, কী ভাবে প্রবীণদের নিঃসঙ্গতাকে নবীনদের সঙ্গ এক অদ্ভুত পূর্ণতায় ভরিয়ে দিচ্ছে। যাবে আর বৃদ্ধাশ্রমে যেতে হচ্ছে না একা হয়ে যাওয়া বয়স্ক ব্যক্তিদের। অন্যদিকে জীবনের আর কাজের এক অন্য মানে খুঁজে পাচ্ছে নবীনরা।
নচিকেতার গানটার কথা সবার জানা,-” স্বামী স্ত্রী আর অ্যালসেশিয়ান জায়গা বড়ই কম, আমার ঠিকানা তাই বৃদ্ধাশ্রম”। ঠিক যাদের কথা ভেবে এই গানটি লেখা তাদের নিয়ে এই সমাজ ভাবেনা। কেনই বা ভাববে? তারা যে কোনও কাজে লাগে না। মানে না হোমে না যজ্ঞে।
তারা ভোট দিতে পারে না তারা রাজনীতির কোন কাজে আসে না। তাই তাদের নিয়ে ভাবার মত সময় বা প্রয়োজন কোনটাই সমাজের শীর্ষ নেতৃত্বর নেই। তার বাড়ির লোকের কাছে তো তিনি অত্যন্ত অপ্রয়োজনীয়। ব্যস্ততার ভিড়ে তাকে আর সময় দেওয়া যায় না। অবশ্য সব সময় যে এর জন্য বাড়ির সন্তানদের দোষ দেওয়া উচিত এমনটাও ঠিক নয়।
বাবা মা, দাদু ঠাকুমা, বৃদ্ধর বৃদ্ধাদের প্রতি দায়িত্ব আছে ঠিকই কিন্তু তারা সে দায়িত্ব ইচ্ছাকৃতভাবে অবহেলা করছে নাকি তার পেছনে রয়েছে তাদের কঠোর পরিশ্রম আর কাজের তাগিদ যার জেরে হয়তো ইচ্ছে থাকলেও উপায় হচ্ছে না সেটা বোঝা দরকার। কথায় বলে, যদি বাড়ির এবং পরিবারের সবাইকে ভালো রাখতেই কাজ করা তাহলে এমন কাজ করে লাভ কি যাতে পরিবারকে সময় দেওয়া যায় না?
কিন্তু একবার ভেবে দেখুন তো যে সময়কার মানুষের ভাবনা এটি ছিল সেই সময় কি পৃথিবী এত প্রতিযোগিতাময় ছিল নাকি অর্থের প্রয়োজন এতটাই বেড়ে গেছিল? বাড়ির বয়স্ক মানুষটাকে (Elderly people in the house) দেখতে গেলে বাড়ির বাইরে বেরোনো সম্ভব হবে না আর বাড়ির বাইরে বেরিয়ে কাজ করলে বয়স্ক মানুষকে অবহেলা করছে বলে সমাজ তকমা দেবে (Neglecting the elderly)।
এবার ভাবুন কোন দিকে যাবে সেই তরুণ প্রজন্ম? বাড়িতে দুমুঠো অন্ন জোগাড় করতে গেলেও টাকার দরকার । সেই টাকাটা কি বাড়ির বয়স্ক লোকেদের সঙ্গে থেকে বাড়িতে বসে বসে রোজগার করা সম্ভব? তাই বলি সবসময় দোষারোপ করাটা ঠিক নয়।
এবার যদি বাড়ির বয়স্ক সদস্যদের কথা ধরেন। তারাইতে চাইবে শেষ জীবনে একটু আরামে থাকতে নিজের প্রিয়জনকে কাছে পেতে। তাদের সেই চাওয়ার মধ্যে দোষ কোথায়? অসুস্থ হলে তার সন্তান-সন্ততি মাথায় হাত বুলিয়ে দেবে এ ভাবনার মধ্যে কোনও অন্যায় নেই? কিন্তু বিশ্বাস রাখলে আর ভরসা রাখলে বোঝা যায় কাউকেই আঙুল তুলে কথা বলা যায় না।
আমরা সবাই যে যার দিক থেকে ঠিক আসলে দোষটা পরিস্থিতির। সবকিছুর একটা অন্য দিক বা ভালো আগামি নিশ্চয়ই থাকে। এক্ষেত্রে তেমনটাই হচ্ছে। এই প্রজন্ম নিঃসঙ্গ অসহায় বয়স্ক মানুষদের কথা ভেবে এক নতুন ধরনের কাজের আবিষ্কার করে ফেলেছে (About the lonely helpless old people)। একদিকে সমাজ সেবা অন্যদিকে উপার্জন।
কী এমন ভাবনা যা নিয়ে এত উচ্ছ্বসিত তরুণ প্রজন্ম? আসলে কয়েকজন ছেলে মেয়ে মিলে একটি সংস্থা তৈরি করছেন যাদের কাজ হল অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা যাদের ছেলে মেয়েরা হয়তো তাদের সময় দিতে পারেন না বা কাজের জন্য বাইরে থাকেন তাদের পাশে দাঁড়ানো। আলাদা করে বৃদ্ধাশ্রমে যাওয়ার প্রয়োজন নেই ।
এই বয়সেই নতুন করে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়ার দরকার কি? ধরে নিয়ে যাক কোন এক বৃদ্ধ দম্পতির সন্তান বিদেশে চাকরি করেন। স্বভাবতই বাবা মা এই দেশে অসহায় ভাবে পড়ে রয়েছেন কেউ কোথাও নেই। তরুণ প্রজন্ম এই নিয়ে ভেবেছে আর তারপরেই বিভিন্ন কোম্পানি তৈরি হয়েছে মানে স্টার্ট আপ বিজনেস বলতে পারেন।
আরো পড়ুন- Stone Baby : পাথর সন্তানকে দেখেছেন? মায়ের শরীরের ভেতরেই পাথর হয়েই রইল শিশু!
ধরুন এই বিদেশে থাকা ছেলে মেয়েরা বাবা-মায়ের জন্য যে খরচ বা যে সাহায্য দরকার সেটা নির্দিষ্ট সংস্থার হাতে তুলে দিলেন। সেই সংস্থার লোকজন বারো মাস সেই দম্পতির নিজের বাড়িতেই তার দেখাশোনা করবেন। সকালে বাজার করে দেওয়া থেকে শুরু করে দুপুরের খাবার রান্না করে দেওয়া।
আরো পড়ুন- Migraine pain : যন্ত্রণায় মাথা ফেটে যাচ্ছে? মাথার ব্যথা কিছুতেই কমছে না? মাইগ্রেনের সমস্যা না তো?
প্রয়োজন মত ডাক্তার দেখানো ,ওষুধ এনে দেওয়া পরিপাটি করে জামা কাপড় কেচে দেওয়ার ব্যবস্থা এমনকি সবার সুযোগ করে ঘুরতে বেড়াতে নিয়ে যাওয়া। একদিকে , আর একাকীত্ব বোধ করবেন না বয়স্ক মানুষেরা ।অন্যদিকে বাইরে কাজে থাকা তাদের সন্তান ছেলে মেয়েরাও নিশ্চিন্ত।
আরো পড়ুন- The Great Khali : জেনে নিন কী খেয়ে মহা শক্তিশালী WWE খ্যাত ‘গ্রেট খালি’ ?
বাবা-মা যেখানে আছেন ঠিক আছেন। বললে হতো বিশ্বাস করতে চাইবেন না আমেরিকা থেকে শুরু করে ইন্ডিয়া, এমনকি এই রাজ্য এরকম স্টার্টআপ কোম্পানি রয়েছে। রং দিয়ে ব্যবসা চলছে পাশাপাশি সমাজসেবাও চলছে। আর কিছু বেকার যুবক-যুবতী কাজ করতে শুরু করে দিয়েছেন।
তাহলে কি মনে হয় বৃদ্ধাশ্রমের সংজ্ঞা টা এবার বদলে যাবে? নতুন করে জীবনের সংজ্ঞা আর সঙ্গী খুজে পাবেন বয়স্করা একেবারেই নিজের বাড়িতে প্রিয় পরিবেশে। কথায় আছে চিন্তা বদলালে দেশ বদলাবে। শুধু একটা ভাবনার দরকার যেটা জগৎকে পাল্টে দেবে।