Breaking Bharat: যন্ত্রণায় মাথা ফেটে যাচ্ছে? মুড়ি মুড়কির মত পেইন খেয়েও কেউ কমছে না! সাবধান ! আপনি মাইগ্রেনে আক্রান্ত (Migraine pain) নন তো? । এ যেন এক বেয়ারা রোগ বটে। একবার মাথার ব্যথা শুরু হলে কিছুতেই কমতে চায় না। তখন পুরো জগত সংসার অন্ধকার মনে হয়। আপনার ক্ষেত্রে এরকম ঘটছে কি? তাহলে আগে থেকেই সতর্ক হোন । হতে পারে আপনার মাইগ্রেনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে!
সারাদিন কাজের চাপ, ক্রমাগত টেনশন আর দিনের শেষে একরাশ চিন্তা মাথা ভারী। এই হলো নিত্যদিনের চেনা রুটিন। এর মধ্যে যদি শরীর সায় না দেয়, বেগরবাই করে তাহলে মেজাজটাই খাপ্পা হয়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সব থেকে বেশি সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায় অসহ্য মাথার যন্ত্রনা (Unbearable headache) ।
রোগ যদি শরীরে বাসা বাঁধে তাহলে অবশ্যই একদিন না একদিন জানান দেবেই। কিন্তু যত দেরিতে বুঝবেন তত বিপদ আর সমস্যা বাড়বে। তাই রোগের লক্ষণ দেখে রোগ চিনে নিয়ে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে পরামর্শ করে নেওয়াটা সবার আগে দরকার। সব ছেড়ে সেদিকে মন দিন।
মাইগ্রেনের ব্যথা কেন হয়? (Migraine pain):
আজ বা কাল এই করে অবহেলা করতে থাকলে , বড় সমস্যা তৈরি হলে বেশ কয়েক দিন বা কয়েক মাস আপনাকে বিছানায় শুয়ে থাকতে হতে পারে। তখন রোগ থেকে নিস্তারও পাবেন না, আবার কাজও করতে পারবেন না। অর্থাৎ এই কূল এবং ঐ কূল অর্থাৎ দুই কূলই হাতছাড়া হবে। আপনি কি জানেন মাইগ্রেনের সমস্যা কতটা গুরুতর হতে পারে?
বিশ্বের প্রায় বারো শতাংশ মানুষ এখন এই সমস্যায় ভুগছেন। তবে এটা সেই সমীক্ষার উপর ভিত্তি করে বলা হচ্ছে, যেখানে এই সমস্যা নিয়ে রোগীরা ডাক্তারের কাছে এসেছেন। অনেকেই আছেন যারা এই রোগে আক্রান্ত , কিন্তু সেভাবে নিজেরা কোনও দিন খতিয়ে দেখেননি, ডাক্তারের কাছেও যাননি। তাহলে বুঝতে পারছেন তালিকা কত দীর্ঘ হবে?
সবার আগে বোঝা দরকার মাইগ্রেন কী ও কত প্রকারের?
ক্লাসিক্যাল মাইগ্রেন ও নন-ক্লাসিক্যাল মাইগ্রেন। চিকিৎসকরা মূলত এই দুই ধরনের মাইগ্রেনের কথা বলে থাকেন। শুধুমাত্র নির্দিষ্ট সময়ের ফাঁকে ফাঁকে যন্ত্রনা হওয়াই নয়, বমি বমি ভাব,খাবারে অরুচি, মাঝেমধ্যে নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া এই সবের সঙ্গেই মাইগ্রেন জড়িয়ে আছে। মাইগ্রেন হলে দপ দপ করে মাথার একটি নির্দিষ্ট দিকে ব্যথা হতে থাকে (There is pain in one particular side of the head)।
কখনো বিপরীত প্রান্ত ছড়িয়ে পড়ে সেই ব্যথা। যত সময় যায় তা ভয়াবহ যন্ত্রণার আকার ধারণ করে যা অসহ্য হয়ে ওঠে। এটি একটি নিউরোলজিক্যাল সমস্যা। চিকিৎসা করে বলছেন এটি বংশগত কারণে হয়ে থাকে। প্রাথমিকভাবে মাথা ব্যথা এবং বমির পাশাপাশি সর্দি হয়। তবে মনে রাখা দরকার যে সব মাথাব্যথাই কিন্তু মাইগ্রেন নয়। নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণ কি আগে থেকে ধরতে হবে।
আপনি যদি মাইগ্রেনে আক্রান্ত (Suffering from migraine) হয়ে থাকেন তাহলে আলো দেখলে আপনার চোখ ঝলসে যাবে, যন্ত্রণা বাড়বে। খিদে কমে যাবে, বমির প্রবণতা বাড়বে এমনকি এলার্জিও হতে পারে। বেশি ঘাম হলে সতর্ক থাকুন। এসব ক্ষেত্রে সবার আগে নিজের ডায়েট চার্টে একটা সমতা বজায় রাখুন। প্রথমেই আপনাকে জানিয়ে রাখা দরকার খাওয়ার ইচ্ছেটা চলে যায় কেউ মাইগ্রেনে আক্রান্ত হলে।
কিন্তু পেট খালি দেখা যাবে না গ্যাস ফর্ম হলে তা থেকে যন্ত্রণা বাড়বে। খুব বেশি মিষ্টি বা মিষ্টি জাতীয় কিছু খাবেন না এতে ইনসুলিনের পরিমাণের হেরফের হয়। যদি শরীরের অভ্যন্তরে এটা ঘটে তাহলে কিন্তু মাইগ্রেনের ব্যথা বাড়বে (Migraine pain will increase)। রোদ বেশি ঘোরাঘুরি করলে বা খুব গরম লাগলে মাইগ্রেনের যন্ত্রণা শুরু হয়ে যাবে।
টেনশন থেকেও তৈরি হয় মাথার যন্ত্রণা (headaches);
অনেক সময় অত্যাধিক কাজের চাপ থেকে টেনশন থেকে তৈরি হয় মাথার যন্ত্রণা ধরে যায় (Tension creates headaches)। সেক্ষেত্রে একটু রিফ্রেসমেন্ট দরকার। চা খেতে পারেন তবে দুধ চা না খেয়ে লেবু চা খাওয়া ভালো। এই রোগ হওয়ার জন্য কোন নির্দিষ্ট বয়স লাগে না যে কোন বয়সের মানুষেরই হতে পারে। তবে ডাক্তাররা বলছেন পুরুষদের থেকে মহিলারাই সব থেকে বেশি মাইগ্রেনের রোগে ভোগেন (Women suffer more from migraines)।
মহিলাদের মাইগ্রেন নিয়ে সমস্যা (Migraine problem) :
সাধারনত ঋতুস্রাব শুরু হলে অনেক মহিলাদের মাইগ্রেন নিয়ে সমস্যা তৈরি হতে পারে। পিরিয়ড চলাকালীন শরীরে ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে যায়। ফলে মাইগ্রেনের সমস্যা তৈরি হতে পারে। অনেক মহিলাদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে মেনোপজের পর মাইগ্রেন কমে যায়। তবে এরও বিপরীত ঘটনা ঘটে মানে অনেক রোগীর ক্ষেত্রে এই মাইগ্রেনে সমস্যা আবার মেনোপজের পরেও শুরু হতে পারে।
আরো পড়ুন- Dal Bhat : ডাল ভাত খেতে ভালোবাসেন? এবার কিন্তু ডাল খেলেই মহাবিপদ!
নিজের খাবারের কিছু অদল বদল করলে এই সমস্যা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া যায়। তবে পুরোপুরি মাইগ্রেন সেরে যাবে এই গ্যারান্টি চিকিৎসকেরা দেন না। কফি মাইগ্রেনের ব্যথায় ভালো কাজ দিতে পারে বলে জানিয়েছে সমীক্ষা। চকোলেট, রেড ওয়াইন, ড্রাই ফ্রুটস, চিজ-জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
আর অত্যাধিক আলো এড়িয়ে চলাটাই শ্রেয়। রাত্রে অন্তত ৫ থেকে ৬ ঘন্টা ঘর অন্ধকার করে ঘুমোন। সেই সময় যেন কোন চিন্তা মাথায় রাখবেন না। অনেকে মনে করেন ইউক্যালিপটাস অয়েল, মিন্ট অয়েল মাথায় লাগালেও আরাম পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে মানসিক ভাবনাকেও এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়।
আরো পড়ুন- Sathi : সুপারস্টার জিতের বাংলা ছবি ‘সাথী’ সিনেমার নেপথ্যের ইতিহাস আজও অজানা?
কারণ মন যদি ভাবে যন্ত্রণা নেই সেটা অনেকটা বড় ব্যাপার। তবে বিষয়টিকে হালকা ভাবে নেবেন না আর অযথা পেইন কিলার খেয়ে শরীরের বাকি সমস্যা বাড়াবেন না। যন্ত্রণা ব্যথার ওষুধ খেলেই মাইগ্রেন সেরে যাবে এমনটা নয়। কফি খাওয়ার কথা বললাম বটে কিন্তু বেশি পরিমাণে নয় আর নেশা হিসেবে কফিকে বিচার করবেন না। বাইরে বেরোলে অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করুন।
আরো পড়ুন- walking : প্রচুর পরিমাণে হাঁটাচলা করলে নাকি শরীর সুস্থ স্বাভাবিক থাকে, কী লাভ হাঁটাচলা করে?
চোখে সরাসরি আলো লাগলে চট করে মাথা ধরে যাবে যে মাথাব্যথা অনেক সময় সারাদিন ধরেও কমবে না। যেসব লক্ষণগুলো এখানে বলা হলো সেই মত একটা দুটো যদি আপনি ভোগ করেন তাহলে আর দেরি নয় এক্ষুনি ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন।