Breaking Bharat: ঘুমের মধ্যে মাঝরাতে যতসব আজে বাজে দুঃস্বপ্ন? স্বপ্ন আর দুঃস্বপ্ন (Bad Dreams) তৈরি হয় কী ভাবে? সারাদিনের পর ঘুম বড় আরামের। সকাল থেকে হাজার একটা পরিশ্রম করে ফেলা যায়। কিন্তু রাত্রে যদি একটু সুন্দরভাবে না ঘুমানো যায় তাহলে সারাদিনটা নানা অস্বস্তি নিয়ে কাটাতে হয়।
অতএব খাওয়া দাওয়া ঠিক হোক বা না হোক ঘুম পরিপাটি হওয়া দরকার। ঘুম মানে শুধুই তো আর চোখ বন্ধ করে থাকা নয়, দিনের মধ্যে যা যা ঘটনা ঘটলো তার অস্পষ্ট একটা অংক কষতে থাকা অবিরত। গোটা দিন জুড়ে যে যে কারণে ক্লান্তি আর বিরক্তি তৈরি হলো সেই সবকিছুর একটা সুন্দর সমাপ্তি। এই না হলে ঘুম!
ঘুমের মধ্যে খারাপ স্বপ্ন দেখছেন? (Bad Dream):
নির্বিঘ্ন ভাবে ঘুমোনো শিল্পকলা বটে। সবার কপালে সেটা জোটে না। ঘুম মানে সারা দিনের ক্লান্তি দূর করা কিন্তু একরাশ দুশ্চিন্তা সঙ্গে থাকলে ক্লান্তি দূর হয় না। যা চান তা করতে চাই তার মধ্যে যতটা অপূর্ণতা থেকে যায় সেগুলোই যেন দুশ্চিন্তা হয়ে থাকে মাথার মধ্যে। আর রাত যত বাড়ে অবচেতন মন সেগুলো নিয়েই চিন্তা করতে থাকে যেন চোখের সামনে ভেসে ওঠে সবটা।
এভাবেই স্বপ্ন হয়ে ওঠে দুঃস্বপ্ন। বাস্তবে যা করতে পারি না স্বপ্নে যেন সেগুলো করতে পারার মধ্যে দিয়ে নায়ক বা নায়িকা হয়ে ওঠা। কিন্তু দুঃস্বপ্ন কখনোই কাঙ্ক্ষিত নয়। হঠাৎ করে মাঝরাতে ভয়ংকর বা ভয়ানক কিছু দেখে ভয় পেয়ে গিয়ে জেগে ওঠা, যেন চারপাশে এমন কিছু ঘটেছে যা শরীর দিয়ে একটা ঠান্ডা রক্ত বইয়ে দিয়েছে। এই অনুভূতির মধ্যে দিয়ে অনেকেই গেছেন ।
অতিরিক্ত স্বপ্ন দেখার কারণ (Reasons for excessive dreaming):
আর একটা বিষয় হল এই দুঃস্বপ্ন বা স্বপ্নের কথা (Bad dreams in sleep) কিন্তু ভোরবেলা বা সকাল বেলা যখন ঘুম সম্পূর্ণ হয়ে যায় তারপর আর মনে পড়ে না অনেকেরই। কি রহস্য আছে এর পেছনে, সাধারণ মানুষ এই নিয়ে কাজের চাপে ভুলে গেলেও মনোবিজ্ঞানীরা যথেষ্ট যুক্তি খুঁজে পান এইরকম ঘটনার। আসলে মস্তিষ্কে সবটাই সম্ভব হয় হরমোনের সক্রিয়তার জন্য।
হাসি কান্না রাগ অভিমান সবকিছুই কিন্তু হরমোনের কারণে হয়। যদিও এগুলোকে মন বা মানসিক ভাবনা ধরলেও বিজ্ঞানসম্মত যুক্তি আছে প্রতিটি অনুভূতির পেছনে। স্ট্রেস নিউরোট্রান্সমিটার নরপাইনফ্রাইন ভয় পাওয়ার স্নায়ুগুলিকে উদ্দীপনা দেয় যার ফলে সেগুলি অতি সক্রিয় হয়ে ওঠে।
ঘুম কেড়েছে দুঃস্বপ্ন! জ্যোতিষ কারণ জানেন?
যখন আমরা ঘুমোই তখন সব ধরনের হরমোন তারা নিষ্ক্রিয় থাকে অর্থাৎ সেই মুহূর্তে তারা অতটা সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারে না । কিন্তু হঠাৎ করে কোন স্থায়ী উদ্দীপিত হলে মস্তিষ্ক যেন ঝটকা খায়। এরই ফল হিসেবে দুঃস্বপ্ন বা ভয় পাওয়ার মুহূর্ত এক নজরে ঘুমের মধ্যেও যেন বিভীষিকাময় একটা জগত তৈরি করে।
যা জ্যোতিষ বিশ্বাস করেন বা যারা বাস্তুশাস্ত্র মানেন তাদের কাছে কিন্তু এই দুঃস্বপ্নের অনেকগুলো কারণ যুক্তি হিসেবে সামনে দাঁড়ায়। বাস্তুবলে ঘরের কোন দিকে বিছানা এবং কোন দিকে আপনি মাথা রেখে ঘুমোচ্ছেন সেটা নাকি দুঃস্বপ্ন আসা বা না আসার জন্য ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা পালন করে।
প্রচলিত একটা ধারণা আছে বাথরুমের দিকে যদি মাথা করে শোয়া হয় তাহলে দুঃস্বপ্ন আসতে বাধ্য কারণ বাথরুম থেকে নাকি নেগেটিভ ভাব সোজা ঘরে চলে এসে আপনার মস্তিষ্কে প্রবেশ করে। আমরা কোনও কুসংস্কার বা কোন অন্ধ বিশ্বাসকে কোনভাবেই প্রশ্রয় দিই না। কোনও কিছুর সঙ্গে সাদৃশ্য পাওয়া গেলে সেটা নিতান্তভাবেই কাকতালীয়। তবে আমরা মানি বিজ্ঞান শেষ কথা বলে।
তাই যুক্তি দিয়ে বুঝতে হবে কোন ঘটনার আসল কারণ। বাস্তু বলে দক্ষিণে মাথা আর উত্তরে পা করে শোওয়ার দরকার। জ্যোতিষ শাস্ত্রে মনে করা হয় যদি বিছানার নিচে অনেক ধরনের আবর্জনা বা কোনও ধরনের অব্যবহৃত পদার্থ বা বস্তু থাকে দীর্ঘদিন ধরে বা বিছানা অপরিষ্কার থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে তার নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে মানসিকতায় এই প্রভাব পড়লে অবশ্যই দুঃস্বপ্ন আসতে পারে।
আরো পড়ুন- jalbhara sandesh : বাঙালি মানেই মিষ্টি প্রিয় জাতি, কিন্তু মানুষ ঠকাতে মিষ্টি তৈরি? তাও আবার জলভরা?
বিছানার নিচে যদি চটি বা জুতো থাকে তাহলেও আপনি দুঃস্বপ্ন দেখতে পারেন বলে মনে করা হয় অনেকের আবার জ্যোতি জাতকের দোষ থাকলে সে ক্ষেত্রেও তা পরবর্তী প্রজন্মে অর্থাৎ পিতৃ দোষ থাকলে সন্তানদের মধ্যে তা প্রভাবিত হয়। তবে একটা কথা আবার বলে রাখা ভালো যে বিজ্ঞান কিন্তু বলে, যুক্তি দিয়ে সঠিক তথ্য কে বের করার কথা।
আরো পড়ুন- Chocolate : চকলেট খেলে রোগ সেরে যায়? কিন্তু এই চকলেটের আবিস্কার কি ভাবে হল?
তাই মনোবিদরা বলছেন দৌড়ে এগিয়ে চলার যে লড়াই , প্রতিমুহূর্তে হারা বা জেতার মধ্যে যে একটা অদ্ভুত অপ্রাপ্তি, প্রচুর না পাওয়া- এই সব কিছু থেকেই যেন একটা অনিশ্চয়তা সূত্রপাত। সব দুঃস্বপ্নের কারণ একটা অনিশ্চিত ভয়।
নিজের উপর ভরসা রাখুন আর বিশ্বাস রাখুন। ইচ্ছা থাকলে উপায় হয় । মনে রাখবেন অসম্ভব শব্দটা “সম্ভব” শব্দটাকে নিজের সঙ্গে নিয়েই আসে। তাই সত্যিটা চিনুন বুঝুন জানুন আর নিজেকে প্রমাণ করুন।