Breaking Bharat: বাড়ছে প্রতারণা! অনলাইনের ফাঁদ (Avoid online traps) থেকে বাঁচতে মনে রাখুন এই নিয়ম, প্রতারণা থেকে বাঁচতে, জালিয়াতি থেকে নিজেকে বাঁচাতে যে জিনিসগুলো সবার আগে জানা দরকার এই প্রতিবেদনে তাই নিয়েই আলোচনা করব আমরা।
যতদিন যাচ্ছে তত ব্যাংকিং সেক্টরের সরলীকরণ হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে আর টাকা তোলার জন্য ব্যাংকে যাওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। আসলে নগদ লেনদেন কার্যত বন্ধ হয়ে যাবে। প্রযুক্তি নির্ভর হতে হবেই। আর তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে আরও স্মার্ট হতে হবে আপনাকে আমাকে।
কিন্তু জানেন কি যতদিন যাচ্ছে তত অনলাইন প্রতারণার ঘটনা বেড়েই চলেছে (Online fraud is on the rise)। কোনভাবেই যেন এর থেকে পরিত্রাণ মিলছে না। সত্যি বলতে এর পেছনে কিছুটা মানুষের লোভ কাজ করে আর কিছুটা অজ্ঞতা।
ইন্টারনেটের ফাঁদ থেকে কীভাবে বাঁচবেন? (Avoid online traps):
আমাদের একটা স্বাভাবিক প্রবৃত্তি হচ্ছে কোনও অফার বা ফ্রি জিনিসের দিকে ছুটে যাওয়া। এটা থেকে নিজেকে সংযত রাখা দরকার। প্রয়োজন সবার আছে কিন্তু কোন প্রয়োজনকে পূরণ করবেন আর কোনটা তুলনামূলক অপ্রয়োজনীয় সেটা বিচার করতে না পারলে ভবিষ্যতে বিপদ আরও বাড়বে (Internet Safety Rules)।
ঠিক যেভাবে বেড়ে চলেছে জালিয়াতির ঘটনা। অনলাইন প্রতারণা নতুন কিছু নয়। তবে যেভাবে চারিদিকে সতর্কতা বাড়ছে তাই প্রতারকদের নতুন নতুন স্টাইল ঘাবড়ে দিচ্ছে সাইবার ক্রাইম সেলকেও।।ভারতে এখনও বেশিরভাগ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী অনলাইন লেনদেনের ঝুঁকি (Risks of online transactions) সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। এই সুযোগ নিয়ে প্রতারকরা বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
অনলাইনের ফাঁদ থেকে বাঁচতে মনে রাখুন এই নিয়ম:
তবে চিন্তার কোনও কারণ নেই, দৈনন্দিন জীবনে একটু সতর্ক থাকলেই প্রতারণার হাত থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব (It is possible to get rid of fraud)। কিছু বিষয় সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। এই যেমন ধরুন, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক ও অন্যান্য মেসেজিং অ্যাপে নিয়মিত বিভিন্ন লিঙ্ক পাঠান অনেকেই। এছাড়াও, ই-মেলের মাধ্যমেও বিভিন্ন লিঙ্ক আসতে থাকে।
কোনও লিঙ্ক সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত না হয়ে সেই লিঙ্কে ক্লিক করবেন না। এই ধরনের বেশিরভাগ লিঙ্কেই ম্যালওয়্যার (Malware) থাকে। যা আপনার ফোন অথবা কম্পিউটার থেকে ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেবে। সাধারণত লোভনীয় অফার অথবা লটারি জেতার নাম করে এই ধরনের লিঙ্ক পাঠায় স্ক্যামাররা। দেখবেন এই ধরনের লিঙ্কে ক্লিক করলে একটি ওয়েবসাইট ওপেন হবে।
এই ক্ষেত্রে অনেক সময় ব্যাঙ্কের ভুয়ো ওয়েবসাইট (Fake bank website) ওপেন হয়। এই ওয়েবসাইটগুলি হুবহু ব্যাঙ্কের আসল ওয়েবসাইটের মতো দেখতে। সেখানে ব্যাঙ্কিং ইউজার নেম ও পাসওয়ার্ড দিলেই তা প্রতারকদের হাতে পৌঁছে যাবে। তাই ফোন ও কম্পিউটারে যে কোনও লিঙ্কে ক্লিক করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন।
ব্রাউজারে কখনওই নিজের ব্যাঙ্কিং ও আর্থিক লেনদেন (Banking and financial transactions) সংক্রান্ত অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড সেভ করবেন না। পাসওয়ার্ড সেভ করার জন্য পাসওয়ার্ড ম্যানেজারের সাহায্য নিতে পারেন। বিনামূল্যে ও সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে সুরক্ষিত ভাবে পাসওয়ার্ড সেভ করার জন্য বাজারে রয়েছে একাধিক জনপ্রিয় পাসওয়ার্ড ম্যানেজার।
এছাড়াও ব্যাঙ্কিং অ্যাকাউন্টে কখনই সহজ পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না। লেটার, স্পেশাল ক্যারেকটার ও নম্বরের সংমিশ্রণে পাসওয়ার্ড তৈরি করুন। পাবলিক WiFi নেটওয়ার্কে কানেকটেড থাকলে ব্যাঙ্কিং লেনদেন এড়িয়ে চলুন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে লগ-ইন করার সময় পাসওয়ার্ড টাইপ করতে ভার্চুয়াল কি-বোর্ডের সাহায্য নিন।
জীবনে কখনো কখনো না শব্দটার ব্যবহার করতে হয়। সেটা এই ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রযোজ্য। ব্যাঙ্ক অথবা ক্রেডিট কার্ড বিভাগ থেকে ফোন করে কোনও পরিষেবা দেওয়ার কথা বলা হলে, তা এড়িয়ে চলুন। প্রতারকরা ব্যাঙ্ক থেকে ফোন করার নাম করে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের কে-ওয়াই-সি আপডেট অথবা ক্রেডিট কার্ডের লিমিট বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অ্যাকাউন্টের তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। তাই দিনের যে কোনও সময় কোনও ব্যাঙ্কিং পরিষেবার জন্য ফোন এলে ফোনের অপর প্রান্তে থাকা মানুষটিকে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট অথবা ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত কোনও তথ্য জানাবেন না।
এই সময় প্রতারকরা ভয় দেখানোর জন্য অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিতে পারে। এই হুমকিকে গ্রাহ্য না করে নিকটবর্তী ব্রাঞ্চের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। আজকালকার দিনে সহজেই কেউ পাসওয়ার্ড বা নম্বর দিতে চান না কিন্তু যদি গুরুতর সমস্যার কথা বলা হয় যাতে কানেকশন বন্ধ হয়ে যাবে তাহলে মানুষ ভয় পেয়ে যান।
আরো পড়ুন- People : আজকের দিনে ভাল মানুষের বড় অভাব, সৎপথে চলতে বড়ই কষ্ট হয়! কি করবেন ?
সবকিছু দুবার করে করুন। নিজের ওটিপি, পিন অথবা পাসওয়ার্ড কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। প্রতারকরা ফোন করে বিভিন্ন উপায়ে ভয় দেখিয়ে আপনার কাছ থেকে পিন, ওটিপি ও পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করবে। আপনার এক এক মুহূর্তের অসতর্কতার কারণে খালি হয়ে যেতে পারে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। তাই কোনও পরিস্থিতিতেই এই সব তথ্য কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না।
আরো পড়ুন- Education : ডিজিটাল ভারতে সত্যি কি বদলে যাবে অতীতের পড়াশোনা? কতটা নিশ্চিত শিশুদের আগামী শিক্ষা?
স্মার্টফোনে যে কোন অ্যাপ ইনস্টল করার আগে প্লে-স্টোর অথবা অ্যাপ স্টোরের রিভিউ ভালো করে পড়ে নিন। রিভিউ সন্দেহজনক মনে হলে সেই অ্যাপ ইনস্টল করা থেকে বিরত থাকুন। অ্যানড্রয়েড গ্রাহকরা প্লে-স্টোর ছাড়া অন্য কোনও উপায়ে ফোনে অ্যাপ ইনস্টল করলে বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন।
আরো পড়ুন- Uttam Kumar : মহানায়ক উত্তম কুমারের জীবনের শেষ দৃশ্যর নাটকীয় মুহূর্ত! কেমন ছিল?
তাই অন্য স্টোর ও ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা অ্যাপে আকর্ষণীয় ফিচার থাকলেও নিজের সুরক্ষার জন্য প্লে-স্টোর থেকেই অ্যাপ ইনস্টল করুন। অন্যদিকে, কম্পিউটার ও মোবাইল ব্রাউজারে এক্সটেনশন ইনস্টল করার আগে ভালো করে রিভিউ দেখে নিন।
আরো পড়ুন- cake business : বাড়িতে কেক বানিয়ে দু মাসেই হয়ে যান লাখপতি! নেশাকে পেশা বানান সহজেই
আজকাল অনেক ক্ষেত্রেই অনলাইনে অ্যাকাউন্ট তৈরির জন্য ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। ফেসবুক অথবা গুগল অ্যাকাউন্টের মাধ্যমেই অনেক ওয়েবসাইটে লগ ইন করা সম্ভব। আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে এই ধরনের লগ-ইন এড়িয়ে চলুন।
আপনি সজাগ হলে পালাবার পথ পাবে না প্রতারকরা। তাই সবকিছু যুক্তি দিয়ে ভাবুন। মনে রাখবেন লোভে পাপ পাপে মৃত্যু , ফাঁদে পা দেবেন না।