Breaking Bharat: বড়লোক ফুলে ফেঁপে উঠছে আর গরিবরা মাটিতে মিশে যাচ্ছে, মাপ দণ্ড কিন্তু সেই টাকা! কেউ বড়লোক কেউ গরিব (Rich and poor), কিন্তু মাঝামাঝি থাকার উপায় আদৌ রইল কি? বিশ্বের নয়া সমীকরণ এক চাঞ্চল্যকর তথ্য চোখের সামনে তুলে ধরছে। করোনা পরবর্তী অর্থনীতি কালে বড়লোক আরো বেশি করে বড়লোক হয়েছে উল্টো ঘটনা গরিবদের সাথে (Disparity between rich and poor)।
ছোটবেলায় বাংলা বইতে কয়েকটা লাইন পড়েছিলাম আমরা ,
“উত্তম নিশ্চিন্তে চলে অধমের সাথে
যিনি মধ্যম তিনি চলেন তফাতে”
সেই তখন থেকেই আমাদের এই সত্যিটা বোঝা শুরু হয়ে গেছিল, যে সমাজে দুটি শ্রেণী থাকবে এক বড়লোক দুই গরিব লোক। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত এই দুইয়ের মাঝে জায়গা না পেয়ে মাঝামাঝি একটি শ্রেণি নিজেদের মতো করে জীবন গড়তে শুরু করে তারাই আজ মধ্যবিত্ত (middle class family)।
অতিমারী যেন প্রমাণ করে দিল বড়লোক আর গরিব লোক!
সব থেকে সমস্যাই এরাই পড়েন। ওপরে উঠতে পারেন না নিচে নামতে পারেন না। এত দূর পর্যন্ত যেভাবে চলে আসছিল ২০২০ সালে করোনা ভাইরাস সেইসব ছক উলটপালট করল। বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া অতিমারী যেন প্রমাণ করে দিল বড়লোক আর গরিব লোক, গোটা পৃথিবী এই দুটো ভাগেই বিভক্ত থাকবে।
আজ মেরুকরণের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু তো অর্থনীতি, মানে টাকা। একশ্রেণি ফুলে ফেঁপে উঠছে আর একশ্রেণী মাটিতে মিশে যাচ্ছে। মাপ দণ্ড কিন্তু সেই টাকা। বিশ্বের নয়া সমীকরণ এক চাঞ্চল্যকর তথ্য চোখের সামনে তুলে ধরছে। করোনা পরবর্তী অর্থনীতি কালে বড়লোক আরো বেশি করে বড়লোক হয়েছে উল্টো ঘটনা গরিবদের সাথে (Disparity between rich and poor)।
ভারতবর্ষে প্রথম ২১ দিনের পূর্ণ লকডাউন। করোনার থাবাটা এভাবেই গালে এসে লেগেছিল। গোটা বিশ্বজুড়ে এই এক সিদ্ধান্তে কোনও না কোনও ভাবে কখনো না কখনো দেশের চালকদের হাঁটতে হয়েছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা ভাইরাসে সারা বিশ্বের অর্থনীতিতে যখন বিপর্যয়কর অবস্থা,
তখন বিশ্বের ১ হাজার শীর্ষ ধনী এই মহামারি চলাকালেও মাত্র ৯ মাসে তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিয়েছেন। তবে করোনার অর্থনৈতিক প্রভাব কাটিয়ে উঠতে বিশ্বের কয়েকশো কোটি দরিদ্র মানুষের এক দশকের বেশি সময় লেগে যেতে পারে। দিন আনা, দিন খাওয়া মানুষ কিছু বাড়তি বোঝা নিজেদের ঘাড়ে চাপাতে বাধ্য হয়েছেন। জীবনে এসেছে, মাস্ক স্যানিটাইজার এর মত বাড়তি কিটস।
একদম এইসব কিনতে কিনতে নিঃস্ব হয়ে গেলেন আর এক দল এইসব তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে ক্রমাগত টাকার গদিকে আরো চওড়া আর মোটা করে ফেললেন। ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে ধার পেলেন না কারণ বড় বড় মুনাফা লোভী ব্যবসায়ীদের ধারের পর ব্যাংক আর ঋণ দেওয়ার মতো সামর্থক পেল না।
এটা কি দাঁড়ালো টাকার পর টাকা নিয়ে তা ফেরত না দিয়ে কেউ দেশ ছাড়লেন কেউবা পুরোপুরি গায়েব হয়ে গেলেন পৃথিবী থেকে। সুইস ব্যাংক ফুলল টাকায়, আর গরিবের মানিব্যাগ ক্রমাগত ছিঁড়তে ছিঁড়তে এক হতদরিদ্র দশার সাক্ষী হল।কারণ দেশে দেশে বাড়ছে ঋণের বোঝা। শুধু দরিদ্র দেশ নয়, এই মহামারির সবচেয়ে বড় ভার বইতে হচ্ছে দরিদ্র মানুষকে (poor people)।
আরো পড়ুন- childhood : অতীতের ছোটবেলা! আমাদের গেছে যেদিন একেবারেই কি গেছে? কিছুই কি নেই বাকি তার?
গত বছরের অক্টোবর মাসে বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী সারা পৃথিবীতে ১১ কোটি ৫০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে ছিল। এ সংখ্যা ১৫ কোটি হতে পারে বলে তখন ধারণা করা হয়েছিল। ধনী ব্যক্তিরা তাদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারলেও বিপাকে পড়েছে নিম্ন আয়ের সাধারণ জনগোষ্ঠী।
আরো পড়ুন- Sinthir Sindur : সিঁদুর বিবাহিত মহিলার প্রতীক! সিঁথির এই সিঁদুরে, সবকিছু যেন বদলে গেল!
আয় কমে যাওয়ায় নতুন করে দরিদ্র হয়ে পড়ছে স্বল্প আয়ের মানুষ (Low income people are getting poorer)। করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় সরাসরি এর প্রভাব পড়ল ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প, অসংগঠিত ক্ষেত্রে। কিন্তু বড় পুঁজিপতিরা নতুন করে লাভবান হলেন কারণ তারা হারানোর মতো কিছুই পাননি।
আরো পড়ুন- Dog crying : বাড়ির পাশে কুকুর কাঁদে? অচিরেই অমঙ্গল ঘটার ইঙ্গিত পেলেন?
করো না কালে স্যালারি অর্ধেক হয়েছে কিন্তু জিনিসপত্রের যোগান না আসায় দাম বেড়েছে। এবার সাধারণ মানুষ না খেয়ে তো আর বেঁচে থাকার লড়াইটা করতে পারবেন না। ফলে বেশি টাকা দিয়ে জিনিস কেনার জেরে সমৃদ্ধ হয়েছেন সেই বিক্রেতারা ,কিন্তু ক্রেতারা ক্রমাগতই অসহায় হয়ে পড়েছেন।
আরো পড়ুন- Safety pin : খুব দরকারি জিনিস সেফটিপিন! যা ধার শোধ করতে গিয়ে আবিষ্কার হয়েছিল সেফটিপিনের?
এই ভারসাম্য সম্পূর্ণ হলুদ-পালট হয়ে যাওয়ায় স্বভাবতই কিছু মানুষের পকেটে প্রচুর টাকা। আর কিছু মানুষের পকেট একেবারেই ফাঁকা। একটা মহামারী যা ধনী এবং গরিবের বৈষম্যকে মধ্যবিত্ত শ্রেণি ব্রিজ হয়ে ঘুচিয়ে দেওয়ার যে চেষ্টা করেছিল তাকে অনেক বড় করে তৈরি করে সমাজের বুকে ক্ষতচিহ্ন সৃষ্টি করল।