Breaking Bharat: খুব দরকারি জিনিস সেফটিপিন (Safety pin)! যা ধার শোধ করতে গিয়ে আবিষ্কার হয়েছিল সেফটিপিনের? যখন তখন যেখানে সেখানে হঠাৎ করেই প্রয়োজন পড়ে, সূচালো পিন আপনাকে সেফ রাখে। জানেন ধার শোধ করতে গিয়ে সেফটি পিন এর আবিষ্কার?
আপনার প্রতিদিনের জীবনযাত্রায় আবশ্যকীয় কিছু জিনিসের প্রয়োজন পড়ে। যেগুলো দেখতে নগণ্য হলেও তার কার্যকারিতা অস্বীকার করা সম্ভব নয়। সেরকমই খুব কাজের এবং দরকারের একটা জিনিস হল সেফটিপিন। প্রতিদিন একে নানাভাবে ব্যবহারের ফাঁকে আমরা হয়তো এর আবিষ্কার বা জন্মের ইতিহাসের দিকে তাকাই না। আজকের প্রতিবেদনে এই সেফটি পিন নিয়ে কথা।
সেফটিপিন কিভাবে আবিষ্কৃত হয়েছিল? (Safety pin):
নামের মধ্যেই সেফ অর্থাৎ সুরক্ষিত থাকার কথা। মানে বুঝতেই পারছেন বিপদের সময় আপনাকে রক্ষা করে। এখন এই বিপদ কেমন বা কত ধরনের হতে পারে তার সম্পর্কে একটা সাধারণ আইডিয়া আপনার আছে। মনে রাখবেন সেফটিপিন কিন্তু খুবই জরুরি জিনিস।
শাড়ির সঙ্গে ব্লাউজের মেলবন্ধন করতে, শালোয়ারের সঙ্গে ওড়না আটকানোর ক্ষেত্রে, চলতি ভাষায় যাকে বলে পিন করা এই ক্ষেত্রে সেফটিপিনের গুরুত্ব অপরিসীম (importance of safetypin is immense)। সে কারণেই সেফটিপিনের আদি নাম ছিল, ‘ড্রেস পিন’। আজকে এর অতীত ঘেঁটে সূত্র বের করার চেষ্টা।
সেফটিপিন কে আবিষ্কার করেছিলেন?
আপনি শুনলে হয়তো অবাক হবেন কিন্তু জানেন কি এই সেফটিপিন আবিষ্কার হয়েছিল প্রায় একশ বাহাত্তর বছর আগে। তিনের দশকে ইউরোপে আভিজাত্যের প্রতীক ছিল সোনালি রঙের সেফটিপিন। সে ক্রমে হয়ে ওঠে ফ্যাশনজগতের আইকন। ১৮৪৯ সালে আমেরিকায় বিখ্যাত যন্ত্রকৌশলী ওয়াল্টার হন্ট (Walter Hunt) সেফটিপিন আবিষ্কার করেন।
অবশ্য আজকালকার যুগে যেভাবে ব্যবহার করা হয়, ঠিক সেই রকম ভাবনা মাথায় রেখে এর আবিষ্কার হয়নি। ওয়াল্টার নিজের ধার শোধ করার জন্য এর আবিষ্কার করেছিলেন। শুনে হকচকিয়ে গেলেন বুঝি? কিন্তু এটাই সত্যি। জানতে ইচ্ছে করছে নিশ্চয়ই ইতিহাসটা? এবার তাহলে বলে ফেলা যাক।
সেফটিপিন আবিষ্কারের গল্প (Safety pin):
আসলে যিনি আবিষ্কার করেছিলেন সেই ওয়ালটার একবার ঋণের ভারে জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন। কিছুতেই ধার শোধ করবেন কিভাবে বুঝতে পারছিলেন না। আসলে তার বন্ধুর থেকে ধার নেওয়া টাকা শোধ দিতে না পারায় বন্ধু তাগাদা করছিলেন। কি করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না তিনি।
ওয়াল্টারের ছোটখাটো জিনিসের উদ্ভাবন ক্ষমতা ছিল। মাঝে মধ্যেই ঝোঁকের বশে নানা জিনিস বানাতেন। একদিন তিনি ভাবছিলেন, কীভাবে ধার শোধ করা যায়। তাহলে কি কিছু বানিয়ে কোনও ভাবে টাকা জোগার করা সম্ভব? হাতে তো কিছুই নেই, নতুন কিছু উদ্ভাবনের চেষ্টা করবেন কি!
আরো পড়ুন- My childhood : ফিরিয়ে দাও আমার সেই ছোটবেলা! ফেলে আসা দিন আর মুহূর্তরা কখনো কি ফের দেবে ধরা?
যদি নতুন কিছু বানিয়ে সেটা বিক্রি করে খানিক অর্থ সংস্থান হয়, মন্দ হয় না। এইসব সাত পাঁচ ভাবনার মধ্যেই লম্বা তারের টুকরো আড়াআড়ি দুবার বাঁকালেন, মাথায় পরালেন একটা খাপ, যাতে গায়ে ফুঁটে না যায়। অর্থাৎ পিন কিন্তু সেফ। ব্যস, তৈরি হল সেফটিপিন (safety pin uses)।
আরো পড়ুন- Divorce : ডিভোর্সের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে সম্পর্ক? শেষ সুযোগ সম্পর্ক বাঁচানোর? কী করবেন?
তবে আবিষ্কার করলেই তো হল না, তাকে বিক্রী করতে হবে না হলে টাকা আসবে না।। ১৮৪৯ সালের ১০ই এপ্রিল তিনি পেটেন্টের জন্য আবেদন করেন। সেই পেটেন্ট বিক্রি হল ৪০০ ডলারে। ধার শোধ তো হলই। কিছুদিনের মধ্যেই সেফটিপিনের বাণিজ্যিক ভাবে উৎপাদন শুরু হল ওয়াল্টার হয়ে উঠলেন লাখ লাখ ডলারের মালিক।
আরো পড়ুন- Everyone rich man : সবার হাতে প্রচুর টাকা, কেউ আর গরিব নয়! হঠাৎ করে সবাই বড়লোক হলে কী হবে?
যে বন্ধুর থেকে ওয়াল্টার ধার করেছিলেন, নির্ধারিত পনেরো ডলার শোধের সময়, তিনি সঙ্গে দিয়েছিলেন একটি সেফটিপিন। তবে এই আবিষ্কার নিয়েও মতানৈক্য আছে। খ্রিস্টপূর্ব ১৩০০-১৪০০ শতকে, গ্রীসের পেলোপন্নিয়াসরা ব্যবহার করত ফিবুলা নামের এক ধরনের ব্রোচ বা রূপককাঠি। যেটিকে সেফটিপিন এর পূর্বসূরী হিসেবে ইতিহাসে স্বীকৃত। হোমারের লেখা ‘ওডিসি’ মহাকাব্যে লিখেছিলেন কাপড়ে ব্যবহৃত পিনের কথা। সেটার রং ছিল সোনালি।
এভাবেই তৈরি হলো ইতিহাস। এমন একটা আবিষ্কার যা বদলে দিল আমাদের জীবনযাত্রা। আর এভাবেই সেফটি পিন জায়গা করে নিল জীবনে। আর চির সঙ্গী হয়ে গেল আমাদের।