Breaking Bharat: ভার্জিনিটি নিয়ে ভ্রূ কুঁচকান? বিয়ের বাজারে কুমারী মেয়ের কদর কেন বেশি? মাথায় সিঁদুর না উঠলে কুমারীত্ব হারানো পাপ? (Virginity Test)
নারী মানেই সৃষ্টির ধারক বাহক। কিন্তু নারীর পরিচয় কি শুধুই তার শরীর সর্বস্ব? নারীত্ব হারানো মানে একটা মেয়ের জীবনে সব শেষ? কেন এই কথা, কারণ একটা মেয়ের জীবনের দুটো পর্যায় আছে বলে এই সমাজ বিশ্বাস করে। একটা অংশ হল কুমারী আরেকটা হল বিবাহিত।
একেই ইংরেজি ভাষা প্রয়োগ করে বলবেন ভার্জিনিটি। একটা কাজ করা যাক এই বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক কারণ সভ্য সমাজে আজও এই ঘটনাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। তাহলে কুমারীত্ব একটু খোলসা করে আলোচনা করা দরকার।
কুমারীত্ব কী? (Virginity Test):
নারী দেহের যোনিদ্বারের সামান্য ভেতরে হাইমেন নামে একটি পাতলা ঝিল্লি বা পরদা থাকে। সেটি যদি অক্ষত থাকে তার মানে আপনি কুমারী! আর এই পর্দা বিচ্ছিন্ন হয় শারীরিক সংযোগে। সাধারণত মনে করা হয় পুরুষের সঙ্গে শারীরিক মিলনে প্রথমবারে এই যোনিদ্বারের পরদা ছিন্ন হয়! তাহলে বুঝতেই পারছেন একমাত্র পুরুষের সঙ্গে শারীরিক মিলনে এই ঘটনা ঘটে।
এমনটা হলে সামান্য রক্তপাত হয়। আর তথাকথিত আপন জন অর্থাৎ সম্পর্কে জড়িয়ে থাকা মানুষ যেন সেই দেখেই বুঝতে পারেন যার সঙ্গে সে মিলনরত সে কুমারী? না পূর্বেও কারোর সঙ্গে সে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে? অর্থাৎ এক ফোঁটা রক্ত নারীর চরিত্র আর জীবনের দিশা নির্ধারণ করে, এই হল সমাজ। অথচ এটা একটা ধারণা ছাড়া আর কিছু নয়। এতে বিবাহিত জীবনে কিছু প্রভাব পড়ে না।
কোনও মেয়ে যদি বিয়ের আগে কুমারীত্ব হারিয়ে ফেলে, তবে কি তা আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব?
এটির আসল উত্তর ছিল: কোনও মেয়ে যদি বিয়ের আগে কুমারীত্ব হারিয়ে ফেলে তবে কী তা আবার ফিরিয়ে আনা সম্ভব?সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো এটি থাকা বা না থাকাতে শারীরিক আনন্দের তেমন কোনো হেরফের হয় না। বরং প্রথমবার মিলনে উভয়েরই সামান্য ব্যথা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কারণ শরীরের কোনও একটি অংশ বা মাংস পেশী যদি ছিঁড়ে যায় তাহলে তার ব্যথা তো হবেই। কিন্তু এই যে পুরুষতান্ত্রিক সমাজ তারা হয়তো এই যন্ত্রণার শব্দ শুনে প্রসন্ন হতে চায়। আসলে যৌন কামনা পূরণে পুরুষ চায় নিজের তৃপ্তি, নারীও মিলনের পূর্ন আনন্দ পেতে চায়।
রক্তের দাগ বলে নারীর পবিত্রতা কতটা?
কিন্তু এই দুই এর মাঝে সমাজ আর পরিবার চায় বাড়ির বউ এর হাইমেন ছিঁড়তে গেলে যেন তার স্বামীর কারণেই তা হয়। যে কারণে ফুলশয্যার চাদর আজও সাদা রাখা হয় যাতে রক্তের দাগ বলে নারীর পবিত্রতা কতটা?
কিন্তু এই সমাজের বুকে প্রশ্ন তুলে জানতে চাই, ঠিক কতটা রক্ত ক্ষরণ হলে পবিত্রতার প্রমাণ দেওয়া যাবে সমাজকে? যে নারী পুরুষের বিকৃত মস্তিষ্ককে শিকার, নারকীয় অত্যাচারের সাক্ষী যে নারীদেহ তাকেও সূচিতা প্রমাণ করতে সাদা চাদরের উপর নগ্ন হয়ে পুরুষাঙ্গের অপেক্ষা করতে হবে যাতে , শক্তির আস্ফালনে রক্তাক্ত হতে পারে সে? তবে গিয়ে প্রমাণ মিলবে?
দুর্ভাগ্য হলেও এটাই সত্যি যে সাহিত্যে, কাব্যে , লোকাচার করে যতই নারীকে সম্মান দেওয়ার, দেবত্বের আসনে বসানোর আদিখ্যেতা করা হোক,আসলে সে আজও একটা শরীর, আর মাংস পিন্ড। ওই বাজারের বা দোকানের দ্রব্যাদির মত যাকে নিয়ে তুল্য মূল্য বিচার করে এই সমাজ আর নিকৃষ্ট মানসিকতা।
আরো পড়ুন- Broken Marriage : নীল ছবির কারণে বিয়ে ভাঙছে ? সুখী দাম্পত্যে থাবা বসাচ্ছে পর্ন! তাহলে উপায় ?
আসলে বিয়ের প্রথম রাতে হাইমেন ছেদ করার মানে যেন অনেকটা ফিতে কেটে দ্বারোদঘাটনের মতো! ওই যে স্ত্রীর জীবনে একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ এটা ভেবে নেওয়ার অহংকার পুরুষকে আত্ম তৃপ্তি দেয়। আসলে এই ভাবনা যে তাঁকে মানসিক ভাবে পঙ্গু করে তুলছে, তা সে বুঝতেও পারে না।
ভার্জিনিটি ফিরে পাওয়ার উপায় (virginity test cost):
অনেকে আবার কুমারীত্ব হারিয়ে (যদিও এতে হারানো বলে কোনও ব্যাপার নেই) , ফের বিয়ের আগেই নিজেকে অক্ষত প্রমাণের চেষ্টায় শত শত বার ক্ষত বিক্ষত হয়। চল্লিশ মিনিটের একটি অস্ত্রোপচার দ্বারা এটি করা হয়ে থাকে। যোনির ভেতরে একটি নকল মেমব্রেন বসিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের আগেই মিলনের ফলে যাদের সতীচ্ছদ ছিন্ন হয় তারা এর সাহায্য নেয়। বা বলা যেতে পারে এই পদ্ধতির কথা ভাবতে বাধ্য হয় (virginity test for female)।
আরো পড়ুন- Ratan Tata : রতন টাটা মানেই আদর্শ, টাটা কোম্পানির কর্ণধার। তিনিই বহু মানুষের অনুপ্রেরণা
প্রথম শারীরিক মিলনের রাতে মেয়েটিকে রক্তাক্ত হতেই হবে— এ সংস্কার শুধুই তৃতীয় বিশ্বের নয়, বরং অনেক উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশই এই ‘ট্যাবু’ বহন করে এসেছে যুগের পর যুগ। কখনও সরাসরি, কখনও ঘুরপথে। বিভিন্ন সময়ে নানা ধর্মীয় ভাবাবেগ ও কুসংস্কারকে শিখণ্ডী করে এমন প্রথাকে ‘নিয়ম’ বলে দেগে দিয়েছে সমাজের একাংশ (simple virginity test at home)।
আরো পড়ুন- Maldives tour : সেলেবদের মত ছুটিতে মরিশাস বা মলদ্বীপ যেতে চান? মাত্র ১ লাখে এবার মলদ্বীপ ভ্রমণ!
ভারতেও প্রত্যন্ত নানা অঞ্চলে তো বটেই, এমনকি, শহুরে জনজাতিরও কারও কারও মনের অন্দরে ঘাপটি মেরেছিল এমন বর্বর প্রমাণ দেওয়ার খেলা। আপনি কি জানেন যৌন মিলন না হলেও অতিরিক্ত সাইকেল চালালে বা নৃত্য শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকলে বা ক্রীড়া জগতে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী নারীর হাইমেন ছিন্ন হতে পারে। কিন্তু চোখে চশমা পরে থাকা সমাজ আদৌ তা বুঝবে? বরং প্রমাণ দিতে হবে আরও।