Breaking Bharat: মেয়েরাই বাবাদের নয়ন মনি। কেন কন্যা সন্তান বাবাদের বড়ই প্রিয়? মেয়েকে (Daughter) কেন মা বলেন বাবা ? পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পর্ক সন্তান আর বাবা-মায়ের মধ্যে। এখানে বিশেষ করে বলতে হয় বাবা আর মেয়ের সম্পর্কের কথা। আসলে বাবারা বরাবর চায় তাদের কন্যা সন্তান হোক। এই সমাজে কন্যা সন্তান হয়ে জন্ম নেওয়ার অনেক জ্বালা। কন্যা সন্তানের জনক (Father of a daughter) হওয়াও মুখের কথা নয়।
তবুও বাবারা ভাবেন না এসব কিছুই । তারা মেয়ের মধ্যেই খুঁজে পান মাকে। এই তো মেয়েরাই বাবাদের নয়ন মনি। এই সম্পর্কটার কোনও নাম নেই কারণ অনুভূতিটার কোনও ভাষা নেই শুধু আছে মনের টান।সন্তান ভূমিষ্ঠ হয় বাবা এবং মায়ের দুজনের ইচ্ছায় ভালোবাসায়।
কেন কন্যা সন্তান বাবাদের বড়ই প্রিয়?
আর সেই সন্তান কন্যা রূপে পৃথিবীর আলো দেখলে, জন্মের সাথে সাথেই সে কাঁদলেও বাবার মুখে একগাল হাসি। যেন পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সম্পদ পেয়ে গেছেন বাবা। এই দেখে যন্ত্রনা ভুলে চোখের জল মুছেন গর্ভধারিনী মা-ও। আসলে বাবাদের কাছে কন্যা সন্তান বড়ই প্রিয় (Daughters are very dear to fathers)।
মা সম লিঙ্গের হলেও বাবার সঙ্গেই সখ্যতা বাড়ে কন্যাদের। আবদার, আদর সবটাই বাবাকে ঘিরে। বাবা তার নিজের মেয়ের মধ্যে মাকে খুঁজে পান। যে মা তাকে স্নেহ দিয়ে বড় করেছেন সেই স্নেহ আর ভালোবাসার টান নিবিড় হয় কন্যা সন্তানের সঙ্গে (Father daughter love)।
মেয়ে অসুস্থ হলে বাবার মাথার ঠিক থাকে না। মেয়েকে একদিন পরের হাতে তুলে দিতে হবে ভাবলে অন্তরে কেঁদে ওঠেন বাবা। যে মেয়েটাকে তিল তিল করে বড় করলেন সে আজ অন্যের ঘরে অন্যের বাড়িতে কেমন থাকবে? এটা ভাবতে ভাবতেই চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেক বাবা।
তবু সমাজের রীতি মেনে কন্যাদায়গ্রস্ত বাবাকে নিজের সন্তানের হাত দিয়ে দিতে হয় অন্য এক পুরুষের হাতে। সেই মেয়েও যেন তার স্বামীর মধ্যে খুঁজতে চায় বাবার স্পর্শ। সে অসুস্থ করে বাবা যেমন মাথায় হাত বুলিয়ে দিত সে চায় স্বামীও যেন সেই স্নেহটুকু বজায় রাখে। প্রত্যেক মেয়ের জীবনে তার প্রথম সুপারহিরো তার বয়ফ্রেন্ড না স্বামী নন, তার বাবা। মেয়ের মাঝেই, বাবা তাঁর মায়ের মুখখানি দেখতে পান, মেয়ে যেন মায়েরই হুবহু প্রতিচ্ছবি (Father and daughter relationship)।
বাবা আর কন্যা সন্তানের সম্পর্ক অমলিন চিরন্তন:
অনেকে বলেন এইসবের পেছনে হয়তো বিজ্ঞান কাজ করে। কথায় আছে সমমেরু বিকর্ষণ করে আর বিপরীত মেরু আকর্ষণ করে। বিষয়টা এরকমই ছেলেরা মেয়েদের পছন্দ করে মেয়েরা বিপরীত লিঙ্গকে। অনেকে যুক্তি দিয়ে বলেন স্বভাবতই বাবাদের পছন্দের জায়গায় সেক্ষেত্রে কন্যা সন্তান আসাটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এই পরশ আর অনুভূতিটা, সম্পর্কের টান একমাত্র বাবা আর তার মেয়েই বুঝতে পারে ।
বাকি সমাজ বা বিজ্ঞানের পক্ষে সেটা নিয়ে কোনও যুক্তি দেওয়া সম্ভব নয়। মেয়েটাকে যখন এক পা দু পা করে হাঁটতে শেখায় বাবা তখন একটা আনন্দ তার চোখে মুখে ফুটে ওঠে। আবার বয়স কালে সেই মেয়েই হাত ধরে বাবাকে নিয়ে যায় । যেন ভালোবাসার শক্ত এক অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায়। আগে যদিও মনে করা হতো একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর মেয়েকে অন্যের ঘরে পাঠাতে হয় মা বাবাকে।
আরো পড়ুন- Tanah Lot Temple : মন্দির আটকে রাখে সাপ, মন্দিরে প্রবেশ করতে লাগে ৬০ হাজার টাকা!
সেই মতো চোখের জলে ভাসিয়ে মেয়ে ছাড়ত পিতৃ গৃহ। সমাজ তাকে শিখিয়েছিল বাবার দেওয়া পরিচয়টুকু মুছে ফেলতে। তবু নতুন ঘর নতুন বর নতুন একান্ত আপন এক মানুষকে পেয়েও নির্দ্বিধায় সেই মেয়েই অকপটে জবাব দিত, তার জীবনের শ্রেষ্ঠ পুরুষ তার বাবা সুপার হিউম্যান। যেভাবে বাবার কাঁধে মাথা রাখতে পারে মেয়ে সেভাবে স্বামীর কাঁধেও সেই পরস খোঁজে সে।
আরো পড়ুন- Srabanti Chatterjee : অভিনেত্রী শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় কেন বারবার বিয়ে করেন ?
যদিও জৈবিক চাহিদার কারণে সেটা সব সময় হয়ে ওঠেনা তাই বাবার বিকল্প কন্যা সন্তানের জীবনে আর কেউ নেই। বাবা তাই আদরে মেয়েকে মা বলে ডাকে। তার বয়স এক মাস হোক বা এক বছর বা ১০ বছর কিংবা ৪০ বা ৫০। বাবা চিরটা কাল তার মেয়েকে হাসিখুশি দেখতে চায়। পৃথিবীর সব থেকে নিষ্পাপ এই সম্পর্ক ইদানিংকালে কলঙ্কিত হয়েছে কিছু বিকৃত মানসিকতায়।
আরো পড়ুন- Butterfly: বিয়ের কার্ডে ‘শ্রীশ্রী প্রজাপতয়ে নমঃ’ কেন লেখা থাকে? প্রজাপতির ভূমিকা কী?
কিন্তু যা কিছু খারাপ তা ব্যতিক্রম হতে পারে উদাহরণ নয়। সত্যি এটাই , বাবা এবং মেয়ের কেমিস্ট্রি পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর এবং সেরা সম্পর্কের অন্যতম রসায়ন। যার সঠিক ব্যাখ্যা এ বিশ্বের কোন কেমিক্যাল ল্যাবই যুক্তি দিয়ে করতে পারে না। বাবা আর কন্যা সন্তানের সম্পর্ক অমলিন চিরন্তন।