Breaking Bharat: (শ্রেষ্ঠ বাঙালি নারীর তালিকা) নারী শক্তির ধারক বাহক ! সভ্যতাকে এগিয়ে নিয়ে যায় নারী। সর্বকালের শ্রেষ্ঠ কোন নারী জানেন কি? আজ এই প্রতিবেদনে বাঙালিদের কথা। বাংলায় বাঙালি হয়ে বেশ আনন্দে আছি আমরা । তাই আগেই বলা ভালো যে আমি গর্বিত আমি বাঙালি।
তাই প্রতিবেদনে বাঙালি নারীদের নিয়ে কিছু বলার চেষ্টা। এই পৃথিবীর যা কিছু সৃষ্টি করেছেন ঈশ্বর, অর্ধেক তার করেছে নারী অর্ধেক নর। তাই সমাজে হোক কিংবা সংসারে, খেলাধুলায় হোক কিংবা রাজনীতিতে, ঘর কন্যা হোক কিংবা সিনে দুনিয়া – নারী দাপটের সঙ্গে নিজেকে আগেও প্রতিষ্ঠিত করেছে এবং আগামীতেও করবে।
যদি সর্ব কালের শ্রেষ্ঠ বঙ্গ নারীর তালিকা (List of best Bengali women) তৈরি করতে যাই তাহলে বোধ হয় বিপাকে পড়তে হবে। কারণ গৃহের অন্দর থেকে দেশের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে গেছেন যে সমস্ত বঙ্গ নারী, তাদের কথা সাহিত্যে কিংবা শাস্ত্রে কোথাও উঠে আসেনি। তাই স্বভাবতই তাদেরকে সামনে আনার কোনও উপায় নেই। তাই বলে তাদেরকে ভুলিনি আমরা। বাঙালি মমনে সেই মহীয়সী নারীদের কথা আরও একবার মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা।
একটা সময় ছিল যখন সমাজ অশিক্ষা আর কুশিক্ষার বেড়াজালে আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা ছিল। তখন সবার আগে এগিয়ে এসে ঠিক আর ভুলকে চিনতে শিখিয়ে ছিলেন বেগম রোকেয়া। বাঙালি সমাজ যখন ধর্মীয় প্রতিবন্ধকতা আর সামাজিক কুসংস্কারে আচ্ছন্ন ছিল, সেই সময় বেগম রোকেয়া (Begum Rokeya) বাংলার মুসলিম নারী সমাজে শিক্ষার আলো নিয়ে এসেছিলেন।
এই বিষয়ে রানী রাসমনির (Rani Rashmoni) কথা বলতে হয়। সেই সময় দাড়িয়ে রাজ পরিবারে একজন মহিলার কতটা অধিকার এবং দায়িত্ব থাকতে পারে, তিনি কতটা প্রজাবৎসল হতে পারেন, তার পরিচয় দিয়েছিলেন রানী রাসমণি।কলকাতার জানবাজারের বাসিন্দা প্রসিদ্ধ মানবদরদি জমিদার।
তিনি দক্ষিণেশ্বর কালীবাড়ির প্রতিষ্ঠাত্রী এবং রামকৃষ্ণ পরমহংসের অন্যতমা পৃষ্ঠপোষক। রাণী রাসমণি তার বিবিধ জনহিতৈষী কাজের জন্য খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। শ্রীরামকৃষ্ণ নিজেই দুহাত ভরে আশীর্বাদ করে গেছেন রানীমাকে।
এবার পরাধীন ভারতবর্ষের ছবিটা আপনার সামনে তুলে ধরা যাক। যখন বিপ্লব ছড়িয়ে পড়ছে চারিদিকে, ভারতের সাহসী যুবকরা দেশপ্রেমিক হয়ে আত্মবলিদান দিতে এগিয়ে আসছে ঠিক তখনই নাম উঠে এলো মাতঙ্গিনী হাজরার (Matangini Hazra)।
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী যেসব মহান বিপ্লবী নেত্রী ছিলেন তাদের মধ্যে গান্ধী বুড়ির নাম সবার আগে উঠে আসে। তাই যদি বঙ্গতনয়া বা বাঙালি নারী চরিত্রের কথা বলা হয় তাহলে শ্রেষ্ঠত্বের তালিকায় তিনি আছেন।
আরেক লরা খুব বিপ্লবী নেত্রী হলেন প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার (Pritilata Waddedar)। স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নারী মুক্তিযোদ্ধা ও প্রথম বিপ্লবী মহিলা শহিদ। মাষ্টারদা সূর্য সেনের অন্যতম সহযোদ্ধা, প্রীতিলতা ছাত্রাবস্থাতেই বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার সূত্রেই জড়িয়ে পড়েন ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে।
চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠনে তার ভূমিকা চোখে পড়ার মতো। ঠিক এখানেই উঠে আসে আরও একটি বৈপ্লবিক নাম কল্পনা দত্ত। প্রীতিলতার সঙ্গী বলা যেতে পারে সহ যোদ্ধা হিসেবেই মাস্টারদার কাজকে এগিয়ে নিয়ে গেছিলেন তিনি।বৃটিশ যুগের স্বদেশ চেতনায় জীবনকে ঝুঁকি নেওয়া বিপ্লবী অগ্নিকন্যা কল্পনা দত্ত সশস্ত্র বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাসে একটি চিরস্মরণীয় নাম।
আরো পড়ুন- Titanic : টাইটানিককে বাঁচানো যেত কি? কাছের তিন জাহাজ কেন বাঁচালো না টাইটানিককে?
১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেসের সম্পাদিকা বীণা দাস এর কথা আলাদা করে বলতে হয়। পরাধীন ভারত কে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে স্বাধীন করার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি।১৯৩২ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এর সমাবর্তনে বাংলার ব্রিটিশ গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনের উপর পিস্তল দিয়ে গুলি চালান। এই হত্যা প্রচেষ্টা চালানোর কারণে ৯ বছর কারাবরণ করেন বীণা দাস।
আরো পড়ুন- Tunnel way : কখনও সুড়ঙ্গ পথে হেঁটেছেন? লালবাগ কেল্লার রহস্যে ঘেরা সুড়ঙ্গে কী আছে?
এবার বলি বাসন্তী দেবীর (Basanti Devi) কথা। তিনি ছিলেন ভারতীয় উপমহাদেশের ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের একজন ব্যক্তিত্ব ও অগ্নিকন্যা। ব্রিটিশ কারাগারে কারারুদ্ধ প্রথম স্বাধীনতা সংগ্রামী নারী হিসেবে তার নাম চিরস্মরণীয়।
শুধু স্বাধীনতা সংগ্রামী নয় দেশের চিকিৎসা শাস্ত্রে কিংবা ধর্মে কিংবা সাহিত্যেও বঙ্গ নারীদের অবদান অনস্বীকার্য। প্রথিতযশা জৈব রসায়নবিদ ও উদ্ভিদ রসায়নবিদ হিসেবে অসীমা চট্টোপাধ্যায় কে অনেকেই হয়তো চেনেন।
আরো পড়ুন- What is knowledge? জ্ঞান কাকে বলে? তবে কি ডিগ্রি অর্জন করতে পারলেই হবে?
তিনি ভিঙ্কা অ্যালকালয়েডের (নয়নতারা থেকে প্রাপ্ত উপক্ষার) গবেষণা করেন এবং ম্যালেরিয়া ও মৃগীরোগের ঔষধ প্রস্তুত করেন।সাম্প্রতিককালের অন্যতম সেরা কথাসাহিত্যিক ও মানবাধিকার আন্দোলনকর্মী মহাশ্বেতা দেবী।
তিনি পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, মধ্যপ্রদেশ ও ছত্তীসগঢ় রাজ্যের আদিবাসী উপজাতিগুলির (বিশেষত লোধা ও শবর উপজাতি) অধিকার ও ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করেছিলেন। তাঁর জীবনকে কেন্দ্র করে অতি সম্প্রতি একটি চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে।
আরো পড়ুন- ভুঁড়ি বাড়ছে? কী করবেন? মেনে চলুন পেটের ভুঁড়ি নিজে থেকে নিয়ন্ত্রনে আসবে
আর এনারা সকলেই প্রমাণ করে দিয়ে গেছেন নারী চাইলে সব অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে। আর নারী চিরস্রেষ্ঠ তা বলার অপেক্ষা রাখে না।