Breaking Bharat: নন ভেজ প্রেমী মানুষের কাছে ভীষন চেনা আর প্রিয় এই রেসিপি নাম ডাকবাংলো (Dak Bungalow Recipe)। তবে এই ডাকবাংলো একা থাকে না সঙ্গে হয় চিকেন নয় মটন। কেন বলুন তো? তাহলে বরং জমিয়েই রান্নাটা ইয়ে মানে গল্পটা করা যাক। খিদে বাড়িয়ে তারপর খাওয়ার দিকে মন দেওয়া যাবে।
খাবারের মধ্যে এই যে “ডাক” শব্দটা সেটা কিন্তু হাঁস থেকে আসে নি। আসলে এই ‘ডাক’ হল ডাক ব্যবস্থা। মানে যাকে বলে পোস্টাল সার্ভিস (Postal Service)। ব্রিটিশ আমলে চিঠিপত্র এক ডাকঘর থেকে আরেক ডাকঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ডাক বিভাগের কর্মচারীরা ঘোড়ার পিঠে করে এক ডাকঘর থেকে অন্য ডাকঘরে যাতায়াত করতেন। ডাক বহনকারী কর্মীরা যখন ঘোড়ায় করে অনেক দূরের কোনো ডাকঘরে চিঠি নিয়ে রওনা হতেন, তখন বহুদুরের পথ অতিক্রমের ফলে তারা ক্লান্ত হয়ে পড়তেন।
তাদের বিশ্রামের জন্য ডাকঘর সংলগ্ন বিভিন্ন স্থানে এইসব সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য বিশালাকৃতি বাড়ি বা বাংলো তৈরি করা হয়েছিল।এই বাংলোগুলোকে ডাকবাংলো (Dak bungalow) বলা হত। প্রতিটি ডাকবাংলোর রক্ষনাবেক্ষনের জন্য কর্মী বা কেয়ারটেকার থাকতেন। শোনা যায়, প্রতিটি ডাকবাংলোতেই নিজস্ব মুরগীর খামার থাকতো। সাথে এবার গরুর দুধ,দই ও সব্জি সবই মজুত থাকত।
কথিত আছে, দূর থেকে ঘোড়ার খুঁড়ের আওয়াজ পেলেই বাংলোর কেয়ারটেকার তড়িঘড়ি মুরগীর মাংস রান্না করতে শুরু করে দিতেন। ৪০-৪৫ মিনিট সময় থাকতো রান্নাটি সম্পূর্ণ করার জন্য।সেই জন্য সময় বাঁচাতে আলু না কেটে শুধু খোসা ছাড়িয়ে গোটা অবস্থায়,নামী দামী মশলা না দিয়ে শুধু টক দই ও কিছুটা ভাজা পেঁয়াজ সহযোগে পদটি তৈরি করা হত।
এই পদ্ধতি ডাকবাংলোর কেয়ারটেকার দের আবিষ্কার বটে । পরবর্তী কালে মুরগীর মাংসের পরিবর্তে এতে পাঁঠার মাংস যোগ করে নামের বদল ঘটিয়ে নাম দেওয়া হল মটন ডাকবাংলো (mutton dak bungalow recipe)। এবার তাহলে রান্নাটা সেরে ফেলা যাক।।
মটন ডাকবাংলো রান্না করতে হলে আপনাকে যে যে উপকরণ নিতে হবে তার একটা তালিকা তৈরী করা হল।
জিরে – ১/২ চামচ,
শুকনোলঙ্কা – ২ টি
এলাচ – ৪ টি
লবঙ্গ – ৪ টি
দারচিনি – ২ টুকরো ( ১ইঞ্চি মাপের)
গোলমরিচ – ৪/৫ টি
এইসব জোগাড় করে প্রথমেই শুকনো কড়াইতে ভেজে ভালো করে গুঁড়ো করে নিতে হবে । মনে রাখবেন চিকেন হোক বা মটন ডাকবাংলোর আসল মশলা এটাই। এবার পরবর্তী উপকরণ।
মাটন – ৫০০ গ্রাম
গোটা আলু সেদ্ধ – বড় মাপের ৪ টি
পেঁয়াজ কুচি – ২৫০ গ্রাম
ডিম সেদ্ধ – ৪ টি
আদা বাটা – ১ চামচ
রসুন বাটা – ১ চামচ
কাঁচা লঙ্কা বাটা – ১ চামচ
কাশ্মীরি লঙ্কা গুঁড়ো – ১ চামচ
টক দই – ২০০ গ্রাম ( ভালো করে ফেটিয়ে নিতে হবে)
সর্ষে তেল – ২০০ মিলি
নুন ও হলুদ – পরিমাণ মত
শুকনো লঙ্কা – ২ টি
তেজপাতা – ২ টি
প্রণালী ব্যাখ্যা করব আপনাদের। প্রথমেই মাংস ভাল করে ধুয়ে টক দই, সর্ষের তেল, পরিমাণ মতো নুন, কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো,অর্ধেক আদা-রসুন-কাঁচা লঙ্কা বাটা ও হলুদ গুঁড়ো দিয়ে মিশিয়ে মাংসের সাথে মিশিয়ে রাখতে হবে অন্তত ১ ঘণ্টা। এবার কড়াইয়ে তেল দিয়ে ওভেন অন করুন। তেল গরম হলে একটা এলাচ, দারচিনি ও লবঙ্গ এবং শুকনোলঙ্কা ও তেজ পাতা দিয়ে পেঁয়াজ মিশিয়ে ভেজে নিতে হবে।
আরো পড়ুন- Family : সংসার মানে কি ? শারীরিক চাহিদা পূরণের কারণেই কি সংসার করার তাগিদ?
আরো পড়ুন- Breeding : বংশ বিস্তারের সমীকরণ কি বদলে গেল ? পুরুষ ছাড়াই বংশবিস্তার করছে নারী, এটা কি সম্ভব?
এই সময়ে তেলে একটু চিনি দিতে হবে। তারপর পরিমাণ মতো নুন দিয়ে পেঁয়াজ ভেজে নিতে হবে।
তারপর বাকি আদা ও রসুন বাটা দিয়ে কষাতে হবে। এর মধ্যে ম্যারিনেট করা মাংস দিয়ে ভাল করে কষতে হবে। আগে যে ভাজামশলা তৈরি করেছেন এবার তা অল্প পরিমাণে মিশিয়ে দিতে হবে। এরপর আলু ও ডিম সিদ্ধ করে অল্প ভেজে নিতে হবে এবং তা মিশিয়ে দিতে হবে।
আরো পড়ুন- Regret in life : জীবনে অন্তত আফসোস করে বাঁচবেন না! আপনার প্রাপ্য থেকে কেউ আপনাকে বঞ্চিত করবে না
এনার পরিমাণ মতো গরম জল দিয়ে প্রেসারে হালকা করে সেদ্ধ করুন। নামানোর আগে বাকি ভাজা মশলা আবার মিশিয়ে দিয়ে অল্প আঁচে কিছুক্ষণ রেখে দিতে হবে।ঝোল শুকিয়ে মাখা মাখা হয়ে গেলে নামাতে হবে। ব্যাস রেডি। এবার নিজের মতো করে খাওয়া শুরু করুন দেখি!