Breaking Bharat: জোর যার মুলুক তার, তাহলে বাঘ না সিংহ (Tiger VS Lion) বলুন তো কে বেশি শক্তিধর? পরাক্রমশালী চিরকাল শাসন করে পৃথিবী । এই ঘটনাই অতীতে প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু দুই পরাক্রম যদি মুখোমুখি হয় তখন? একেই বোধ হয় বলা হয় সেয়ানে সেয়ানে টক্কর! আর এক্ষেত্রে দুই মুখোমুখি প্রতিদ্বন্দ্বী বাঘ এবং সিংহ (Face to face rival tiger and lion)। কে বেশি শক্তিধর? কে দেবে উত্তর?
বন্যপ্রাণী আর হিংস্র প্রাণী বললে সবার আগে বাঘ আর সিংহের (tiger and lion) কথা মনে আসে। বাঘ ও সিংহকে নিয়ে মানুষের আগ্রহের শেষ নাই। অনেকেই ডিজিটাল মাধ্যমে বারবার বাঘ-সিংহের লড়াই সার্চ করেন। কারণ একটাই দুজনেই সমান শক্তি ধরে। তাহলে শেষ হাসি কে হাসে তা জানার কৌতূহল বড্ড বেশি। কে কত বড় সেটা জানার পাশাপাশি এদের নিয়ে আরও কিছু পার্থক্য জানা প্রয়োজন সবার। বাঘ এবং সিংহের যে প্রজন্ম তাদের বাসস্থান কিন্তু সম্পূর্ণ আলাদা (lion vs tiger who is the real king)।
বাঘ বেশিরভাগ এশিয়ায় বাস করে, এছাড়াও সাইবেরিয়াতেও বাঘ আছে। পূর্ব ও দক্ষিণ এশিয়ার অনেক এলাকাতেও এদেরকে দেখা যায়। মালয়েশিয়া, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া ও এর আশেপাশের কিছু দেশে, বাংলাদেশ, চীন, রাশিয়া, ভারতে বাঘকে দেখা যায়। অন্যদিকে সিংহ প্রধানত আফ্রিকাতে বাস করে, তবে ভারতে তুলনামূলক ছোটো এশিয়ান প্রজাতির সিংহ রয়েছে। বাঘ একা নিজের জায়গা বুঝে নিতে জানে কিন্তু সিংহ দলগতভাবে একসঙ্গে থাকতে পছন্দ করে। (tiger vs lion personality)
যদি শারীরিক বৈশিষ্ট্যের কথা বলেন তাহলে জানায়, সিংহের মস্তিষ্কের আকার বাঘের চেয়ে ছোটো। সমান আকৃতির সিংহের চেয়ে বাঘের মস্তিষ্কের সাইজ প্রায় ১৬% বড়ো। বাঘের বুদ্ধি সিংহের থেকে বেশি। যে জিনিস সিংহ কে শেখাতে কয়েক সপ্তাহ লেগে যায়, তা বাঘ কয়েকদিনেই রপ্ত করে ফেলে।গড় হিসেবে সিংহের ভরও কিন্তু বাঘের চেয়ে কম। সিংহরা ১৫০ থেকে ২৫০ কেজি ভরের হয়ে থাকে সাধারণত এবং পুরুষ বাঘের ভর হয়ে থাকে সাধারণত ১০০ থেকে ৩০৬ কেজি। এখানেই শেষ নয় পার্থক্যের তালিকাটা আরো লম্বা (tiger vs lion personality) ।
গর্জনের তীব্রতার দিক থেকে বিচার করলে, এখানেও সিংহবাবাজিকে বাঘ মামার কাছে গোল খেতে হয়।যদিও সিংহের গর্জন প্রায় ৫ কি.মি. দূর থেকেও শোনা যেতে পারে।এক মিটার দূরত্বে এর তীব্রতা প্রায় ১১৪ ডেসিবলের মতো। সেখানেআর বাঘের ক্ষেত্রে তা প্রায় ৩ কি.মি.। তবে বাঘের গর্জন শুনতে অনেক বেশি ভয়ঙ্কর, মৃত্যুভয় জাগানোর জন্য যথেষ্ট।
শারীরিক শক্তি ও দৈহিক গড়নে সিংহ বাঘের চেয়ে পিছিয়ে থাকলেও সিংহের একটি দারুণ শারীরিক সুবিধা আছে। সেটা হলো এর কেশর যা সিংহের ঘাড় এবং গলাকে সুরক্ষা প্রদান করে। বাঘের মতো বিগক্যাটদের আক্রমণের প্রধান উদ্দেশ্যই থাকে গলায় কামড়ে ধরে রক্ত চুষে নিয়ে শিকারকে দুর্বল করে ফেলা ও তারপর আরাম করে সাবাড় করে ফেলা।
আরো পড়ুন – Swinging arms while walking : মানুষ হাঁটার সময় দুই হাত সামনে পিছনে নাড়ায় কেন?
এবার শিকার পদ্ধতি প্রসংগে জানাই। বাঘের শিকার করার ধরনের কথা বলতে গেলে তা সিংহ এর থেকে ভিন্ন। অ্যাম্বুস পদ্ধতিতে এরা ওৎ পেতে থাকে, খুব ধীরে ধীরে লুকিয়ে শিকারের একদম কাছে চলে আসে এবং হঠাৎ করে ঘাড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বাঘ যেখানে নিজের শিকার নিজেই করে, সিংহ সেখানে শিকার করে দল হিসেবে। একা একাও মাঝে মাঝে করে তবে তা খুব কম।বাঘের চেয়ে সিংহ বেশি যুদ্ধবাজ। কিন্তু সিংহের চেয়ে বাঘ বেশি আক্রমনাত্মক। মানে সিংহের মতো বাঘ এত যুদ্ধ করতে পছন্দ করে না বা আধিপত্য দেখাতে পছন্দ করে না বটে তবে, বাঘ সিংহের চেয়ে বেশি হিংস্র ও ভয়ানক।
আরো পড়ুন – Sea monster : খোঁজ মিললো সামুদ্রিক দৈত্যের, কল্পকথা নয় বরং বাস্তবেই ছিল অস্তিত্ব?
বাঘ ও সিংহের মারামারি করার পদ্ধতি : (Who is stronger tiger or lion?)
বাঘ হলো একাকিত্ব পছন্দকারী প্রাণী, দলবল নিয়ে থাকতে পছন্দ করে না। স্ত্রী বাঘ বাচ্চা বড়ো করার স্বার্থে কিছুদিন বাচ্চাদের নিয়ে দল পাকিয়ে দলবলসহ থাকে ও প্রজনন মৌসুমের কিছুদিন বাঘ বাঘিনীর সাথে থাকে। তবে এমনেতে বাঘ একাকি থাকতেই পছন্দ করে।
আরো পড়ুন – Breeding : বংশ বিস্তারের সমীকরণ কি বদলে গেল ? পুরুষ ছাড়াই বংশবিস্তার করছে নারী, এটা কি সম্ভব?
বাঘ হচ্ছে প্রচণ্ড উগ্র ও হিংস্র স্বভাবী। সিংহের চেয়েও এরা দ্রুততার সাথে আক্রমণ করে বসতে পারে। একবার রেগে গেলে ও আক্রমণ করতে মনস্থির করে ফেললে বিপক্ষ কে সেটা নিয়ে এরা তখন এত হিসেব করবে না। বিপক্ষকে না মারা পর্যন্ত যেন এদের শান্তি নেই।