Breaking Bharat: Rat Experiment: সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মানুষের অগ্রগতির নান প্রতিচ্ছবি ধরা পড়ে। যত সময় এগিয়েছে বিজ্ঞান উন্নত হয়েছে আর শুরু হয়েছে একের পর এক গবেষণা। মানুষের এই যে বর্তমান সভ্যতা, কোথায় এর সৃষ্টি আর কীভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে একের পর এক পরীক্ষা চালিয়ে গেছেন বিজ্ঞানীরা। মিলেছে কি সদুত্তর? আজ সেইরকম এক গবেষণা নিয়ে কথা। যেখান থেকে আপনি জানতে পারবেন যে কীভাবে ইঁদুরের ওপর গবেষণা করে মানব সভ্যতার ইতিহাস সামনে আনা যায় (universe 25 rat experiment)!
আজকের প্রতিবেদন ‘ইউনিভার্স ২৫’ (universe 25) নিয়ে। এটি আসলে একটি গবেষণার শীর্ষক। বিজ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম ভয়ানক একটি গবেষনা, যেখানে ইদুঁরের কলোনির উপর পরীক্ষা নিরীক্ষার উপর ভিত্তি করে মানব সভ্যতাকে বোঝার চেষ্টা করেন বিজ্ঞানীরা। মূলত এই ভাবনার জন্ম মার্কিন মুলুকে। মার্কিন বিজ্ঞানী জন ক্যালহোন একটি ‘আদর্শ দুনিয়া’ নির্মাণ করেন যেখানে ইঁদুরেরা থাকবে এবং বংশবৃদ্ধি করবে। (universe 25 experiment explained)
তিনি ইদুরের স্বর্গ নামের একটা বিশেষ পরিবেশ তৈরি করেন, যেখানে অঢেল খাবার, জল রাখা জয় সঙ্গে পর্যাপ্ত জায়গা। মানে ঠিক প্রাচীন কালে পৃথিবী যেমন ছিল আর কি! প্রাথমিকে সেখানে তিনি চার জোড়া ইঁদুর রাখেন, যারা উপযুক্ত পরিবেশে অল্প সময়ের মধ্যে বংশবৃদ্ধি শুরু করে এবং সেটাও বেশ দ্রুত গতিতে।
সব থেকে আশ্চর্যের ব্যাপার হল, ইঁদুরদের সেই স্থানে রাখার মাত্র ৩১৫ দিন পরেই বংশবৃদ্ধির হার কমে যায়। ইঁদুরের সংখ্যা যখন ৬০০ তে পৌঁছে যায় তখন সেখানে দুটি জাত তৈরি হয় (mouse experiment)। ভালো ও ‘বিকৃত’ ইঁদুরের। মানে সবল দুর্বল অনুপাত তৈরি হয়। এর পর থেকে দুর্বল ইঁদুর গুলো আক্রমণের শিকার হয়।
উল্টোদিকে, মনস্তাত্ত্বিক দিক থেকে বিচার করলে ইঁদুরের স্বর্গে থাকার ফলে মেয়ে ইঁদুরদের মধ্যে মারাত্মক পরিবর্তন দেখা যায়। নারীরা নিজেদের আত্মরক্ষা থেকে সরে আসে এবং তাদের সন্তানদের প্রতি আক্রমনাত্মক হয়ে উঠে। নারী ইঁদুরের এই আক্রমনাত্মক মনোভাব ক্রমে ক্রমে বৃদ্ধি পায়। এর ফলে শিশু জন্মহার ক্রমেই কমতে শুরু করে এবং উল্টোদিকে শিশু মৃত্যুহার বেড়ে যায়।
আবার পুরুষদের মাঝে একটি নতুন জাতের ইঁদুরের উৎপত্তি হয় যারা কিনা ‘সুন্দরী ইঁদুর’। তারা নারীদের সাথে বংশবৃদ্ধি ও জায়গার জন্য ‘লড়াই’ করতে অনিচ্ছুক। গবেষণায় দেখা গেছে,একটা সময় আসে যখন সুন্দরী পুরুষ ও আক্রমণাত্মক নারীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে। (mouse utopia experiment)
বিজ্ঞানী ক্যালহোনের মতে, মৃত্যুর দুটি ধাপ ছিলো। ‘প্রথম মৃত্যু’ ও ‘দ্বিতীয় মৃত্যু’। শেষটি হচ্ছে জীবনের অর্থহীন হয়ে পড়া! অর্থাৎ বংশবৃদ্ধির ইচ্ছার অভাব তৈরি, সন্তান জন্মদান ও সন্তান প্রতিপালনের প্রতি অনিহা এবং সমাজে নিজের অবস্থান তৈরি করতে এগিয়ে না যাওয়া। সময়ের সাথে সাথে শিশু ইঁদুরদের মাঝে মৃত্যুর হার ১০০% ছুঁয়ে যায় এবং বংশবৃদ্ধি কমতে কমতে ০ হয়ে যায়।(many mice can live in the 25th universe )
আরো পড়ুন- Dog : প্রাণী হিসেবে কুকুরের জুড়ি মেলা ভার। কিন্তু কেন কুকুর মানুষের এতো প্রিয় হয়ে উঠল?
আরো পড়ুন- Work from home : বাড়ি থেকে অফিসের কাজ? এই নয়া পদ্ধতির ভালো খারাপ দিক কী কী?
আরো পড়ুন- Paracetamol : ওয়েদার বদলাচ্ছে! জ্বর আসছে? মাঝে মধ্যে গা গরম মানে কি প্যারাসিটামল?
এর মাঝে সমকামী ইঁদুর তৈরি হয়। ভাবতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। এই গবেষণা শুরুর দুই বছর পর শেষ ইঁদুরটি জন্ম নেয়৷ ১৯৭৩ সালের মধ্যে ‘ইউনিভার্স ২৫’ প্রজেক্টের শেষ ইঁদুরটি মারা যায়। জন ক্যালহোন এই পরীক্ষাটি আরো ২৫ বার করেন, এবং সবগুলো পরীক্ষাতেই একই ফলাফল আসে৷ তাই বলাইবাহুল্য ক্যালহোনের এই বৈজ্ঞানিক কাজের মাধ্যমে নাগরিক সমাজ ও সভ্যতার অবক্ষয় টের পাওয়া যায় । এবার শুধু ইঁদুরের জায়গায় মানব চরিত্রদের কথা ভাবুন, তাহলেই বর্তমান সময়ের ছবি স্পষ্ট হয়ে যাবে।