Breaking Bharat: ভালোবাসা মানে একটা ভালো “বাসা” অর্থাৎ জায়গা যেখানে নিশ্চিন্তে থাকা যায় আর নিরাপদ রাখা যায় নিজেকে এবং চারপাশকে। কিন্তু সেই গৃহ ঘর-সংসার আজকাল বড্ড বেশি ভাঙছে। দাম্পত্যে এত চিড় ধরার কারণ কী? কথায় কবিতায় গানে আলোচনায় অনেক কথা উঠে আসবে, কিন্তু আপনার নিজের থেকে ভালো এই সমস্যার সমাধান আর কেউ করতে পারবে না । কথায় আছে,
” ভালোবাসা ভালোবাসে শুধুই তাকে
ভালোবেসে ভালোবাসায় বেঁধে যে রাখে”
একটু ভেবে বলুন তো সেই বন্ধন কি আছে আপনাদের দুজনের মধ্যে ? যদি থাকে তাহলে যত দূরেই থাকুন না কেন সম্পর্ক ভাঙ্গবে না (relationship will not break), সম্পর্কের মাঝে কেউ প্রবেশ করবে না, তা সে অভিযোগ, সন্দেহ, অবিশ্বাসই হোক কিংবা কোন তৃতীয় ব্যক্তি।
দুটো মানুষের একসঙ্গে থাকা নিয়ে কারোর কোন সমস্যা নেই। সমস্যা এক ছাদের তলায় দুটো মানুষের মধ্যে তৈরি হওয়া দূরত্ব নিয়ে। একে অন্যের হাতে হাত রেখে জীবনের বাকি সময়টা কাটানোর শপথ নেওয়ার সময় থেকে, দুজনের একে অন্যের সাথে সামান্য কথাটুকু বলার ইচ্ছে তৈরী না হওয়ার কারণটা কিন্তু, সামান্য নয়। আসল সমস্যা খুঁজে বের করুন তবেই সমাধান সহজ হবে।
একটা সম্পর্কে ভালোবাসা বলতেই শুধুই দেহের টান বোঝায় না। এই কথাটা প্রথম থেকেই বুঝে নেওয়া দরকার যে আপনার উলটো দিকের মানুষটি অস্থিমজ্জা বিশিষ্ট অনুভূতি সম্পন্ন একটা জলজ্যান্ত প্রাণ,তিনি কোনো জড় বস্তু নন। তার কথাগুলো একটু শুনতে শিখুন, তাকে বুঝতে শিখুন।
শরীরের টান বা যৌনতার কারণেই তাদের একসঙ্গে থাকা ?
আপনি নারী হোন বা পুরুষ , বিজ্ঞানের জৈবিক চাহিদা গুলো কিছুতেই এড়িয়ে যেতে পারবেন না। তাই এক ছাদের তলায় গড়ে ওঠা সম্পর্কে শরীর আসবেই। কিন্তু বিষয়টা নির্ভর করে আপনার দর্শনের উপর, আপনার বিচারের দৃষ্টিভঙ্গির উপর। যখন খবরের কাগজে দেখেন বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা নতুন করে একসঙ্গে থাকার স্বপ্ন দেখছেন, তখন কি মনে হয় শুধুমাত্র শরীরের টান বা যৌনতার কারণেই তাদের একসঙ্গে থাকা ?
যদি বিয়ে করে বাকি জীবনটা একসঙ্গে কাটাবেন ভাবেন তাহলেও আপনার রূপ যৌবন,সেটা কতদিন থাকবে ভেবে দেখেছেন? যদি নারী পুরুষের এক ছাদের তলায় থাকার মানে শুধুই যৌনতার কামনাকে পূরণ করাই হত, তাহলে পৃথিবীর বুকে সম্পর্ক এত নামে এত সুন্দর করে গড়ে উঠতে পারত কি? একটা ছোট্ট উদাহরণ দিই তারপর চোখ বন্ধ করে নিজেই একবার ভাবুন।
ধরুন আপনি এবং আপনার স্বামী বা আপনি এবং আপনার স্ত্রীর একটি ছোট্ট সন্তান রয়েছে। ধরুন আপনাদের দুজনের ইচ্ছে হল একে অন্যকে ভালবাসার স্পর্শে, আদরে আর আলিঙ্গনে ভরিয়ে দেবেন। সেইমতো প্রিয় মানুষটিকে কাছে টেনে নিলেন আর তখনই পৃথিবীর সবথেকে সুন্দর উপহার যা আপনাদের জীবনে এসেছে, সে এসে গলা জড়িয়ে ধরল। বলুন তো তাকে কি এড়িয়ে যাওয়া যায় ?
সুখী দাম্পত্যে মানেই একে অন্যকে বুঝতে পারা, আর বিশ্বাস:
এবার তাহলে আরেকটা কথা জানাই। একটা সুখী দাম্পত্যে একে অন্যকে বুঝতে পারা, আর বিশ্বাস করা খুব দরকার। বিয়ে করে আসার পর থেকেই প্রতিরাতে বা দুপুরে সময় পেলেই বিছানায় নগ্ন প্রেমের অঙ্গীকার করার মাঝে ছোট ছোট অনুভূতিরা অনেক সময় হারিয়ে যায়। সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে শারীরিক উত্তেজনা দেওয়ার চাহিদায়, অস্থি চামড়ার ভিতরে লুকিয়ে থাকা অনুভূতির উন্মাদনা চাপা পড়ে যায়। তখন ক্লান্ত লাগে শরীরে আর মনেও।
আরো পড়ুন- রাতের বেলায় ঘুমের দেশে যাওয়ার আগে এই সেরা অভ্যাসগুলো মেনে চলুন!
দুটো শরীর তখন আর স্পর্শের টান অনুভব করে না। কামনার অভ্যাসে ভালোবাসার উষ্ণতা, তখন না বলতে পারার যন্ত্রণায় পরিণত হয়। দূরত্ব বাড়ে অন্তরের যোগাযোগ মুছে যায়। দুই আত্মা যদি একে অন্যকে শ্রদ্ধা করতে না পারে সম্মান করতে না পারে তাহলে শরীর কত দিন কত বছর সায় দেবে মুখ বুজে?
আরো পড়ুন- আপনি কি চা প্রেমী? দুধ দিয়ে চা খেতে ভালোবাসেন? এবার সাবধান !
আমরা তো পশুপাখি নই যে বিপরীত লিঙ্গ দেখলেই ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। এই আসল কথাটা যতক্ষণ আপনি বুঝবেন ,ততক্ষনে আপনার উলটো দিকের মানুষটি হয়তো অনুভূতিকে ব্যক্ত করার জন্য একটা বন্ধু মন পেয়ে গেছেন। সেই সম্পর্ক সমাজের কাছে তখন পরকীয়া নাম পায়। হয়তো দেখবেন সেই তৃতীয় ব্যক্তি কোনও বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে সম্পর্কের মাঝে চলে এলেন। হয়তো তারও উদ্দেশ্য নিজের সম্পর্ক ছাড়া অন্য সম্পর্কে যৌনতার তৃপ্তি পাওয়া। এভাবেই সম্পর্কগুলো বিকৃত হতে থাকে, আর মানুষ “বিয়ে” আর “ভালোবাসা” শব্দ দুটো থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন।
আরো পড়ুন- Period : মহিলাদের মাসিক বা পিরিয়ড চলাকালীন কি কি মানবেন পুরুষেরা?
এরপরই সমাজের অবক্ষয় আর একের পর এক কাগজের শিরোনামে উঠে আসার ঘটনা প্রবাহ। তাহলে দোষটা কার সমাজের আপনার? আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীর? নাকি সময়ের? আজ পারলে একবার ভেবে দেখুন।