Breaking Bharat: উচ্চবিত্তদের কাছে সব আছে,নিম্নবিত্তদের প্রায় কিছুই নেই । কিন্তু সব নেই এটাও বলা যাবে না, আবার সব আছে এটাও বলতে পারব না – এর মাঝামাঝি থাকা প্রজাতি হল মধ্যবিত্ত। এই প্রজাতির জ্বালা সবচেয়ে বেশি, তাই নয় কি?
ছোটবেলা থেকে বইয়ের পাতায় পড়া দুটি লাইন,
“উত্তম নিশ্চিন্তে চলে অধমের সাথে
যিনিই মধ্যম তিনি চলেন তফাতে” –
এটা দিয়ে মধ্যবিত্তকে বোঝানোর একটা চেষ্টা অবশ্যই করা যায় কিন্তু সেটা সব সময় সত্যি নয়।
মধ্যবিত্ত পরিচয় নিয়ে সারা জীবন বাঁচার অভিজ্ঞতা :
সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জীবনের জন্য লড়াই করা এটা মধ্যবিত্ত মানুষের যেন দৈনন্দিন রুটিন (daily routine of middle class people) এর একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ বা অঙ্গ। ছাপোষা মধ্যবিত্ত বলে নিজেদেরকে যতই বলি না কেন, আদপে ছাপোষা মোটেই নই আমরা তবে হ্যাঁ মধ্যবিত্ত তো বটেই।
এই প্রজাতি ঠিক কী রকম সমস্যার মধ্যে পড়তে পারে ?
সবার আগে এই তালিকায় যে কথাটি বলার দরকার তা হলো টাকা। মধ্যবিত্তের এটাই সবথেকে বড় সমস্যা (The big problem of the middle class)। ১০ থেকে ১২ তারিখে মাইনে। দিন তিনেকের মধ্যে প্রায় সবটাই শেষ। এবার শুরু হচ্ছে সারা মাসের কঠিন লড়াই। আমদানি ৫০ পয়সা খরচ এক টাকা এই বৃত্তি সম্পূর্ণ হয় মধ্যবিত্তের জীবন।
কিছু টিপিকাল স্টিরিওটাইপ নিয়ে বেঁচে থাকেন এনারা। যেমন ধরুন, অকারণ ঝুঁকি না নেওয়ার প্রবণতা । অথবা ব্যবসা-বাণিজ্য করার থেকে ভালো একটা চাকরির খোঁজ করা, তাতে যত সময় যাক না কেন হাল তবুও না ছাড়া।
ছোট থেকে পড়াশোনা করা ব্যবসা নয় সরকারি চাকরি পাওয়ার লক্ষ্যে। এই তালিকা টা আরো লম্বা ছোটবেলায় কন্যা সন্তানকে নাচ-গান ইত্যাদির মধ্যে রাখা,আরেকটু বড় হলে সব ছাড়িয়ে তার বিয়ের জন্য টাকা জোগাড়ের চিন্তা।
আরো আছে যেমন ধরুন মাসের শুরুতে মাংস পোলাও আর মাসের শেষে হাতটান,মানে এখান ওখান থেকে খুচরো ধার বাকিতে মাসটা কোনমতে শেষ করা। এছাড়াও কারণ আলটপকা মন্তব্য করা, তাসের রাজনীতি হোক কিংবা সাহিত্য অথবা খেলাধুলা – পাড়ার মোড়ে মধ্যবিত্ত চা খেতে খেতে বিশারদ হয়ে উঠবে না তাও কি হয়।
আরো পড়ুন- নরমালে নাকি সিজার পদ্ধতি? বেবি হওয়ার জন্য কোনটা সবচেয়ে ভালো?
আচ্ছা,’সাত কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী, রেখেছ বাঙালি করে মানুষ তো কর নি’ – এই লাইনটা কি রবি ঠাকুর মধ্যবিত্তদের (middle class family) কথা ভেবেই লিখেছিলেন? চিরাচরিত বস্তাপচা ধ্যান-ধারণাকে আগলে রাখা, নিজেরটা গুছিয়ে রাখার মানসিকতায় পরোপকারী হতে কুণ্ঠা বোধ করা।
আরো পড়ুন- জীবনে স্বার্থপর হওয়ার কি কোনো প্রয়োজন আছে ? Breaking Bharat
রোজগারের থেকে খানিকটা বাঁচিয়ে সেভিংস, না হলে গয়না বন্ধক রেখে কার্য উদ্ধারের চেষ্টা, তারপর ধরুন সব বিষয়ে মাথা গলানো,বেশিরভাগ কাজের দায়সারা মনোভাব, অন্যের উপর দোষ চাপিয়ে নিজের গা বাঁচানোর চেষ্টা – এই সবকিছু যেন মধ্যবিত্ত শব্দটির সমার্থক হয়ে দাড়িয়েছে (middle class identity)। তাই সমস্যাও বাড়ছে প্রতিনিয়ত।
আরো পড়ুন- আকাশে প্লেন ও পাখির মুখোমুখি সংঘর্ষে কী হয় জানেন?
এই যে কথায় কথায় মধ্যবিত্ত ভ্যালু বলে কটাক্ষ করেন উচ্চবিত্ত নিম্নবিত্তরা, এর মধ্যেও কিন্তু একটা শিকড়ের টান লুকিয়ে আছে । পুরোপুরি অন্যকে নকল করাও যায় না আবার পুরনোকে ফেলেও দেওয়া যায় না । এই নিয়ে ঝালে ঝোলে অম্বলে বেশ আছে মধ্যবিত্ত।