Breaking Bharat: আপনি কি জানেন আপনার হাত (Your hand) কতটা অমূল্য? কথায় বলে এই পৃথিবীতে এক রকমের দেখতে ৭ রকমের মানুষের নাকি সন্ধান মেলে। কিন্তু হাত যাকে বলে “ওয়ান পিস”। একের সাথে অন্যের হাত মেলে না রে মেলে না। কি ভাবছেন মশাই, সাধে কি আর ডাকাত সর্দার গব্বর সিং বলেছিলেন “ইয়ে হাত মুঝে দে দে ঠাকুর!” কিছুই বুঝতে পারছেন না তো, আচমকা সব ছেড়ে হাত নিয়ে কেন এত কথা , ভাবছেন তো? আসলে হাত না হাতের ছাপ নিয়ে আজকের আলোচনা। ওটি যে বিরল বিষয়। মুখ মিলতে পারে একের সঙ্গে অন্যের, মিলতে পারে ব্লাড গ্রুপ (Blood groups) কিন্তু কখনই মিলবে না হাতের ছাপ ওরফে ফিঙ্গারপ্রিন্ট (finger print), ভাবা যায়!
আপনার হাতের ছাপ অর্থাৎ ফিঙ্গার প্রিন্ট কতটা এক্সক্লুসিভ জানেন কি?
এই পৃথিবীতে প্রতিটি মানুষের হাতের ছাপ আলাদা আলাদা হয়। কোনও ভাবেই একের সঙ্গে অন্যের মাকে ডুপ্লিকেট ব্যাপারটা এই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আমরা জানি কোনও ক্রাইমের ক্ষেত্রে সবার আগে এই ফিঙ্গার প্রিন্ট ব্যাপারটার দিকে জোর দেন তদন্তকারী অফিসারেরা। কারন এর মাধ্যমের আসল অপরাধীকে নির্ভুল ভাবে চেনা যায়। এখন জানা দরকার এই
ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙ্গুলের ছাপ তৈরি হয় কীভাবে?
এবার তাহলে আপনাকে একটু জীবন বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে হবে। চলুন কয়েক সেকেন্ডের জন্য সেই পাঠ পড়ে নেওয়া যাক। আসলে আমাদের এই ত্বক তৈরি হয় তিনটি স্তর দিয়ে।
১)এপিডারমিস (epidermis)
২) বেসেল লেয়ার (basal layer)
৩) ডারমিস (dermis)
আরো পড়ুন – বিয়ে করতে চান? সাবধান! এই বিষয়গুলো না জেনে একদম এগোবেন না।
আসলে শিশুর আঙ্গুলের ছাপ (Baby fingerprints) তৈরি হয় মায়ের গর্ভাবস্থায়। চিকিৎসকেরা বলেন মাতৃগর্ভে থাকাকালীন দশম থেকে চতুর্দশ অর্থাৎ ১০ থেকে ১৪ সপ্তাহের মধ্যেই শিশুর আঙ্গুলের ছাপ সম্পূর্ণ ভাবে তৈরি হয়ে যায়। তাই জন্মের পর এটা আর বদলায় না। আসলে ত্বকের দ্বিতীয় স্তর অর্থাৎ বেসাল লেয়ার বাকি দুই স্তরের চেয়ে দ্রুততার সঙ্গে বৃদ্ধি পায়। এবং পার্শ্ববর্তী লেয়ার বা স্তরের মধ্যে চাপ সৃষ্টি করে। এর প্রক্রিয়া চলাকালীন এপিডারমিস ডারমিসের মধ্যে কিছু বক্রাকারে ভাঁজ হয়ে গিয়ে এক ধরনের প্যাটার্ন তৈরি করে। যা পরবর্তীতে হয়ে যায় আঙ্গুলের ছাপ।
আরো পড়ুন – প্রিয় চিপসের প্যাকেট সব সময় ফোলা থাকে কেন, জানেন কি? Breaking Bharat
কেন সবার ফিঙ্গার প্রিন্ট আলাদা হয়?
এবার আপনি প্রশ্ন করতেই পারেন যে ছাপ তৈরি হওয়া নয় বোঝা গেল, কিন্তু ইহা মেলেনা কেন? কেন সবার ফিঙ্গার প্রিন্ট আলাদা হয়? (everyone’s fingerprints are different) এর উত্তরটা আসলে লুকিয়ে আছে জিনের ভেতর। গোটা বিষয়টাই জিনগত। যখন গর্ভে সন্তান ধারণ করেন মা তখন তাঁর শারীরিক অবস্থার উপর সন্তানের বেড়ে ওঠা নির্ভর করে। ঠিক সেভাবেই শিশুর আঙ্গুলের ছাপ তৈরি হয় (Baby fingerprints are made)।
আরো পড়ুন – Aiburo Bhat :’আইবুড়োভাত’ কি? বিয়ের আগে কেন ‘আইবুড়োভাত’ দেওয়া হয়?
রক্তচাপ, মায়ের শরীরে পুষ্টিগুণ, হরমোনের মাত্রা, এবং জরায়ুতে সেই ভ্রূণের অবস্থান, মাতৃ গর্ভের চাপ- এই সব কিছু মিলিয়ে আঙুলের ছাপ সৃষ্টি হওয়াটা নির্ভর করে। এখনও পর্যন্ত জানা যায় সাধারণত আঙুলের ছাপ তিন প্রকার হয়- আর্চ , লুপ এবং হোয়ার্ল । এক্ষেত্রে প্রশ্ন আসতে পারে যমজ সন্তানের ক্ষেত্রে কী হয়? সেখানেও ছাপ আলাদাই হয় কারণ দুটো ভ্রূণ মায়ের গর্ভে সমান চাপ পেতে পারে না।