Breaking Bharat: নামী কলেজের অধ্যাপনা ছেড়ে, চালাচ্ছেন অটো? ১৪ বছর ধরে অটো চালাচ্ছেন ইংরেজির অধ্যাপক!এই অটো চালকের জীবনের কাহিনি,যা শুনলে অবাক হবেন আপনিও (Pataabi Raman)।
‘প্লিজ কাম ইন ম্যাম, ইউ ক্যান পে হোয়াট ইউ ওয়ান্ট!’ অটোচালকের মুখে সাবলীল ইংরেজি শুনে থ বনে গিয়েছিলেন বেঙ্গালুরুর চাকরিজীবী নিকিতা আইয়ার(Nikita Iyer)। শুধু কি তাই? অটোয় চেপে টানা ৪৫ মিনিট তাঁর সঙ্গে ইংরেজিতেই কথা বললেন নিকিতা। আর তারপরই জানতে পারলেন এমএ-এমএড অটোচালকের জীবনের কাহিনি। যা শুনলে অবাক হবেন আপনিও।
এককালে কলেজে ইংরেজির অধ্যাপক ছিলেন, ১৪ বছর চালাচ্ছেন অটো (74-Year-Old Auto Driver and Former English Lecturer)। অটোচালক নিজেই বলেন, ‘আমার নাম পাতাবি রমন (Pataabi Raman)। এমএ, এমএড করেছি। ইংরেজিতে অধ্যাপনা করেছি মুম্বইয়ের একটি নামী কলেজেও।’
পরিচয় দেওয়ার আগে অবশ্য অটোচালক নিজেই তরুণীকে প্রশ্ন করেছিলেন, ‘ভাবছেন তো, এত ভাল ইংরেজি এক জন অটোচালক কী করে বলছে!’ ব্যস! তারপর শোনা গেল এককালের ইংরেজির অধ্যাপক কেন অটো চালাচ্ছেন, সেই কাহিনি। (74-year-old Mumbai college lecturer drives auto)
নিকিতা সম্প্রতি সোস্যাল মিডিয়ায় সেদিনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। অটোচালকের মুখে ঝরঝরে ইংরাজি শুনে তিনি প্রথমে অবাকই হয়েছিলেন। সোস্যাল মিডিয়ার পোস্টে নিকিতা লেখেন, ‘অটোচালকের এত নম্র ব্যবহার এবং তাঁর এত সাবলীল ইংরাজি শুনে আমি থ হয়ে গিয়েছিলাম। তাঁর কথার উত্তরে শুধু বলেছিলাম— ‘ওকে’। তারপরের ৪৫ মিনিট যে কী ভাবে কেটে গেল এবং ওই সময়ে এত সমৃদ্ধ হলাম তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।’
আরো পড়ুন- Horses Sleep Standing Up : ঘোড়া কেন দাঁড়িয়ে ঘুমায়? কিন্তু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমোনো যায় কি?
মুম্বইয়ের নামী কলেজে অধ্যাপনা (college lecturer) করা সত্ত্বেও কেন পাতাবি রমন অটো চালাচ্ছেন? এই প্রশ্নের জবাবও দিয়েছেন খোদ অটোচালক। তাঁর কথায়, ‘কর্নাটকে কাজ পাইনি। তাই চলে গিয়েছিলাম মুম্বইয়ে। সেখানে একটি কলেজে লেকচারারের চাকরি পাই।’ যদিও কর্নাটকে চাকরি খুঁজতে গিয়ে কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনারও সম্মুখীন হতে হয়েছিল তাঁকে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কর্নাটকের কলেজগুলিতে যখন চাকরির জন্য আবেদন করি, প্রত্যেক জায়গায় জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল আমি কোন জাতের।
আরো পড়ুন- Kamrup Kamakhya Temple : সতীপীঠের ৫১ পীঠের এক পীঠ কামরূপ কামাখ্যা নিয়ে আলোচনা কেন?
বলেছিলাম আমার নাম পাতাবি রমন। এ কথা শুনে ওঁরা আমাকে বলেছিলেন, ঠিক আছে আপনাকে পরে জানাব।’ এরপর মুম্বইয়ে পওয়াইতে একটি নামী বেসরকারি কলেজে অধ্যাপনার কাজ পান তিনি। ২০ বছর অধ্যাপনা করার পর বেঙ্গালুরুতে ফিরে যান রমন। কিন্তু কেন ছেড়েছিলেন চাকরি? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের বেতন ভাল ছিল না। খুব বেশি হলে ১০-১৫ হাজার টাকা। যে হেতু বেসরকারি কলেজে কাজ করতাম, তাই পেনশনও নেই। কিন্তু পেট তো চালাতে হবে।’
আরো পড়ুন- Begunkodar railway Station : ভুতে বিশ্বাস করেন ? কোনওদিন গেছেন ভুতুড়ে কোনও স্টেশনে?
তবে রমন একা নন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন ‘গার্লফ্রেন্ড’ও। যদিও তিনি তাঁর স্ত্রীকেই ‘গার্লফ্রেন্ড’ বলে ডাকেন। রমন রসিকতা করে বলেন, ‘বাড়িতে আবার আমার গার্লফ্রেন্ড আছে। অটো চালিয়ে দিনে ৭০০-১৫০০ টাকা আয় করি। ওতেই আমি আর আমার গার্লফ্রেন্ডের দিব্যি চলে যায়।’
এছাড়াও রমনের পরিবারে রয়েছেন আরও একজন সদস্য। তাঁর ছেলে। এক অটোচালকের সঙ্গে কাটানো সুন্দর মুহূর্তের কাহিনি নেটপাড়ায় শেয়ার করে নিকিতা লেখেন, ‘মিস্টার রমনের সম্পর্কে যতই প্রশংসা করা যায়, শব্দ যেন ততই কম পড়ে যায়। এমন একটা মানুষের সঙ্গে আলাপ হল, জীবন সম্পর্কে যাঁর কোনও অভিযোগ নেই, কোনও অনুতাপ নেই। এমন মানুষগুলির কাছ থেকে যেন অনেক কিছু শেখার আছে।’